খুলনা মহানগরীর খালিশপুর এলাকা থেকে শ্রমিক কৃষক ছাত্র জনতা ঐক্য পরিষদের সমন্বয়কারী রুহুল আমিনসহ সাতজনকে রোববার আটক করা হয়েছে। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় সংগঠনটি তাদের পূর্বনির্ধারিত কফিন মিছিল করতে পারেনি। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া টাকা এককালীন পরিশোধের দাবিতে এই কফিন মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল খুলনা জেলা শাখার আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালুসহ ২ দফা দাবিতে গতকাল বিকেল ৪টায় নগরীর খালিশপুর প্লাটিনাম জুট মিল গেট থেকে নতুন রাস্তা মোড় পর্যন্ত কফিন মিছিলের কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচি সফল করার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দুপুর ২টায় প্লাটিনাম জুট মিল গেটে বিপুলসংখ্যক পুলিশ আসে। এ সময় পুলিশ শ্রমিক কৃষক ছাত্র জনতা ঐক্য পরিষদের সমন্বয়কারী রুহুল আমিন, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিফ অনিক ও ছাত্রনেতা সুজয় শুভ নামে তিনজনকে আটক করে খালিশপুর থানায় নিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, পরে বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ আরও ৪ জনকে আটক করে। দীঘলিয়া থেকে স্টার জুট মিল শ্রমিকদের ভৈরব নদ পার হয়ে খালিশপুরে এসে এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ হার্ডবোর্ড মিলসংলগ্ন ঘাটে ট্রলার পারাপার বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া বিকেল ৩টার দিকে প্লাটিনাম গেটে ক্ষমতাসীন দলের বেশ কিছু নেতাকর্মী জড়ো হন। সামগ্রিক অবস্থায় তারা কফিন মিছিল করতে পারেননি।
তবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (নর্থ) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে কফিন মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। মোট ৭ জনকে আটক করা হয়েছে।খালিশপুর থানার ওসি কাজী মোস্তাক আহমেদ জানান, বিশৃঙ্খলা এড়াতে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে ঘাটে ট্রলার পারাপার বন্ধ করা হয়নি।
আটক আন্দোলনকারীদের মুক্তি দাবি :এদিকে পাটকল চালুর দাবিতে আন্দোলনকারী নেতাদের আটকের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে চার বাম সংগঠন। গতকাল এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন চার সংগঠনের সমন্বয়ক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান এবং জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস।
এ ছাড়া ওই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার দেশি-বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থে জনগণের সম্পদ ব্যক্তি মালিকদের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ ঘোষণা করেছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক মোশরেফা মিশু এবং সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
আপনার মতামত জানানঃ