বিশ্বে চলছে সোশ্যাল মিডিয়ার রাজত্ব। যুগের চাহিদায় দিন দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। ফেসবুক ছাড়া এখন ভাবাই অসম্ভব। কী নেই এখানে? চাইলেই সবকিছু মেলে নেট দুনিয়ায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে ফেসবুক। ভুয়া তথ্য প্রচার, অশালীন মন্তব্য ও ঘৃণা ছড়ানোর অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এ মাধ্যম। এ ছাড়া ফেসবুকের বিরুদ্ধে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদে সমর্থন ও পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন বিশ্বের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা। মানুষকে বিপথগামী করতে রীতিমতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।
মিয়ানমারে গণহত্যায় উসকানিতে ফেসবুক ব্যবহার করা হলেও তা নিয়ে খুব কমই আলোচনা হয়। মিয়ানমারে যা ঘটেছে, তার জন্য ফেসবুকই দায়ী কি না, সেটা একটা জটিল প্রশ্ন। তবে এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো শিগগির পাওয়া যেতে পারে।
দ্য ইকোনোমিস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আটলান্টিকের উভয় পাশে বিষয়টি নিয়ে একটি আইনগত প্রচার চলছে। এ ক্ষেত্রে দাবি উঠেছে যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার সময় ব্যবহারকারীদের উসকানিমূলক বিষয়বস্তু ছড়ানোর সুযোগ দেওয়ায় ফেসবুককে দায়ী করে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
গত ৬ ডিসেম্বর ফেসবুকের লন্ডন কার্যালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই চিঠিতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের আদালতে মামলা করার বিষয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের পক্ষে ফেসবুকের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হবে।
একই দিনে ফেসবুকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি মামলা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে এই মামলাটি করা হয়। মামলায় রোহিঙ্গাদের প্রাণহানি, জখম, দুর্দশা, ভোগান্তি, মানসিক যন্ত্রণা, সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির জন্য অন্তত ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, মামলা দায়ের করা রোহিঙ্গারা ১৫ হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। মামলায় দাবি করা হয়েছে ফেসবুক প্লাটফর্ম নিপীড়িত জনগোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিয়েছে। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে ২০১৭ সালে সেনা অভিযানের সময় প্রায় দশ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
তবে এ ঘটনায় ফেসবুকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
কোম্পানির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ‘ঘৃণামূলক এবং বিপজ্জনক ভুল তথ্যের প্রচার বছরের পর বছর ধরে চলতে দেওয়ার’ অভিযোগ তোলা হয়।
যুক্তরাজ্যে কিছু শরণার্থীর প্রতিনিধিত্বকারী একটি ব্রিটিশ আইন সংস্থা ফেসবুকে একটি অভিযোগপত্র পোস্ট করে। এতে লেখা ছিল, ফেসবুকের অ্যালগরিদম ‘রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য’ প্রচারে সহায়তা করেছে। এছাড়া, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয় এমন পোস্ট সরিয়ে ফেলতে বা অ্যাকাউন্ট অচল করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। এমনকি দাতব্য সংস্থা এবং মিডিয়ার সতর্কতা সত্ত্বেও কোম্পানিটি ‘যথাযথ এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ’ নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তারা।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবীরা সান ফ্রান্সিসকোতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে একটি আইনি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মিয়ানমারে ফেসবুকের দুই কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। অনেকের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইট খবর পাওয়া এবং শেয়ার করার প্রধান বা একমাত্র উপায়।
বিবিসির প্রতিবেদন মতে, ২০১৭ সালে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে সামরিক দমন অভিযানের সময় আনুমানিক ১০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল। তখনকার বিভিন্ন ছবি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ফেসবুক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে উসকানিমূলক ভিডিও, সহিংসতা এবং অপপ্রচারের ভিডিও ও তথ্য সংবলিত পেজগুলোকে ব্যবহারকারীদের দেখতে উৎসাহিত করেছে। এতে ঘৃণ্য অপপ্রচার আরও বেড়েছে এবং তা গণহত্যায় উসকানি হিসেবে কাজ করেছে।
