অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের পরিচালক শেখ ওমর আল-কিসওয়ানিকে আটক করেছে ইসরায়েলি পুলিশ। তবে তাকে গ্রেপ্তারের কোনো কারণ জানায়নি পুলিশ। এ খবর দিয়েছে তুর্কি গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।
খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি পুলিশ শেখ ওমরকে গ্রেপ্তারের পর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। এছাড়া তার বাড়ির নানা জিনিসপত্রও জব্দ করেছে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ইসরায়েলি বাহিনী কিসওয়ানির বাড়িতে অভিযানের সময় একটি কম্পিউটার এবং বেশ কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করেছে।
এর আগে গেল শনিবার ইসরায়েলি গণমাধ্যম কেএএন জানায়, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ইহুদিদের পবিত্র দিনের প্রস্তুতির জন্য আল-আকসা মসজিদ থেকে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আল-আকসা মসজিদের পরিচালক শেখ ওমর আল-কিসওয়ানি সব সময় ইসরায়েলি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনি কিছু দিন আগেও গোটা বিশ্বের মুসলমানকে মসজিদ ঘিরে ইসরায়েলি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
শেখ ওমর বলেছেন, পবিত্র আল-আকসা মসজিদের আশেপাশে খনন কাজ চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ কারণে এই মসজিদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এখনই এসব খনন কাজ বন্ধ করতে হবে। ধ্বংসাত্মক খনন কাজ বন্ধে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে মুসলিম বিশ্বকে সোচ্চার হতে হবে। মসজিদের নিচেও খনন কাজ চালানো হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
শেখ ওমর স্পষ্টভাবে বলেন, ইসরায়েল যেসব খনন কাজ চালাচ্ছে তা ইউনেস্কো এবং জাতিসংঘের নীতিমালা ও দিকনির্দেশনার বিরোধী।
পুরনো বায়তুল মুকাদ্দাস, মসজিদুল আকসা এবং আল বুরাক স্কয়ারে খনন কাজ নিষিদ্ধ বলে তিনি জানান। তার মতে, মসজিদুল আকসার ক্ষতি হয়ে গেলে ধর্মযুদ্ধের সূচনা হবে এবং এই যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা কেউ বলতে পারবে না।
এর আগেও আল-কিসওয়ানিকে ইসরায়েলি পুলিশ বেশ কয়েকবার আটক করে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে হস্তান্তর করেছিল।
আল-আকসা মসজিদ মুসলিমদের জন্য বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান। অন্যদিকে ইহুদিরা এলাকাটিকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে। তারা দাবি করে যে, এখানে প্রাচীনকালে দুটি ইহুদি উপাসনালয় ছিল।
২০০৩ সাল থেকে শুক্র ও শনিবার বাদে আল-আকসা মসজিদ এলাকায় ইহুদিদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। তারপর থেকে প্রায়শই উগ্র ইহুদিদের হামলার স্বীকার হচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনি মুসলিমরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম যেখানে আল-আকসা মসজিদ অবস্থিত সেই অঞ্চলটি দখল করে নেয়। আরও পরে ১৯৮০ সালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একরকম গায়ের জোরে সমগ্র শহরকে অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্রের অধীন করে ফেলে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৩১১
আপনার মতামত জানানঃ