নির্বাচনি প্রচার শেষে ফেরার পথে বিক্ষোভকারীদের রোষানলে পড়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। লিবারেল পার্টির নেতা জাস্টিন ট্রুডো নির্বাচনি প্রচারণার বাসে চড়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। এতে ট্রুডো সামান্য আঘাত পেয়েছেন। এছাড়া তার পাশে থাকা গণমাধ্যমের দুই কর্মীও সামান্য আহত হয়েছেন। খবর বিবিসি।
ট্রুডো ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় বিক্ষোভকারীরা তাকে ঘিরে ফেলে এবং পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে। তারা ট্রুডোর উদ্দেশে অপমানজনক কথাবার্তাও বলেন। এক পর্যায়ে ট্রুডোকে নিরাপত্তা দিতে এগিয়ে আসে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। তারা হাতে হাত ধরে দাঁড়ান যেন ট্রুডোর শরীরে পাথর না লাগে। পরে তিনি বাসে করে চলে যান।
অন্টারিওর লন্ডনে প্রচারের সময় পাথর হামলার মুখে পড়েন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। পাথরটি কাঁধে আঘাত করেছে বলে জানান তিনি। একে ২০১৬ সালের একটি ঘটনার সঙ্গেও তুলনা করেন, তখন এক নারী তার দিক কুমড়ার বিচি ছুড়ে মেরেছিল।
গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আগাম নির্বাচন ডেকেছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। তার দল বামপন্থী লিবারেল পার্টি সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে এই আশায়ই আগাম নির্বাচন ডাকা হয়েছিল। নিজের বর্তমান সংখ্যালঘু সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারে পরিণত করতে ডাকা এই নির্বাচন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের প্রচার চালাতে দেশজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে কানাডায় করোনা ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করা এবং অন্যান্য বিধি-নিষেধের কারণে জনগেণের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি, ব্যহত হয় নির্বাচনী প্রচারণাও।
গত মাসে কানাডার সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, সব সরকারি কর্মকর্তাকে আগামী অক্টোবরের মধ্যে ভ্যাকসিন নিতে হবে। অন্যথায়, তাদের চাকরিও হারাতে হতে পারে বলে জানানো হয়। এতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন দেশটির জনগণের একাংশ।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রুডো জানান, তার কাঁধে আঘাত লেগেছে। এই ঘটনাকে তিনি ২০১৬ সালে তার ওপর এক নারীর কুমড়ো বীজ ছুড়ে মারার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
কানাডার সিটিভি ন্যাশনাল নিউজের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গণমাধ্যমের একটি বাসে অবস্থান করা দুই ব্যক্তিকেও পাথর ছুঁড়ে মারা হয়েছে। যদিও তারা আহত হননি। বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এরিন ও’তোলে এই ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা কখনও মেনে নেওয়া হবে না এবং আমাদের গণমাধ্যমকে হুমকি, নিপীড়ন এবং সহিংসতা মুক্ত রাখতে হবে। ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে ট্রুডো যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তা আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে।
নির্বাচনি প্রচারণায় নামার পর এবারই প্রথম সহিংসতার মুখে পড়লেন জাস্টিন ট্রুডো। বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন তিনি। করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করায় বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন তিনি। তবে এটাকেই নির্বাচনের অন্যতম এজেন্ডা বানিয়েছে তার দল।
নির্বাচনি প্রচারে নেমে হামলার মুখে পড়া কানাডার একমাত্র নেতা নন জাস্টিন ট্রুডো। এই মাসের শুরুতে পিউপিল’স পার্টি অব কানাডার (পিপিসি) নেতা ম্যাক্সিম বার্নিয়ারকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া হয়। সাস্কাচেওয়ান প্রদেশের সাস্কাটুন শহরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৫৮
আপনার মতামত জানানঃ