২০১৮ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ঘৃণামূলক বক্তব্যের প্ররোচনা রোধে যথেষ্ট কাজ না করার বিষয়টি স্বীকার করে ফেসবুক।
রোহিঙ্গাদেরকে বরাবরই মিয়ানমারে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে দেখা হয় এবং তারা কয়েক দশক ধরে সরকার ও জনসাধারণের বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা পুলিশ পোস্টে মারাত্মক হামলা চালানোর পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে সহিংস ক্র্যাকডাউন শুরু করে।
সেবছর প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা নিহত হন। এই অভিযানের কারণে ৭ লাখ এরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ ও জমি পুড়িয়ে ফেলাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।
এরপরের বছর ফেসবুকের ওপর অনলাইনে ঘৃণা ছড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় ‘ধীরগতি এবং অকার্যকারিতার’ অভিযোগ আনে জাতিসংঘ।
মার্কিন আইনের অধীনে, ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের পোস্ট করা বক্তব্যের দায় থেকে মুক্ত। কিন্তু নতুন মামলায় মিয়ানমারের আইনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি মামলা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে এই মামলাটি করা হয়। মামলায় রোহিঙ্গাদের প্রাণহানি, জখম, দুর্দশা, ভোগান্তি, মানসিক যন্ত্রণা, সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির জন্য অন্তত ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার এক তদন্তের তথ্যানুযায়ী, মিয়ানমারে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরিতে ফেসবুক মূল ভূমিকা পালন করছে। একই সময়ে রয়টার্সের এক তদন্তে দেখা যায়, এক হাজারের বেশি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে রোহিঙ্গা ও মুসলিমদের বিকৃত ভাষায় কটাক্ষ করা হয়। এমনকি তাদের গুলি করে হত্যার অনুরোধও করা হয়। ফেসবুক জানায়, সে সময় তাদের ভুয়া তথ্য এবং ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য ও কনটেন্ট প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনেকটা ধীরগতিতে চলছিল।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে মিয়ানমারের ৫ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ মানুষের কাছে ইন্টারনেট ছিল। কিন্তু মাত্র দু’বছরের ব্যবধানে ২০১৬ সালে মিয়ানমারে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৪০ লাখ।
রোহিঙ্গা গণহত্যায় ফেসবুকের ভূমিকা সুপ্রতিষ্ঠিত। ২০১৮ সালে ফেসবুকের নিয়োগকৃত একটি কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিতে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছে। ওই বছরের আগস্টে ফেসবুক মিয়ানমারে ২০ টি সংগঠন ও ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ করে। এদের মধ্যে একজন সামরিক কমান্ডারও রয়েছেন।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাবিরোধী সামরিক অভিযানের শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। সেই অভিযানে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, ব্যাপকমাত্রায় গণহত্যার শিকার হয় রোহিঙ্গারা। বহু রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ করে মিয়ানমারের সেনাসদস্যরা। সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে, রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূলের ইচ্ছাতেই রাখাইনে অভিযান চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। মিয়ানমারের তৎকালীন সরকার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনগণের মধ্যে তখন এই নির্মম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ দেখা যায়নি।
দ্য ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো সাধারণত তাদের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রচারিত বিষয়বস্তুর দায় থেকে রেহাই পেয়ে থাকে। তাই রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে করা মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে মিয়ানমারে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার বিচারে মার্কিন আদালতকে অবশ্যই বর্মিজ আইন বিবেচনায় নিতে হবে। এ রকম মামলায় মার্কিন আদালত অবশ্য তাত্ত্বিকভাবে বিদেশি আইন প্রয়োগ করতে পারেন। তবে তার নজির খুবই কম।
মামলাটির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফেসবুকের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধে তারা আতঙ্কিত।
