কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় এক গর্ভবতী নারীকে চিকিৎসা না দিয়েই ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে কোনো চিকিৎসা না পেয়ে অবশেষে রাস্তাতেই সন্তান প্রসব করে সেই নারী। সম্প্রতি ভারতের তেলাঙ্গানা রাজ্যের নাগারকুর্নুল জেলার আচামপেটে এ ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নিমাল্লা লালাম্মা নামের ওই আদিবাসী নারী মঙ্গলবার প্রসব বেদনা উঠলে স্থানীয় এক সরকারি হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছান।
যখন তিনি ভর্তি হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন চিকিৎসকরা তার পরীক্ষা করে দেখেন তিনি কোভিড পজিটিভ এবং নাগারকুর্নুলের আরেকটি সরকারি হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তার জন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করা হয়নি।
পরে ওই নারী হাসপাতালটির গেটের কাছেই খোলা জায়গায় (রাস্তায়) একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেন। বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালের কর্মীরা তাকে ভেতরে নেন এবং একটি কক্ষ দেন।
এ ঘটনায় অবহেলা ও বৈষম্যের দায়ে তেলেঙ্গানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী টি হারিশ রাও বুধবার হাসপাতালটির সুপারিন্ডেন্ট ডা. কৃষ্ণ এবং দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. হরি বাবুকে বরখাস্ত করেছেন।
এই দুই চিকিৎসকের বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, সব সরকারি হাসপাতালে গর্ভবতী নারীদের ভর্তি নিতে অস্বীকার না করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এমনকি তারা কোভিড পজিটিভ হলেও ভর্তি নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অবহেলা ও নিয়ম ভঙ্গ করেছেন।
এ ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছেন নাগারকুর্নুল জেলা সদর দপ্তর হাসপাতালের সুপারিন্ডেন্ট।
ভারতীয় আদিবাসীদের প্রকৃত অবস্থা তুলে আনতে চাইলে, আসামের দিকে তাকাতে হবে। উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্য আসামে বারবার সংগঠিত হয়েছে গণহত্যা।
এই অঞ্চলে গণহত্যার শুরু ১৯৯৬ সালে। আসাম-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে বারোবিষায়। সেই দাঙ্গায় সরকারীভাবেই মারা গিয়েছিলেন প্রায় আট হাজার মানুষ, বেসরকারীভাবে সংখ্যাটা প্রায় কুড়ি হাজার।
আর প্রতিবারই বোড়ো জঙ্গীদের হামলাগুলোর পরে আক্রান্তদের রাগ গিয়ে পড়ে সাধারণ বোড়ো গ্রামবাসীদের ওপরে। বাংলাভাষী মুসলমান আর আদিবাসী– এরা আসামের এই বোড়ো স্বশাসিত অঞ্চলে সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই এদের মেরে ফেলে বা ভয় দেখিয়ে এথনিক ক্লেনসিং বা জাতিগত সাফাই করে দেওয়ার একটা পদ্ধতি চলছে।
আর আছে নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ। ভারতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১০ লক্ষেরও বেশি আদিবাসী এবং অন্যান্য জনজাতি পরিবারের মাথায় তাদের বনভূমির আবাসস্থল থেকে উচ্ছেদের খাঁড়া ঝুলেছিল ২০১৯ সালে৷ এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই ছিল ৮৫ হাজার পরিবার৷
অন্তত ১৭টি রাজ্য থেকে ১০ লাখেরও বেশি বনবাসী উপজাতি ও অন্যান্য জনজাতি পরিবারগুলিকে উচ্ছেদের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ ২০০৬ সালের অরণ্য অধিকার আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কিছু অরণ্যপ্রেমী সংগঠনের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ৷
এসডব্লিউ/এসএস/১৫৫০
আপনার মতামত জানানঃ