একটা সময় ছিল, যখন এশিয়ায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে শ্রীলঙ্কা ছিল রোল মডেল। তামিলদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধ শ্রীলঙ্কাকে পিছিয়ে দেয় অনেক। ২৬ বছরব্যাপী এই গৃহযুদ্ধ শেষ হয় ২০০৯ সালে নির্মম সামরিক অভিযান ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের মধ্য দিয়ে। এরপর ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল দেশটি। কিন্তু সরকারের নেওয়া বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজ দেশটি দেউলিয়া।
বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশও কি শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়বে, এই নিয়ে প্রবল আলোচনা সমালোচনা হয়েছিল। এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। তবে সম্প্রতি বেকায়দায় বাংলাদেশ। গ্যাসের সঙ্কট, বিদ্যুৎ ঘাটতির মুখে দেশটি। হচ্ছে লোডশেডিং। আমদানিতে কড়াকড়ির পাশাপাশি আলোকসজ্জায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এবার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দাম। এসব কারণেই ফিরে আসছে পুরনো ওই সমালোচনা।
প্রসঙ্গত, গ্যাস আর বিদ্যুৎ সঙ্কটের পর এবার টান পড়ছে জ্বালানি তেলেও। বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের জ্বালানি পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এসময় তিনি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোরও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক অডিও বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি। তবে বর্তমান সংকট সাময়িক বলে মন্তব্য করে তিনি গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
কেন বাড়বে জ্বালানি তেলের দাম?
নসরুল হামিদ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘আমরা ছয়–সাত মাস ধরে তেলের মূল্য ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করছি। যে তেল আমরা ৭০ থেকে ৭১ ডলারে কিনতাম, এখন তা ১৭১ ডলার হয়ে গেছে। এবং সেটা সব সময় বাড়তির দিকেই যাচ্ছে।
আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি যে আমরা তেলের প্রাইসটাকে অ্যাডজাস্টমেন্টে যাব। কিন্তু আমাদের নিজস্ব অর্থে আমরা এই ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারপরও আমাদের মনে হয়, আমাদের একটা সময়ে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টে (মূল্য সমন্বয়) যেতে হবে ।’
প্রতিমন্ত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ তারা নিয়েছে। তেলের মূল্য তারা সমন্বয় করেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কথাই যদি বলি, তারা বিভিন্ন তেলের ক্ষেত্রে লিটারপ্রতি ৩৫ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়েছে।’
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ার পর লোডশেডিং মোটামুটি বিদায় নিয়েছিল। শহরে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট হতো না বললেই চলে। এখন সেই লোডশেডিং আবার ফিরেছে। রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক দিন দিনে কয়েকবার করে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।
আজ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তার অডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের গ্যাস দিয়ে আমাদের ৬৪ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে। আমাদের যে নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাস আমরা দিন দিন বাড়াচ্ছি, আবার দিন দিন কমছেও। যে খনিগুলোর কাছ থেকে আমরা পাচ্ছি, সেটা খুব স্বল্প পরিমাণে। আমরা ১০ বছর আগে থেকে বলে আসছি যে ধীরে ধীরে গ্যাসের মজুত কিন্তু কমতে থাকবে।’
এখন থেকে কোন এলাকায় কত সময় লোডশেডিং দেওয়া হবে, তার একটি রুটিন করতে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।
গ্যাস ও বিদ্যুতের দীর্ঘমেয়াদি সঙ্কট
পেট্রোবাংলার তথ্য বলছে, গত ২৯ জুন গ্যাসের জাতীয় গ্রিডে অন্তত ৮৫৪ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। গত সোমবার সরবরাহের পরিমাণ ৫০৭ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে।
পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দেশে প্রায় ২৫০-৩০০ ঘনফুট এলএনজির চাহিদা আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে কিনে পূরণ করা হলেও, সম্প্রতি মূল্যবৃদ্ধির পর দাম না কমা পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি না কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের শুরু থেকে সারাদেশে গড়ে ৩ হাজার ১০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু, পেট্রোবাংলার দৈনিক উৎপাদন ও বিতরণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ জুন থেকে গড় সরবরাহ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুটে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেছেন, দাম কমার পর স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা হবে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বে একটি সংকট চলছে এবং সবাই মিতব্যয়ী হওয়ার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় আমরাও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আরও বেশি গ্যাস উৎপাদনের চেষ্টা করছি।’
এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজি ও অন্যান্য জ্বালানির দাম বাড়ায় সরকার বিপাকে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সর্বশেষ মে মাসে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনি। তখন প্রতি মেট্রিক মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটের দাম ছিল ২৬ মার্কিন ডলার। এখন এর দাম ৩৬ ডলারেরও বেশি।’
আর এ কারণে গত কয়েকদিনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতিতে লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীবাসী। দেশের অন্যান্য জেলার পরিস্থিতি আরও খারাপ। ঢাকায় গত ৩০ জুন থেকে বিভিন্ন এলাকায় দিনে ৩-৪ বার লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবার তা ৩০-৪০ মিনিট স্থায়ী হচ্ছে।
রাজধানীর বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রাতে অন্তত ৪-৫ বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ঘুমাতে পারিনি। ঘরে শিশু আছে। সারারাত সে ঘামছিল। খুবই কষ্ট হয়েছে।’
অনেক ক্ষেত্রে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লোডশেডিং হয়েছে। আদাবর এলাকার বাসিন্দা হাসানুর রহমান বলেন, ‘রোববার প্রায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না।’ চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারা দিনে প্রায় ৮-১০ বার বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের শিকার হচ্ছেন।
বিপিডিবির চট্টগ্রাম জোনের উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, বন্দরনগরীতে দৈনিক সরবরাহে ২০০ মেগাওয়াট ঘাটতি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা মূলত বাসাবাড়িতে লোডশেডিং দিয়ে ঘাটতি পূরণ করছি, যেন শিল্প এলাকার ওপর এর প্রভাব না পড়ে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সরকার ঘোষণা করে, দেশে উৎপাদন পর্যায়ে কোনো লোডশেডিং নেই। যেটুকু আছে, সেটা বিতরণ সমস্যা ও সিস্টেম লসের কারণে হয়ে থাকে।
এদিকে, বিপিডিবির জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘পিক টাইমে সারাদেশে দৈনিক ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে। তবে আমরা এখন ১২ থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করছি।’
তিনি বলেন, ‘আগে উৎপাদন ঘাটতি ছিল না, তাই লোডশেডিংও ছিল না। কিন্তু এখন আমরা ঘাটতিতে আছি। যদি কোনো বিকল্প উৎস না পাওয়া যায়, তবে আরও কিছু দিন এ অবস্থা চলবে।’
ডিপিডিসি আওতাধীন এলাকায় দৈনিক ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও, গত দুই দিন ১ হাজার মেগাওয়াট দেওয়া হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণে আরেকটি প্রতিষ্ঠান ডেসকোর চাহিদা প্রতিদিন ১ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ডেসকো ৮৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘অনেক কারখানার মালিক অভিযোগ করেছেন যে শিল্পাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক উৎপাদক সময়মতো পণ্য চালান করতে পারছেন না।’
আজিম বলেন, ‘বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কারণে অনেক কারখানার মালিকদের উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জেনারেটরের জন্য ডিজেল কিনতে হচ্ছে। এমনিতেই কঠিন সময় চলছে। তার ওপর এ কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে আমরা ঢাকা শহরে প্রায় এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ সময়টায় বিকল্প হিসেবে জ্বালানি তেল-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালানো যেত। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনও সমস্যায় আছে।’
তিনি বলেন, বড় ধরনের লোকসান এড়াতে তাই বেশিরভাগ তেল-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুতের এ সংকট দীর্ঘদিন চলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের আরেক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সংকটময় এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঈদের পর রাত ৮টার মধ্যে সব মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ রাখার নিয়ম আমরা আবার চালু করব।’
