পাকিস্তানে আশির দশকে একটি ভয়াবহ ধর্ষণের ঘটনার শিকার এক নারীকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে সাজা দেয়ার ঘটনা দেশটিতে ব্যাপক আলোড়ন ফেলে। ওই মামলার জেরে পাকিস্তানের নারী অধিকারকর্মীরা পারিবারিক আইনে পরিবর্তন আনার আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।
দেশটিতে ১৯৭৯ সালে চালু হওয়া আইন, যা পরিচিত ছিল হুদুদ অধ্যাদেশ নামে। সেই আইনে বিবাহ-বর্হিভূত যৌন সংসর্গের অপরাধে তিন বছরের কারাদণ্ড, ১৫ বার বেত্রাঘাত আর জরিমানা হয় প্রায় অন্ধ এক কিশোরী সাফিয়া বিবিকে। ১৯৮৩ সালের যে ঘটনা এই আইনের প্রয়োগকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।
সাফিয়া বিবিকে ধর্ষণ করেছিল দুজন পুরুষ যার ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু দেশের প্রচলিত আইনে অবিবাহিত নারী হিসাবে যৌন ব্যাভিচারের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
এই রায় ও সাফিয়া বিবির বিরুদ্ধে কঠোর সাজার প্রতিবাদে মুখ খোলেন পাকিস্তানের বহু নারী ও সমাজের একটা শ্রেণি।
১৯৭৭ সালের জুলাই মাসে সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউল হক এক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ করেন।
ক্ষমতা গ্রহণের অল্পদিনের মধ্যেই তিনি পাকিস্তানকে ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা করার উদ্যোগ নেন এবং ১৯৭৯ সালে তিনি জারি করেন তথাকথিত হুদুদ অধ্যাদেশ।
১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়া হুদুদ অধ্যাদেশ জারি করে বলেন শরিয়া আইনে শাস্তি চালু করেই সামাজিক অন্যায় ও অপরাধ কার্যকরভাবে দমন করা সম্ভব।
পাঁচটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ব্যভিচার ও বিবাহ-বহির্ভূত যৌনতাকে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করা হয় এবং শরিয়া মোতাবেক বেত্রাঘাত, অঙ্গচ্ছেদ আর পাথর নিক্ষেপকে নতুন শাস্তি হিসাবে আইনের অন্তর্ভূক্ত করেন তিনি।
সেনা শাসক জেনারেল জিয়া বলেন তার মতে এধরনের শাস্তি চালু করেই সামাজিক অন্যায় ও অপরাধ কার্যকরভাবে দমন করা সম্ভব।
এই আইনের সমালোচকরা বলেন, পাকিস্তানে নাগরিকদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে, সেখানে রাজনীতি করার স্বাধীনতা নেই, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং ভিন্নমত প্রকাশের অধিকার খর্ব করা হয়েছে।
নারী অধিকার কর্মীরা বলেন ইসলামী বিচার ব্যবস্থা কায়েম করে দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য, কঠোর আইন প্রয়োগের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে এবং নারীর অধিকার সীমিত করা হয়েছে।
হুদুদ অধ্যাদেশের বিরোধী পাকিস্তানের একজন মানবাধিকার আইনজীবী হিনা জিলানি বিবিসির ফারহানা হায়দারকে বলেন এই আইন প্রণয়নের পেছনে ছিল দেশটির সমাজে নারীর দুর্বল অবস্থান।
“জিয়াউল হকের সরকার মনে করেছিল এধরনের নির্মম আইন প্রণয়ন করে সমাজে একটা ভীতি তৈরি করা যাবে- বিশেষ করে এমন আইন যা নারীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। কারণ তারা জানত নারীদের ওপর এসব আইন প্রয়োগ করা সহজ।”
