সাম্প্রদায়িক উস্কানি থেকে শুরু করে সরকারের সমালোচনা, এমনকি দেশের কাল্পনিক শান্তি সম্প্রীতি বিনষ্ট বা নাম-ছবি বিকৃতির কারণে অপ্রাপ্তবয়স্করা এমনকি সাংবাদিকরাও যখন ডিজিটাল আইনে নাকানিচুবানি খাচ্ছে, তখন দেশে দাঙ্গা পরিস্থিতির মধ্যে উস্কানি দিয়েও ছাড় পেয়ে গেল এক ছাত্রলীগ নেতা। এর ফলে দেশ জুড়ে সরকার আবারও সমালোচনার মুখে পড়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের উদ্দেশ্য নিয়ে।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার বিষয় নিয়ে ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমুলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শরিয়তপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ঢালীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, শুধু বহিষ্কার কেন! গ্রেফতার কেন নয়! এমন স্পর্শকাতর মুহূর্তে এই উস্কানিতে শুধু বহিষ্কার যদি শাস্তি হয় তাহলে ডিজিটাল আইনের প্রয়োগ কি শুধু সরকারের সমালোচনাকারী ও সংখ্যালঘুদের শোষণের জন্য?
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র মতে, অভিযোগ স্বীকারও করে নিয়েছেন অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম।
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুজ্জামান সিকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, “সম্প্রতি কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার বিষয় নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন সময় ওই বিষয় নিয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ঢালী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উষ্কানিমূলক পোস্ট দেন।”
তিনি আরও বলেন, “ওই পোস্টের মাধ্যমে তিনি ছাত্রলীগসহ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের আন্দোলন করার জন্য রাজপথে নামার আহ্বান জানান। বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ আসতে থাকে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের নজরে আসায় তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষই ছাত্রলীগ করেন। সারা দেশে যখন আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য কাজ করছেন তখন এক নেতার এমন কর্মকান্ড আমাদের বিব্রত করে। তার বিরুদ্ধে সংগঠন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই আমি মনে করি।”
যদিও এই সিদ্ধান্তকে যথেষ্ট বলে মনে করছেন না অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সমাজকর্মী বলেন, ডিজিটাল আইনে সাম্প্রদায়িক উস্কানির মিথ্যা অভিযোগে ঝুমন দাস দীর্ঘদিন জেল খাটলো। এছাড়া সরকারের সমালোচনা করায় জেল খাটছে অসংখ্য মানুষ। হাজতে নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তাই ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ নেতা একই কাজ করলে তার ক্ষেত্রে শুধু বহিষ্কার কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা ওই ছাত্রলীগ নেতার গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
আপনার মতামত জানানঃ