‘আমরা গণতন্ত্রের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করছি। এক শতাব্দী আগে ধীরে ধীরে যা তৈরি হয়েছিল তা আমাদের চোখের সামনে ধ্বংস হয়েছিল। যে বা যারাই একনায়কতন্ত্রের বিরোধিতা করছে তাদেরকেই মারাত্মক আক্রমণ, কারাগারে প্রেরণ করা হচ্ছে।’- গ্রেপ্তারের আগে বলেন রাহুল গান্ধী।
মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে জিএসটি বাড়ানোর প্রতিবাদে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে ভারতে বিরোধীদল কংগ্রেস। শুক্রবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনের দিকে মিছিল করে কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা-কর্মীরা। সেই সময়ই বিজয়চকের কাছে কংগ্রেস নেতা ও সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী, শশী থারুরকে আটক করা হয়।
পুলিশের দাবি, এই মিছিলের অনুমতি ছিল না। এ দিনের অভিযানের সময় বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে কংগ্রেস কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়।
#WATCH | Police detain Congress leader Priyanka Gandhi Vadra from outside AICC HQ in Delhi where she had joined other leaders and workers of the party in the protest against unemployment and inflation.
The party called a nationwide protest today. pic.twitter.com/JTnWrrAT9T
— ANI (@ANI) August 5, 2022
যদিও কংগ্রেস সংসদ সদস্য দিগ্বিজয় সিং বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতির মতো বিষয়গুলি উত্থাপন করার জন্য সমস্ত কংগ্রেস সংসদ সদস্য শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত মিছিল করবেন।’
দলের শীর্ষ নেতারা দলের প্রতিবাদের অংশ হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবন ঘেরাও করতে প্রস্তুত। যন্তর মন্তর বাদে নয়াদিল্লি জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এবার অলআউট আক্রমণে কংগ্রেস। দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, জিএসটি ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পথে নেমে সোচ্চার হওয়ার ডাক দিয়েছে কংগ্রেসের।
সাংবাদিক সম্মেলনে মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করে রাহুল বলেছেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে, প্রায় এক শতাব্দী আগে ভারত ইটের উপর ইট দিয়ে যে গণতন্ত্র তৈরি করেছিল, চোখের সামনেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’
সাংবাদিক সম্মেলন করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন রাহুল গান্ধী, অশোক গেহলট, জয়রাম রমেশরা। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী কায়দায় সরকার চালানোর অভিযোগ তোলেন রাহুল। হাতে কালো ব্যান্ড বেঁধে প্রতিবাদ জানান সোনিয়া-তনয়।
বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি, অভিযোগ রাহুলের। ‘প্রতিবাদের সুর একটু চড়া হলেই ইডি লাগিয়ে তা দমনের চেষ্টা মোদী সরকারের’, সোচ্চার রাহুল।
রাহুল গান্ধীর দাবি, দেশে ৪ জন যা ইচ্ছে তাই করছে। দেশের কোনও প্রতিষ্ঠান নিরপেক্ষ নয়। যা দেখছি তা ভারতীয় গণতন্ত্রের মৃত্যু। সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। দেশজুড়ে একনায়কতন্ত্র কায়েম করা হচ্ছে। সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে।
বিরোধীরা দেশের আইন ব্যবস্থা, বিচার ব্যাবস্থার ভরসায় লড়ে। কিন্তু বিরোধিতা করলেই তার পিছনে ইডি লাগানো হচ্ছে। যে গণতন্ত্রকে তৈরি করা হয়েছিল তা ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রতিদিন গণতন্ত্রের মৃত্যু হচ্ছে।
মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারে বিরুদ্ধে এবার দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক কংগ্রেসের। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, জিএসটি-সহ একাধিক ইস্যুতে বিক্ষোভের ডাক। ‘এবার ভয় দেখানো যাবে না’, হুংকার রাহুলের।
তিনি আরও বলেন, ‘যত সত্য বলব, তত আমার উপর আক্রমণ হবে। তবে আমি এই বিষয়টি উপভোগ করি। দেশে গণতন্ত্র এখন স্মৃতি। স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেই তাকে নিষ্ঠুরভাবে আক্রমণ করা হয়, জেলে দেয়া হয়, গ্রেফতার করা হয় এবং মারধর করা হয়।’
রাহুল গান্ধী এদিন বলেন, “দেশের মানুষের সমস্যাগুলি নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয় সরকার। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, সন্ত্রাস, এই ইস্যুগুলি সংসদে উত্থাপন করা প্রয়োজন। সরকারের এজেন্ডা কেবলমাত্র চার-পাঁচ শতাংশের মানুষকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। এই চার-পাঁচ জন ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার্থেই সরকার চলছে। ধনকুবেরদের স্বার্থেই দেশের অর্থনীতি চালিত হচ্ছে।”
এসডব্লিউ/এসএস/১৭২৫
আপনার মতামত জানানঃ