ভারতের বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকার কথিত ‘লাভ জিহাদ’ রুখতে কঠোর আইন আনা হবে বলে জানিয়েছে। বিধানসভার আগামী অধিবেশনেই এ সংক্রান্ত আইন আনার কথা বলেছেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘লাভ জিহাদ’-এ পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান থাকবে এবং জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা করা হবে। প্রস্তাবিত বিলে লাভ জিহাদে সহযোগিতাকারীকেও প্রধান অভিযুক্তের মতো অপরাধী হিসেবে দেখার প্রস্তাব রয়েছে। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী বিয়ের জন্য স্বেচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তনের এক মাস আগে থেকে কালেক্টরের কাছে আবেদন করা বাধ্যতামূলক হবে।
সাধারণত ভারতের উগ্রহিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ‘লাভ জিহাদ’ শব্দ বন্ধটি ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের দাবি অনুযায়ী, মুসলিম ছেলেরা হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে কৌশলে ধর্মান্তর করায়। যদিও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাই ‘লাভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি। আইনেও ‘লাভ জিহাদ’ বলে কোনো অস্তিত্ব নেই।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ যেকোনও ধর্মকে গ্রহণ, অনুশীলন ও প্রচারের স্বাধীনতা দেয়। ‘লাভ জিহাদ’ শব্দটি বর্তমান আইনে সংজ্ঞায়িত নয়। লাভ জিহাদের কোনও ঘটনা কোনও কেন্দ্রিয় এজেন্সিগুলোর নজরে আসেনি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ভারতের সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ যেকোনও ধর্মকে গ্রহণ, অনুশীলন ও প্রচারের স্বাধীনতা দেয়। ‘লাভ জিহাদ’ শব্দটি বর্তমান আইনে সংজ্ঞায়িত নয়।
এর আগে, বিজেপিশাসিত কর্ণাটক ও হরিয়ানা সরকারও বলেছে তারা ‘লাভ জিহাদ’ সম্পর্কিত আইন আনার বিষয়ে বিবেচনা করছে। গত ৬ নভেম্বর কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেছিলেন, তিনি ‘লাভ জিহাদ’ –এর নামে হওয়া জোরপূর্বক ধর্মান্তরের বিষয়ে আইন আনতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চান।
কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইও বলেছিলেন যে ‘লাভ জিহাদ’ একটি সামাজিক কুফল এবং এটি মোকাবিলায় দেশে একটি আইন আনার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, কর্ণাটক সরকার ওই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে আইনী সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছে।
অন্যদিকে, হরিয়ানা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল বিজ সম্প্রতি বলেন, হরিয়ানায় এই জাতীয় মামলাগুলো তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, ‘লাভ জিহাদ অত্যন্ত গুরুতর বিষয় হয়ে উঠছে। রাজ্য পুলিশের ডিজিপিকে ওই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হরিয়ানা গঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সমস্ত ঘটনা প্রকাশিত হবে। ধর্মান্তরিত হওয়ার পরে বিয়ে অথবা বিয়ের পরে ধর্মান্তর করানো হোক এ জাতীয় সমস্ত ঘটনা সামনে আনা হবে বলেও হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল বিজ মন্তব্য করেন।
আপনার মতামত জানানঃ