রাজধানীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার (২১ জুন) রাতে সূত্রাপুর থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পল্টন থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন- উপপরিদর্শক রহমত উল্লাহ ও সহকারী উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। এছাড়া ঘটনায় জড়িত ফরহাদ হোসেন ও হাসিব হাসান নামে দুই ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে, ওই দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।
পুলিশের মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার আবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করছি। পুঙ্খানুপঙ্খ তদন্ত করে যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে আর কিছু বলা সম্ভব নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাজমুল হক সমুন নামে শান্তিনগরের একজন বাসিন্দা রোববার পল্টন থানায় একটি মামলা করেন। এজাহারে দুইজনকে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়। তারা হলেন-ফরহাদ হোসেন ও হাসিব হাসান। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয় দুজনকে। তারা ডিবি পরিচয় দিয়েছিলেন নাজমুলের কাছে।
এজাহারে বলা হয়- আসামি ফরহাদ ও হাসিব বাদি নাজমুলের পুর্বপরিচিত। ১৪ জুন রাতে তার শান্তিনগরের বাসায় দুই ব্যক্তি গিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন। এক পর্যায়ে তারা বাসার আসবাবপত্র ওলট পালট করতে থাকেন। তাদের একজন পকেট থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট টেবিলে রেখে বলেন, নাজমুল ইয়াবার ব্যবসা করেন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। মামলা থেকে বাঁচতে টাকা দাবি করেন তারা। ভয়ে ঘরে থাকা ৫৫ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেন তিনি।
এরপরই তাদের একজন ফোন করে ফরহাদকে ডাকেন সেখানে। ঘটনার দুদিন পর হাসিব হাসানকে নিয়ে ওই বাসায় আসেন ফরহাদ। ডিবি পরিচয় দেওয়া ওই দুইজনকে আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেন তারা। পরে নাজমুল জানতে পারেন, টাকা আদায় করতে ফরহাদ ও হাসিব হাসান মিলে পুলিশ সদস্য পরিচয়দানকারী দুজনকে নিয়ে নাটক সাজিয়েছেন।
মামলার পর প্রথমে ফরহাদ ও হাসিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দুই পুলিশ সদস্যর নাম বেরিয়ে আসে। পরে এসআই রহমত উল্লাহ এবং এএসআই রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুলিশের বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার হার আশংকাজনক। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে বিভিন্ন অপকর্মের। এবিষয়ে পুলিশের কর্তৃপক্ষসহ দেশের সরকাকেও নজর বাড়াতে হবে। কেননা, আইন রক্ষাকারী কর্তৃক একেরপর এক আইন বিরোধী কর্মকাণ্ডে দেশের আইনের প্রতি মানুষের অনাস্থা জন্মাবে। ফলশ্রুতিতে দেশে দেখা দিবে বিশৃঙ্খলা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনের খড়্গ চালানোর আগে পুলিশের ওপর চালানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। তারা বলেন, আগে পুলিশকে অপরাধমুক্তের চরিত্র অর্জন করতে হবে। নইলে সন্ত্রাসীদের নিকট পুলিশের যে ভাবমূর্তি সৃষ্টি হচ্ছে, এতে পুলিশ আর সন্তাসীদের মধ্যকার তফাৎ ঘুচে যায়।
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১৪৩৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