পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সৈকতে আটকে পড়া দীর্ঘ পাখনাযুক্ত অর্ধ শতাধিক পাইলট তিমি মারা গেছে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের নজরদারি সত্ত্বেও স্তন্যপায়ীগুলোকে গণমৃত্যু থেকে বাঁচানো যায়নি। বর্তমানে দলের বাকি তিমিদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
দেশটির পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস আজ বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানায়, দুঃখজনকভাবে ৫১টি তিমি চেইনেস সৈকতে আটকা পড়ার পর মারা গেছে।
শত চেষ্টা করেও সাগরে ফেরানো যাচ্ছে না তিমিগুলোকে। দীর্ঘক্ষণ অল্প পানিতে আটকে থাকার মানে অবধারিত মৃত্যু। তাই সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছে তিমি বাঁচানোর কর্মযজ্ঞে।
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশমন্ত্রী রিচি হুইটবি বলেন, মর্মান্তিক ঘটনা দেখছি এখানে। সৈকতে এত তিমির মরদেহ আসলেই বেদনাদায়ক বিষয়। এর আগেও বহুবার সৈকতে তিমি আটকা পড়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হলো এর কোনো সমাধান নেই। তবে মানুষের মানবিকতা দেখে আসলেই মুগ্ধ হচ্ছি। সবাই মিলে চেষ্টা করছে তিমিগুলোকে গভীর পানিতে ভাসিয়ে দিতে। সরকারি, বেসরকারি কর্মী এবং সাধারণ মানুষ তিমিগুলোকে বাঁচাতে সমান তালে কাজ করছে।
আরো জানানো হয়, নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ছিলে পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ কর্মীরা আজ দিনের বেলায় অবশিষ্ট ৪৬ তিমিকে গভীর পানিতে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
গতকাল সকালে আলবেনির ৬০ কিলোমিটার পূর্বে চেইনস সৈকতের কাছে পাইলট তিমির ঝাঁকটিকে বিপজ্জনকভাবে সাঁতার কাটতে দেখা যায়। বেলা গড়াতেই তারা সৈকতের কাছাকাছি আসতে শুরু করে।
এ আচরণ অচিরেই ডিপার্টমেন্ট অব বায়োডাইভারসিটি, কনজারভেশন অ্যান্ড অ্যাট্রাকশনসের কর্মকতাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিকেল ৪টা নাগাদ সমুদ্র সৈকতের বড় একটি অংশ তিমিতে ঢেকে যায়।
রাত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বন্যপ্রাণী সংস্থার কর্মীরা তিমিদের পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যাম্প স্থাপন করেন। দলটিতে পার্থ চিড়িয়াখানার পশুচিকিৎসক, সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞসহ জাহাজ ও অন্যান্য উদ্ধার সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ব্যাপক প্রস্তুতি ও চেষ্টা সত্ত্বেও সকাল পর্যন্ত অর্ধেক তিমি মারা গেছে।
পাইলট তিমি অত্যন্ত সামাজিক প্রাণী। সাধারণত জন্ম থেকেই তারা জটিল পারিবারিক সম্পর্ক বজায় রাখে। তিমির অস্বাভাবিক আচরণের পেছনে কোনো ধরেনর চাপ বা অসুস্থতা থাকতে পারে, বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা এমনটাই অনুমান করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া কখনও উপকূলে আসে না তিমি। অসুস্থ হয়ে এগুলো সৈকতে চলে আসতে পারে বলেও ধারণা অনেকের। এ ঘটনায় সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত তিনবছর আগে ম্যাককুয়ারি বন্দরের কাছে প্রায় ৫০০ পাইলট তিমি আটকা পড়েছিল। যা অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সৈকতে তিমি আটকে যাওয়ার সবচেয়ে বড় ঘটনা। ওই ঘটনায় উদ্ধারকর্মীদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে তিনশর বেশি তিমি মারা যায়।
এসডব্লিউএসএস/১৪৫০
আপনার মতামত জানানঃ