হিনা জিলানি ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে ছিলেন সবে পাশ করা একজন আইনজীবী। তখন দেশটিতে নারী অধিকার কর্মীদের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছিল। তিনি ছিলেন তাদের একজন।
তাদের যুক্তি ছিল হুদুদ আইন মোটেই ইসলামী আইন নয়। বিশেষ করে তাদের আপত্তি ছিল এই আইনে যিনা বা বিবাহবহির্ভূত যৌনসঙ্গম নিষিদ্ধ করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে।
মানবাধিকার আইনজীবী বলছেন বিতর্কিত এই আইন ব্যবহার করা হতো অবিবাহিত, বিবাহিত নারী, কিশোরী, প্রৌঢ়া, শিক্ষিত, অশিক্ষিত সমাজের সকল স্তরের নারীদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে।
হিনাকে তার কাজের সূত্রে প্রায়ই কারাগারে যেতে হত তার নারী মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলতে। সেসময়ই তিনি লক্ষ্য করেন যে হুদুদ অধ্যাদেশ জারির পর থেকে কারাগারে নারী কয়েদীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
হিনা জিলানি বলেন, “এসময়ই আমি খেয়াল করি যে, সেসময় যেসব নারীদের জেলে ভরা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে অত্যন্ত নির্মম এই আইনটির আওতায়। আমি দেখি যে, আইনের ইসলামীকরণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত যিনার অধীনেই সবচেয়ে বেশি নারী অভিযুক্ত এবং নারী কয়েদীর এই ঊর্ধ্বমুখী সংখ্যার সেটাই মূল কারণ।”
তাদের সাথে কথা বলে হিনা ও তার সহযোগী আইনজীবীরা বুঝতে পারেন, এই আইন তাদের জীবনে কী পরিণতি ডেকে এনেছে। তাদের কাছ থেকে জানতে পারি তারা কতটা অসহায়, পরিবার তাদের কীভাবে একঘরে করেছে। বস্তুত পরিবারই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্ররোচনা দিয়েছে। তাদের আইনের আশ্রয় নেবার ব্যবস্থা নেই। তারা বেশিরভাগই হয় অল্পবয়সী, নয় বয়স্ক নারী।
জেলে ভরা হয় রেকর্ড সংখ্যক নারীকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, শিশুর অভিভাবকত্ব থেকে শুরু করে সম্পত্তির উত্তরাধিকার পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই নারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে যিনা আইনের আশ্রয় নেয়া হয়- বলছিলেন হিনা জিলানি।
“এই আইন ব্যবহার করা হয় অবিবাহিত নারী, বিবাহিত নারী, এমনকি ১২/১৩ বছরের কিশোরী, ৬০ বছরের নারী, ধনী, দরিদ্র, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, শহুরে ও গ্রামের নারী নির্বিশেষে সবার বিরুদ্ধে, সেসময় পাকিস্তানের কোন নারীই এই আইনের হাত থেকে রেহাই পায়নি।”
হিনা জিলানির মতে, এই যিনা আইনের অপব্যবহার হয়েছে বললে কম বলা হবে- বরং এই আইন খুবই দক্ষতার সাথে ব্যবহার করা হয়েছে নারীকে সবরকমের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে।
“বিয়ের ব্যাপারে তার পছন্দ অপছন্দের অধিকার, সম্পত্তির উত্তরাধিকার; সব ক্ষেত্রেই এই আইন প্রয়োগ করে তার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।
ধরুন কোন নারী সম্পত্তির ভাগীদার, তাকে বঞ্চিত করতে পরিবারকে শুধু এটুকুই বলতে হয়েছে যে, তার বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক আছে। অত্যাচারী স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হতে চাওয়া স্ত্রী যখন সন্তান চেয়েছেন, স্বামী বা তার পরিবার বলেছে সে ব্যাভিচারী- অন্য পুরুষের সাথে তার সম্পর্ক আছে। যে কোন ব্যাপারে, যে কোন নারীকে জব্দ করতে, জেলে পাঠাতে হাতিয়ার হিসাবে কাজ করেছে এই যিনা আইন।
