দেশে ২০২৩ সালে মোট ৫১৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহনন করেছে। এর মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থী ২২৭ জন, কলেজ শিক্ষার্থী ১৪০, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৯৮ ও মাদরাসা শিক্ষার্থী রয়েছেন ৪৮ জন। অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, আত্মহননের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল অভিমান এবং প্রেমঘটিত সমস্যা।
শনিবার আঁচল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা: পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। ১০৫টি জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার তথ্য সংগ্রহ করে এই জরিপ করা হয়।
সংগ্রহকৃত তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা গেছে, বিগত ২০২৩ সালে সর্বমোট ৫১৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থী ২২৭ জন যা ৪৪.২ শতাংশ, কলেজ শিক্ষার্থী ১৪০ জন যা ২৭.২ শতাংশ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৯৮ জন যা ১৯.১ শতাংশ এবং মাদরাসা শিক্ষার্থী রয়েছেন ৪৮ জন যা মোট শিক্ষার্থীর ৯.৪ শতাংশ।
৫১৩ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরুষ শিক্ষার্থী ছিল ২০৪ জন যা ৩৯.৮ শতাংশ। অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থী ছিল ৩০৯ জন যা ৬০.২ শতাংশ। ২০২২ সালে আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থী ছিল ৫৩২ জন। ২০২৩ সালে কিছুটা কমলেও ততটা আশানুরূপ নয়।
জরিপে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল অভিমান যা সংখ্যায় ১৬৫ জন বা ৩২.২ শতাংশ। এরপরেই প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা করে ১৪.৮ শতাংশ।
মানসিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন ৯.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী, পারিবারিক কলহজনিত কারণে ৬.২ শতাংশ, পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন ১.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী।
আরও দেখা গেছে, ২০২৩ সালে পড়াশোনার চাপের সম্মুখীন হয়ে আত্মহত্যার দিকে পা বাড়ান ৪.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে ৩.৫ শতাংশ এবং পাবলিক পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে ব্যর্থ হয়ে বেঁচে থাকার পথ রুদ্ধ করেন ১.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন ২.৫ শতাংশ এবং অপমানবোধ করে আত্মহত্যা করেন ০.৮।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ বি এম নাজমুস সাকিব ও আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব তানসেন রোজ।
আপনার মতামত জানানঃ