রাজ্যের সাগর জেলায় ২০১৯ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেছিল নিহত কিশোরের বোন। এর জেরে রোববার কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই সময় কিশোরকে রক্ষা করতে আসা তার বোনকে মারধর করা হয় ও তাদের মাকে বিবস্ত্র করা হয়।
ভারতের মধ্য প্রদেশে এক দলিত কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে সংঘবদ্ধ হামলাকারীরা। হামলার সময় ওই কিশোরকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার মাকে বিবস্ত্র করে দুর্বৃত্তরা।
এনডিটিভির সোমবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজ্যের সাগর জেলায় ২০১৯ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেছিল নিহত কিশোরের বোন। এর জেরে রোববার কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই সময় কিশোরকে রক্ষা করতে আসা তার বোনকে মারধর করা হয় ও তাদের মাকে বিবস্ত্র করা হয়।
এ ঘটনায় নয়জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে ও আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জীব উইকে।
নিহতের বোন জানান, চার বছর আগে যৌন হয়রানির ওই মামলা করার পর থেকেই কিছু লোক তার মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছিল। এর জেরেই তাদের ওপর হামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর মায়ের ভাষ্য, হামলাকারীরা তাদের বাড়িতেও ভাঙচুর করে। ঘরের কোনো জিনিসই অক্ষত নেই। ঘটনার পর দুর্বৃত্তরা তার বাকি দুই ছেলেকে খোঁজ করতে অন্য বাড়িতে হামলা চালায়। এ ঘটনায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, হুমকি ও মারধরের অভিযোগ এনে চারজনের নামে ২০১৯ সালে মামলা করে নিহত কিশোরের বোন।মামলাটি এখনও আদালতে বিচারাধীন। এ ঘটনায় সেই চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এনসিআরবি-এর রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালে প্রতি ঘণ্টায় ভারতে দলিতদের বিরুদ্ধে ছয়টি অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছে। ২০২০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী দলিতদের বিরুদ্ধে ৫০,২৯১টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল। ২০২১ সালে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০,৯০০। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে দলিতদের বিরুদ্ধে সর্বাধিক ১৩,১৪৬টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ২০২১ সালে দলিতদের বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে, তার এক চতুর্থাংশ শুধু উত্তরপ্রদেশ থেকেই। এরপরেই রয়েছে রাজস্থান। এখানে ৭,৫২৪টি ও মধ্যপ্রদেশে ৭,২১৪টি দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিহারে এই সংখ্যা ৫,৮৪২। আগের থেকে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে দলিত বিরুদ্ধে অপরাধের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, বিহারে দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার খানিকটা কমেছে।
ভারতের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে সব থেকে বেশি দলিত বাস করেন। ২০১১ সালের জনসংখ্যা অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশে বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি দলিত বাস করেন। ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি এক লক্ষ দলিত নাগরিকের হিসেবে অপরাধের হার ছিল ৩১.৮ শতাংশ। নথিভুক্ত মামলার ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ এগিয়ে থাকলে। দলিতদের বিরুদ্ধে প্রতি এক লক্ষে অপরাধের হারের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। তারপরেই রয়েছে রাজস্থান। মধ্যপ্রদেশে দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার ৬৩.৬ শতাংশ সেখানে রাজস্থানে ৬১.৬ শতাংশ।
রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, রাজস্থানে হঠাৎ করেই দলিতদের ওপর নির্যাতন বেড়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে আর্থিক উন্নতি অত্যন্ত ধীরগতিতে হচ্ছে। এছাড়াও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনযাত্রার মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্ণ ভিত্তিক অপরাধের বিরোধিতা করতে বা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দেশের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের। নিজেদের অধিকার নিয়ে তারা অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এছাড়াও দলিতদের জনসংখ্যা বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এছাড়া, আগের মতো দলিতরা অপমান হালকাভাবে নিচ্ছেন না।
রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, রাজস্থানে হঠাৎ করেই দলিতদের ওপর নির্যাতন বেড়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে আর্থিক উন্নতি অত্যন্ত ধীরগতিতে হচ্ছে। এছাড়াও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনযাত্রার মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্ণ ভিত্তিক অপরাধের বিরোধিতা করতে বা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দেশের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের। নিজেদের অধিকার নিয়ে তারা অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এছাড়াও দলিতদের জনসংখ্যা বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এছাড়া, আগের মতো দলিতরা অপমান হালকাভাবে নিচ্ছেন না।
এসডব্লিউএসএস/১৫৩৫
আপনার মতামত জানানঃ