তিনি বলছেন, এই আইন প্রয়োগের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছিল ধর্ষণের ঘটনায়। কোন নারী ধর্ষণের অভিযোগ আনলে তাকে ওই ঘটনার চারজন পুরুষ সাক্ষী আনতে হতো। যে কারণে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা ছিল একরকম অসম্ভব। জোর করে যৌন সংসর্গ করা হয়েছে তা প্রমাণ করতে না পারলে তখন ওই ধর্ষিত নারীর বিরুদ্ধে যিনা আইন প্রয়োগ করা হতো, যার শাস্তি ছিল কারাদণ্ড আর বেত্রাঘাত।
যেমন ১৯৮৩ সালে পাকিস্তানের গ্রামের এক নারী সাফিয়া বিবি গৃহপরিচারিকার কাজ করত একজনের বাসায় । তাকে ধর্ষণ করে ওই বাসায় তার মনিব আর মনিবের ছেলে দুজনেই। ভিন্ন সময়ে।
মনিবের ছেলে সাফিয়া বিবিকে ধর্ষণ করার পর সে অন্তঃসত্ত্বা হয়। তার বয়স তখন মাত্র ১৮। গ্রামের সমাজে কাউকে মুখ ফুটে ওই ঘটনা জানাতে সে ভয় পেয়েছিল। দুমাস মুখ খোলেনি। এরপর মাকে সে সব কিছু জানায়।
সাফিয়ার বাবা ঘটনাটি জানার পর স্থানীয় আদালতে দুই ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ থানায় যেভাবে অভিযোগ নথিভুক্ত করে, তাতে অভিযুক্ত করা হয় সাফিয়া বিবিকেই। আদালতে সে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় যে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। যেহেতু সে তখন অন্তঃসত্ত্বা, আদালত রায় দেয় সে যিনায় অপরাধী।
তাকে তিন বছরের জেল দেয়া হয়, সেইসঙ্গে ১৫ বার বেত্রাঘাত এবং জরিমানা করা হয় তাকে। সাফিয়া বিবির কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে দেশটির নারী সংগঠনগুলো।
তারা ইতোমধ্যেই হুদুদ অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। লিঙ্গবৈষম্যের দাবি তুলে তারা সামরিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে সংগঠিত হচ্ছে। এই মামলার রায়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।
হিনা জিলানি বলছেন, নারীরা মুখ খুললেও তাদের জন্য পরিবেশটা ছিল খুবই প্রতিকূল। প্রতিবাদ করা সহজ ছিল না।
তখন জিয়াউল হকের শাসনামল। সংবাদপত্রের ওপর ব্যাপক সেন্সরশিপ চলছে। সেটা সামাজিক মাধ্যমেরও যুগ নয়। কাজেই নারীদের নেটওয়ার্ক ওই কঠিন পরিবেশের মধ্যেও যে কতটা সংগঠিত আর জোরালো ছিল সেটা আজ ভাবলে সত্যি অবাক হতে হয়। তারা তখন এ নিয়ে কথা বলছে। প্রতিবাদ করছে, রাস্তায় নেমে শ্লোগান দিচ্ছে।
ওই নারী আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন মিজ জিলানির একজন বান্ধবী। তিনি ওই সময় ইসলামাবাদ থেকে মিজ জিলানিকে ফোন করে বললেন তিনি যেন সাফিয়ার হয়ে এই মামলাটা লড়েন।
হিনা জিলানি রাজি হলেন। তিনি সাফিয়া বিবির সাজার বিরুদ্ধে আপিল করলেন। শুধু তাই নয়, এই বহুল আলোচিত মামলা লড়ার সুযোগে তিনি সামনে আনলেন হুদুদ অধ্যাদেশ ব্যবহার করে ধর্ষণের মামলায় নারীর বিরুদ্ধে নানান অবিচারের ঘটনা।
তিনি তুলে ধরলেন হুদুদের আশ্রয় নিয়ে নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কীভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তবে আদালতে তার পেছনে সমর্থন একেবারেই ছিল না।
