বাংলাদেশে থাকা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে এই কথা বলা হয়েছে।
গত রবিবার এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা এখন ঘনবসতিপূর্ণ শিবিরে হামাগুড়ি দিচ্ছে। ক্রমাগতই তাদের চলাফেরা সীমিত হচ্ছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের ওপর বর্বর অভিযান শুরু করেছিল দেশটির সামরিক বাহিনী। এর ছয় বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। সে সময় মিয়ানমারের জেনারেলরা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা করেছিলেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারেনি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের গবেষক সায়না বচনার বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের উভয় পাশে থাকা রোহিঙ্গারা বিরাষ্ট্রীয় পরিস্থিতির মধ্যে আটকা পড়ে আছে; তারা মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও বঞ্চিত। তারা বিচার পাওয়া এবং নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়গুলোকে চিহ্নিত না করে পদক্ষেপ গ্রহণ, জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের নিষ্ক্রিয়তা ও ত্রাণ কমিয়ে দেওয়া রোহিঙ্গাদের আরও বেশি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে ফেলছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে সীমাবদ্ধ করে রাখা ও দুই অংশে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায় রোহিঙ্গারা দিন দিন হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত হচ্ছে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে জান্তা সরকার ক্ষমতায় আসার পর হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে ‘অবৈধ ভ্রমণ’-এর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। সেই সঙ্গে তারা তাদের চলাফেরার ওপর নতুন করে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। আটকে দেওয়া হয় বিদেশ থেকে আসা তাদের ত্রাণ।
রোহিঙ্গাদের ওপর জান্তা সরকারের এ পরিকল্পিত নিপীড়ন বর্ণবাদ, দমন-পীড়ন ও স্বাধীনতা হরণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। ঘূর্ণিঝড় মোচায় ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের কাছে জীবন বাঁচানোর ত্রাণও পৌঁছতে দিচ্ছে না জান্তা সরকার।
রোহিঙ্গারা ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলেও তাদের কাছে ওষুধ পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশেও নানা সীমাবদ্ধতার মুখে পড়ছে রোহিঙ্গারা।
এসডব্লিউএসএস/২২১৫
আপনার মতামত জানানঃ