ভারতের রাজস্থানে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে ধর্মীয় নেতা মোহাম্মদ মাহিরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তিন মুখোশধারী। পুলিশ বলেছে, এ ঘটনা ঘটেছে শনিবার। ওই সময় ৩০ বছর বয়সী মোহাম্মদ মাহির রামগঞ্জের কাঞ্চননগরে মসজিদ চত্বরে ৬টি শিশুকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
মোহাম্মদ মাহিরের বাড়ি উত্তর প্রদেশের রামপুরায়। পুলিশ বলেছে, তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় থাকাকালে আকস্মিক সেখানে প্রবেশ করে ওই তিন ব্যক্তি। তারা মাহিরকে প্রহার করতে থাকে।
এ সময় বাচ্চারা বাঁচার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে। ফলে হামলাকারীরা তাদেরকেও হত্যার হুমকি দেয়। এ সময় তারা ওই ধর্মীয় নেতার মোবাইল ফোনও নিয়ে নেয়, যাতে শিশুরা কাউকে ফোন করতে না পারে।
এটা রাজনৈতিক নাকি ধর্মীয় বলা যাচ্ছে না এখনি। তবে ইন্ডিয়া হেট ল্যাব জানিয়েছে, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটিতে মুসলিমদের ওপর দমন-পীড়ন বেড়েছে। অবৈধ দখলদারমুক্ত করার নামে মুসলিমদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া, ক্লাশরুমে হিজাব নিষিদ্ধ করা এবং নাগরিকত্ব আইনে মুসলিমদের ব্যাপারে নিবর্তনমূলক ধারা যোগ করাসহ নানান অভিযোগ রয়েছে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালে ভারতে জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে মোদির দল বিজেপি’র ফের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে ভারতে মুসলিমদের অবস্থা আরও সঙ্গীন হতে পারে বলে সতর্ক করেছে গবেষণা সংস্থাটি।
প্রসঙ্গত, ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিভিন্ন হয়রানি ও নিপীড়নের খবর পুরনো। গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগ তুলে কিংবা গরু বিক্রির অভিযোগেও গত কয়েক বছর ধরে মুসলিমদের গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা খবর হয়ে আসছে। এবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্ক্রল-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দেশটিতে মুসলিম সেজে বা মুসলিম নাম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করার প্রবণতা বেড়েছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তির মধ্যে মুসলিম পরিচয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে বা কর্মকাণ্ডে জড়াতে দেখা গেছে। তাদের কেউ সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াতে, কেউ আবার জনপ্রিয়তার আশায়, কেউ বা নেহায়েত অর্থের প্রলোভনে এসব কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রদায়িকভাবে অস্থির একটি সমাজে এই ধরনের মামলায় অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুসলিম পরিচয় অপরাধের মাত্রার চেয়ে তীব্রতা ব্যাপকতর হিসেবে হাজির হয়। আর এভাবেই ভারতে ইসলামবিদ্বেষ আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
আপনার মতামত জানানঃ