সেটাই ছিল আমার জন্য ধর্ষণের প্রথম মামলা, বলেন হিনা জিলানি। আমি ট্রায়াল কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলাম কেন্দ্রীয় আদালতে। চিন্তা করুন এর গুরুত্বটা। কিন্তু আদালতে গিয়ে দেখি আদালত কক্ষে কেউ নেই। নারী আন্দোলনের পক্ষে সেখানে আমি একমাত্র নারী।
তিনি বলছেন, কিন্তু মামলাটা যে তিনি কেন্দ্রীয় আদালতে নিতে পেরেছিলেন সেটাই ছিল তখন তাদের জন্য মস্ত এক ধাপ অগ্রগতি।
এটা শুধু একজন নারীর প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল না- ছিল পাকিস্তানে সমস্ত নারী জাতির ওপর অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলার একটা সুযোগ।
কেন্দ্রীয় আদালত ১৯৮৫ সালে নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে দেয়। সাফিয়া বিবি মুক্তি পায়। হুদুদ অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে ইসলামাবাদে সংসদের বাইরে নারীদের বিক্ষোভ
পাকিস্তানের নারী অধিকার কর্মীদের জন্য সেটা ছিল বিশাল এক বিজয় বলেন হিনা জিলানি। এমনকি বিচারকও স্পষ্ট বলেছিলেন দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে নারীদের চাপ এই মামলার রায়কে প্রভাবিত করেছিল।
আদালত তার রায়ে বলেছিল, কোন নারী অন্তঃসত্ত্বা হলে, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণেই শুধু তাকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। বিশেষ করে সে যদি ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে থাকে। এছাড়াও সেই নারী ধর্ষণের শিকার কি না সেটা প্রমাণের দায়দায়িত্ব ওই ধর্ষিত নারীর নয়, সেটা প্রমাণ করতে হবে রাষ্ট্রকে-আইনকে।
হিনা জিলানি বলেন, সাফিয়া বিবি মামলার রায়ের দৃষ্টান্ত ধরে এরপর আদালতে বিবাহবহির্ভূত যৌনতার অভিযোগে যিনা আইনে দোষী সাব্যস্ত তিন হাজারের ওপর নারীর আপিলের শুনানি হয়।
মিজ জিলানি জানান, ১৯৮৮ সালে জিয়াউল হকের শাসনকাল শেষ হবার পর যিনা আইনে দোষী সাব্যস্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে। একইসঙ্গে পাকিস্তানের আইনে নারী পুরুষ বৈষম্য ইস্যুতে কিছুটা অগ্রগতি হয়। মধ্যযুগীয় শাস্তির আইনগুলো বাতিল হয়।
কিন্তু তারপরেও অনেক অপরাধ দেশটির দণ্ডবিধিতে সংযোজিত হয়েছে। হুদুদ অধ্যাদেশের প্রয়োগ না হলেও এখনও কার্যত তা পাকিস্তানের আইনে বহাল আছে।
হিনা জিলানি বলেন হুদুদ এখনও পাকিস্তানে আইনের অংশ। কারণ সেই সামরিক শাসনামলে ধর্মীয় দলগুলোর চাপে যে আইনের জন্ম হয়েছিল সেই আইন টিকিয়ে রাখার জন্য ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর চাপ এখনও অব্যাহত আছে। রাষ্ট্র এই গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ব্যভিচার এখনও পাকিস্তানি আইনে অপরাধ- সেটা যিনা আইনের অংশ নয়- কিন্তু দণ্ডবিধির ধারা অনুযায়ী এটা অপরাধ।
তিনি বলেন, দেশটিতে নারীর প্রতি অবিচার এখনও আছে, যদিও আগের তুলনায় মামলা এখন কম হয়। কিন্তু আমি চাই দেশটিতে দণ্ডবিধির আমূল সংস্কার হোক, যাতে সামাজিক আচরণ বা নৈতিকতার নিরিখে নারীর অপরাধ বিচার করার বিধান আইনে না থাকে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৪২০
আপনার মতামত জানানঃ