গত অক্টোবরের পর জার্মানিতে এই প্রথম করোনা সংক্রমণের হার নির্দিষ্ট মাত্রার নীচে নেমে গেছে৷ প্রায় ছয় মাস আগে ধীর গতিতে করোনা টিকা কর্মসূচি শুরু হলেও জার্মানিতে টিকাদানের গতি বেড়েই চলেছে৷ পর্যায়ক্রমে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের টিকা দেবার কাজে অনেক অগ্রগতি হয়েছে৷ এমনকি কয়েকটি রাজ্যে সেই প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় সব প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকা নেবার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
সংক্রমণের হার কমতে থাকায় ডেনমার্কের পর এবার জার্মানিতেও মাস্ক পরার নিয়ম শিথিল করার বিষয়ে আলোচনা চলছে৷ ধাপে ধাপে মাস্কের ব্যবহার কমানোর ইঙ্গিত দিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান৷
গত বছর করোনা সংকটের শুরু থকেই প্রথমে কাপড়ের মাস্ক, তারপর মেডিকাল মাস্ক পরতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে জার্মানির মানুষ৷ সব জায়গায় খোলা আকাশের নীচে পরতে না হলেও দোকানবাজার, ট্রামে-বাসের মতো বদ্ধ জায়গায় এমন মাস্ক বাধ্যতামূলক৷ করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত কমতে থাকায় জার্মানিতে মাস্ক সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে৷ সোমবার থেকে ডেনমার্কে ঠিক সেটাই করা হচ্ছে৷
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেন, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে খোলা আকাশের নীচে মাস্ক পরার নিয়ম শিথিল করা যেতে পারে৷ যে সব অঞ্চলে সংক্রমণের হার অত্যন্ত কম ও যথেষ্ট বেশি মানুষ করোনার টিকা পেয়ে গেছেন, সেখানে এমনকি বদ্ধ জায়গায়ও মাস্ক না পরলেও চলে বলে তিনি মনে করেন৷ তবে তার মতে, মনে সংশয় থাকলে বিশেষ করে বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরাই ভালো৷
জার্মানির বিচারমন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট রাজ্য সরকারগুলির উদ্দেশ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখার ডাক দিয়েছেন৷ বিশেষ করে স্কুলের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাস্ক পরে থাকার প্রয়োজন আছে কিনা, তা পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন৷
বাড়ছে করোনার টিকাদানের গতি
জার্মানিতে সংক্রমণের হার কমার পাশাপাশি করোনা টিকাদানের গতিও বাড়ছে৷ চার কোটিরও বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন৷ ফলে জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ টিকা নেবার প্রক্রিয়ার আওতায় এসে পড়েছেন৷ দুই কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ টিকার দুটি ডোজই পেয়ে গেছেন৷
টিকার ক্ষেত্রে এমন অগ্রগতির ফলে সন্তুষ্টি বাড়লেও টিকা দেবার অবকাঠামোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে৷ ডেল্টার মতো করোনা ভাইরাসের আরও ছোঁয়াচে সংস্করণ জার্মানিতেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে কমপক্ষে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য টিকার তৃতীয় ডোজ দেবার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে৷ জনসাধারণের সার্বিক কল্যাণের জন্য নিয়মিত করোনা টিকার আরও উন্নত সংস্করণ দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে বলে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷
করোনা সংকটের জন্য যে সব টিকাদান কেন্দ্র খোলা হয়েছিল, উচ্চ ব্যয়ের কারণে সেগুলি অদূর ভবিষ্যতে বন্ধ করার জন্য চাপ বাড়ছে৷ ডাক্তারের চেম্বারগুলি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, করোনা ভাইরাসের কোনো নতুন সংস্করণ হুমকি হয়ে উঠলে দ্রুত পদক্ষেপ নেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ সেইসঙ্গে বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে আগামী দুই বছরের জন্য ৪৪০ কোটি পর্যন্ত টিকা অর্ডার দিয়ে রেখেছে ইইউ কমিশন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪৫ কোটি মানুষের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের মানুষের জন্যও টিকা পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে৷
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১৪৩৮
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