ফেসবুকে বর্মিজ বিষয়বস্তু মডারেট করার সক্ষমতা উন্নত করারও দাবি করেছে কোম্পানিটি।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রথমটি হলো, ২০১০ সাল থেকে ফেসবুক সক্রিয় ও কার্যকরভাবে তাদের নেটওয়ার্কের সেই সব বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে, যা মিয়ানমারে গণহত্যার উসকানিতে অবদান রাখছিল। যদিও এসব বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল ফেসবুক।
দ্বিতীয়টি হলো, ফেসবুকের অ্যালগরিদম এসব উসকানিমূলক বিষয়বস্তু ছড়ানোর ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করেছিল।
তবে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এমন কোনো মামলায় বিচারের নজির এখন পর্যন্ত নেই।
অবশ্য এ ঘটনার সঙ্গে একটি দূরবর্তী সাদৃশ্য রয়েছে রেডিও মিলে কলিন্সের। এটি রুয়ান্ডার একটি রেডিও স্টেশন। ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় সংঘটিত গণহত্যায় উসকানিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে রেডিও স্টেশনটি। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এই গণহত্যার শিকার হয়, যাদের বেশির ভাগই ছিল সংখ্যালঘু টাট্সি জনগোষ্ঠীর। তখন রেডিও স্টেশনটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কতিপয় ব্যক্তি পরে গণহত্যায় প্ররোচনার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন।
এখানে ফেসবুকের সঙ্গে রেডিও মিলে কলিন্সের ভূমিকার পার্থক্যটা মূল উদ্দেশ্যে। রেডিও মিলে কলিন্সের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল গণহত্যায় উসকানি দেওয়া। যারা ওই গণহত্যার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালত। কিন্তু রেডিও সরঞ্জাম নির্মাতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বর্তমান মামলায় যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে যে ফেসবুক একই সঙ্গে উত্পাদক ও কিছু ক্ষেত্রে বার্তাবাহকের কাজ করেছে।
কেননা মানুষ কী দেখবে আর কী দেখবেন না, তা ফেসবুকের অ্যালগিরদমই ঠিক করে দেয়।
ফেসবুকের অ্যালগরিদম যা করে, তার জন্য কোম্পানিটি দায়ী কি না বা কীভাবে দায়ী, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
ফেসবুক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী মাসে তাদের দুইশ সত্তর কোটি নিয়মিত ব্যবহারকারী রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এই প্রতিষ্ঠানে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইন্সটাগ্রামের মতো পণ্যও ব্যবহার করে।
কিন্তু ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে ব্যর্থতা থেকে শুরু করে ভুয়া তথ্য ছড়ানো বন্ধে যথেষ্ট ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি সময়ে একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ হচ্ছে ফেসবুক। আর প্রতিটি অভিযোগের মাত্রাই ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগেরটা। এর মধ্যেই প্রায় ৭ ঘণ্টা বন্ধ থাকার জেরে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে ফেসবুককে।
সম্প্রতি ফেসবুকের ‘হুইসেল ব্লোয়ার’ ফ্রান্সেস হাউগেন মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে অভ্যন্তরীণ একটি রিপোর্ট পেশ করেন। আর এতেই অভিযোগের লাইন লেগে গেছে।
অনেক অভিযোগের মধ্যে হাউগেনের জমা দেওয়া নথিতে উল্লেখ আছে, ফেসবুক কীভাবে আরএসএস গোষ্ঠী পরিচালিত অ্যাকাউন্টগুলোর পোস্ট প্রমোট করেছে।
হাউগেন বলেন, আরএসএস গোষ্ঠীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টগুলো মুসলিম-বিদ্বেষী কনটেন্টের প্রচারণা চালায়। হিন্দুপন্থী জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে এ প্রচারণা চালায় তারা।
সূত্র মতে, মুসলমানদের ‘শুকর’ এবং ‘কুকুর’-এর সাথে তুলনা করে অসংখ্য অমানবিক পোস্ট করা হয়েছে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে। হয়েছে কোরআন অবমাননা করা পোস্টও। কিন্তু এসব মুসলিম-বিদ্বেষী কনটেন্ট ফেসবুক মডারেট করেনি বলে অভিযোগ হাউগেনের। তার দাবি, ভারতে বাংলা ভাষার কনটেন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য বাঙালি মডারেটরের ঘাটতি ছিল।
হাউগেন আরও দাবি করেছেন, বিদ্বেষ ছড়ানো কনটেন্টের মাত্র ০.২ শতাংশ পোস্ট সরানো হয় ফেসবুকের অটোমেটেড সিস্টেমের দ্বারা। মুসলিমবিরোধী পোস্টকে প্রায় কখনও ‘ফ্ল্যাগ’ করা হয়নি ফেসবুকে। ফেসবুকের সিভিক ইন্টেগ্রিটি গ্রুপের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ছিলেন ফ্রান্সেস হাউগেন। গত মে মাসে সংস্থাটির চাকরি ছাড়েন তিনি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৩২৪
আপনার মতামত জানানঃ