দেশের অন্যান্য অঞ্চলে লোডশেডিং আরও তীব্র। অনেক এলাকায় দিনে ৭-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হচ্ছে বলে ডেইলি স্টারের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
গাজীপুরে আবাসিক গ্রাহকেরা সারাদিনে তিন-চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। তবে শিল্পক্ষেত্রে এটি এক ঘণ্টার মতো। একটি পোশাকশিল্প কারখানার পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকা মানে একজন শ্রমিকের দেড় থেকে দুই কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে গরমের কারণে কর্মীদের ছুটি না দিয়ে উপায় নেই।
উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে লোডশেডিং তীব্র হয়েছে; বিশেষ করে রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট ও গাইবান্ধায়। বগুড়া ২৫০ শয্যার মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসক বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটারে অনেক সময় অর্ধেক অপারেশন করে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে এবং চিকিৎসকদের জেনারেটরের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আবার কিছু কিছু মেশিন জেনারেটর দিয়ে চালানোও সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া এক্স-রে ও প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টও ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না।’
রাজশাহী শহরের বাসিন্দা সাবিনা আকতার বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দিনে-রাতে সমানতালে বিদ্যুতের সমস্যা হচ্ছে। নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিরুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ২০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে।
পরিস্থিতি সামলাতে বেকায়দায় সরকার
আজ নসরুল হামিদ তার বক্তব্যে ইউক্রেন যুদ্ধসহ জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে বৈশ্বিক কারণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, খোলাবাজারে তেলের চাহিদা বেড়ে গেছে সারা বিশ্বে প্রচণ্ডভাবে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল ও গ্যাসের দামে প্রচণ্ডভাবে ইফেক্ট পড়েছে। ইউরোপের অধিকাংশ দেশ রাশিয়া থেকে গ্যাস নেয়। সেখানে তারা বন্ধ করে দিচ্ছে বলেই এখন ইউরোপের সব দেশ এই গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
যে কারণে খোলাবাজারে যে গ্যাস ছিল ৪ ডলার, সেটা হয়ে গেছে ৩০ ডলার। সেটা কিনতে গিয়েই কিন্তু আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অর্থ জোগান দিতে আমাদের প্রচণ্ডভাবে বেগ পেতে হচ্ছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার যে অসুবিধায় পড়েছে প্রতিমন্ত্রীর কথায় তা স্পষ্ট। নসরুল হামিদ বলেন, সরকারের ভর্তুকি দিয়েও এই পরিমাণ অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না। এবং আমরা যদি মূল্যবৃদ্ধিই করতে থাকি, তাহলে সাধারণ জনগণের ওপর প্রচণ্ডভাবে চাপ সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, আমি আগের থেকে বলে আসছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন কিছু করবেন না, যেটা সাধারণ জনগণের ওপর বোঝা হয়ে থাকে। যার কারণে আমরা গ্যাসের সামান্য পরিমাণ মূল্য সমন্বয় করেছি। এখনো আমরা তেলের ব্যাপারে করি নাই। আমি আশা করব যে সবাই এই বিষয় বুঝতে পারবেন এবং ধৈর্য্য ধরবেন।
বর্তমান নাজুক জ্বালানি পরিস্থিতি সাময়িক বলেই মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা খুব সাময়িক, দীর্ঘকালের জন্য নয়। আমাদের প্রচুর পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে। কিন্তু গ্যাসের সংকটের কারণে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছি।’
গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। সার উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় তার জন্যই এ ব্যবস্থা বলে জানান তিনি।
বক্তব্যের শেষে গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে যদি একটু মিতব্যয়ী হই, তাহলে আমরা নিশ্চয় এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব। আমি মনে করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আপনারা ভরসা রাখেন, আওয়ামী লীগের ওপর ভরসা রাখেন, নিশ্চয় অল্প সময়ের মধ্যে আমরা এই বিপদমুক্ত হব।’
এসডব্লিউ/এসএস/১৬৫০
আপনার মতামত জানানঃ