ডেস্ক রিপোর্ট : কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি তৈরি পোশাক খাতে (আরএমজি) করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে এ শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক নতুন সমীক্ষায় এমনটা বলা হয়েছে। সমীক্ষা প্রতিবেদনে চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে বৈষম্য এবং হয়রানি, নারীদের কণ্ঠ রোধ, অসম মজুরি ও পারিবারিক বিধিনিষেধ।
আইএলও’র বেটার ওয়ার্ক প্রকল্পে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, কেনিয়া, লেসোথো ও ভিয়েতনামের পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, মজুরিভুক্ত চাকরি সমাজে নারীর ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পটিয়াইনেন বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরতদের ৬০ শতাংশই নারী। নারীদের কর্মসংস্থান হ্রাস পেলে তা কেবল তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নে বাধা সৃষ্টি করবে না, সেই সাথে অভিজ্ঞ, অনুগত এবং দক্ষ কর্মীদের ঘাটতিও বাড়িয়ে তুলবে।’
আইএলও কর্মস্থলে সংক্রমণ কমাতে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত একটি জাতীয় পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য (ওএসএইচ) নীতিমালা তৈরির পক্ষে সমর্থন দিয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া, তৈরি পোশাক খাতের কর্মীদের আয়, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান রক্ষা এবং মহামারি চলাকালীন নিয়োগকর্তাদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর।
২০২০ সালের মে মাসের নমুনা তথ্য থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের মধ্যে কেবল ৩.৯ শতাংশ তাদের পুরো কর্মক্ষমতা ধরে রেখেছে এবং দেশের আরএমজি কারখানার ৪৩ শতাংশ কম লোকবল দিয়ে অস্থায়ীভাবে বা অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিচালিত হচ্ছে। শ্রমিক ছাঁটাই বৃদ্ধি যেমন পেয়েছে তেমনি পুনরায় চালু হওয়া কারখানাগুলোর বেশির ভাগই কম লোকবল দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
বেটার ওয়ার্ক প্রকল্প পরিচালিত সমীক্ষায় বলা হয়, ‘কর্মসংস্থানের ফলে আলোচ্য দেশগুলোতে নারীর ক্ষমতায়ন বেড়েছে। ফলে ঘরেও আয়-ব্যয়ের সিদ্ধান্তে তাদের সম্মান ও প্রভাব বেড়েছিল। শুধু তাই নয়, পুরুষরাও ঘরের কাজে অংশ নিয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের ধাক্কায় এসব নারী শ্রমিকের কাজ হারানো, কিংবা আয় কমে যাওয়ায় তাদের সেই স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। তাদের ফের অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে।’
পোশাক কারখানা চালু করা হলে সেখানে কর্মচ্যুত নারী শ্রমিকদের ফেরার পথ খোলা রাখার বিষয়ে নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আইএলও বর্তমান পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতকে আগের অবস্থায় ফেরাতে বিভিন্ন সুপারিশও করেছে।
আপনার মতামত জানানঃ