আফগানিস্তানের সাবেক এক নারী পার্লামেন্ট সদস্য এবং তার দেহরক্ষীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তার নাম মুরসাল নবীজাদা। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে মুরসাল নবীজাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসি ও আল–জাজিরার
নিহত নারী সংসদ সদস্যের নাম মুরসাল নবীজাদা। তার বয়স ৩২ বছর। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর যে কয়জন নারী আইনপ্রণেতা কাবুলে থাকছেন তার মধ্যে তিনি একজন ছিলেন। তার সাবেক সহকর্মীরা নবীজাদাকে ‘আফগানিস্তানের জন্য নির্ভীক চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে প্রশংসা করেছিলেন। এর আগে দেশ ছাড়ার সুযোগও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর যে অল্পসংখ্যক নারী পার্লামেন্ট সদস্য কাবুলে ছিলেন, নবীজাদা তাদের একজন। মুরসাল নবীজাদা যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সরকারের পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন।
সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য মরিয়ম সোলাইমানখিল টুইটারে বলেছেন, নবীজাদা ছিলেন ‘আফগানিস্তানের জন্য নির্ভীক চ্যাম্পিয়ন’।
তিনি লিখেছেন, ‘একজন সত্যিকারের পথনির্দেশক, শক্তিশালী, স্পষ্টভাষী নারী, যিনি বিপদের মুখেও নিজে যা বিশ্বাস করেছিলেন, তার পক্ষেই দাঁড়িয়েছিলেন।’
সোলাইমানখিল আরও বলেন, আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি তার জনগণের জন্য থাকার এবং লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
কাবুল পুলিশের মুখপাত্র খালিদ জাদরান গতকাল রোববার বলেন, নবীজাদা ও তার এক দেহরক্ষীকে তার বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় পুলিশপ্রধান মৌলভি হামিদুল্লাহ খালিদ জানিয়েছেন, গতকাল বেলা তিনটার দিকে সাবেক ওই আফগান আইনপ্রণেতাকে গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, নবীজাদার ভাই ও দ্বিতীয় নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন এবং তৃতীয় নিরাপত্তারক্ষী টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে গেছেন। খালিদ অবশ্য এ ঘটনার পেছনে সম্ভাব্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দেননি।
আফগানিস্তানের পশ্চিমা-সমর্থিত সাবেক সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ বলেছেন, নবীজাদার মৃত্যুতে তিনি শোকাহত এবং তার আশা, অপরাধীদের শাস্তি হবে। তিনি নিহত নবীজাদাকে ‘জনগণের প্রতিনিধি ও সেবক’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এখানে উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবান দেশটির মেয়েশিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নারীদের পার্ক ও জিমনেশিয়ামে যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। নারী ও মেয়েশিক্ষার্থীদের ওপর তালেবানের এ আচরণ মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।
এসডব্লিউএসএস/১৪২৫
আপনার মতামত জানানঃ