যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে ইউরোপ যাচ্ছেন জো বাইডেন। তার ৮ দিনের এ সফর যুক্তরাজ্যে জি-৭ সম্মেলন দিয়ে শুরু হলেও জেনিভায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তরসূরীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ওপরই মূলত সবার নজর থাকছে।
বিশ্বের শীর্ষ দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন অনেকদিনের; বাইডেন তা কমিয়ে আনতে পারবেন, নাকি উত্তেজনা আরও উসকে দেবেন তা নিয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে বাইরে চলছে তুমুল আলোচনা।
এদিকে রাশিয়াকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফর শুরু করেছেন। রাশিয়াকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে রাশিয়াকে মূল্য দিতে হবে ।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার যুক্তরাজ্য পৌঁছেছেন বাইডেন। আটলান্টিক চার্টার নিয়ে তিনি বরিস জনসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তা ইস্যুতে ১৯৪১ সালে উইনস্টন চার্চিল ও ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের যে ঐকমত্য হয়েছিল, আটলান্টিক চার্টার তারই আধুনিক সংস্করণ।
ইউরোপে আট দিনের সফরে বাইডেন উইন্ডসর ক্যাসেলে রানি এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি জি–৭ ভুক্ত দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দেবেন। সফরের শেষ দিকে বাইডেন জেনেভায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
হোয়াইট হাউস ইঙ্গিত দিয়েছে, বাইডেন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক কর্মকাণ্ড, সাইবার হ্যাকিং হামলা, আলেক্সি নাভালনির কারাদণ্ড প্রভৃতি ইস্যুতে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
গতকাল সাফল্কে আরএএফ মাইল্ডেনহল বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাসদস্য ও তাদের পরিবারের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাইডেন বলেন, তিনি পুতিনকে স্পষ্ট বার্তা দেবেন। বাইডেন আরও বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে যেতে চাই না। আমরা স্থিতিশীল সম্পর্ক চাই। তবে আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে রুশ সরকারকে শক্ত ও কার্যকর জবাব দেবে যুক্তরাষ্ট্র।’
বিভিন্ন ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিষয়ে নাক গলাচ্ছে এবং সীমা অতিক্রম করতে চাইছে।
জি–৭ ভুক্ত অন্য দেশের নেতারা ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমের কর্নওয়ালে আগামী শুক্রবার পৌঁছাবেন। এ সপ্তাহের শেষে সেখানে তাঁদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জি–৭ ভুক্ত দেশের মধ্যে রয়েছে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এবারের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে করোনা মহামারি।
মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন আগামী দুই বছরে প্রায় ১০০টি দেশে ৫০ কোটি ডোজ ফাইজারের টিকা বিতরণ করবে। সম্মেলনে যুক্তরাজ্য থাকবে আয়োজক দেশ হিসেবে।
ইউরোপ সফরের আগে ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্রে বাইডেন নিজের পররাষ্ট্র নীতির রূপরেখা তুলে ধরেন৷ বিশেষ করে মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তার মুখে তার ইউরোপ সফর সহযোগীদের প্রতি অ্যামেরিকার অঙ্গীকার আবার জোরালো করবে বলে আশা প্রকাশ করেন৷
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