ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে না আনা’ পর্যন্ত তিনি ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর। বুধবার এক ভিডিওবার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নেতানিয়াহুকে ফোন করে সহিংসতা কমানোর কথা বলেন।
টুইটারে পোস্ট করা ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ফোন কলের কথা উল্লেখ করেননি। তবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে বলায় জো বাইডেনকে প্রশংসা করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের নাগরিক, আপনাদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত এ অভিযান চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমি সংকল্পবদ্ধ।
এদিকে গাজা শাসনকারী হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম সাংবাদিকদের বলেছেন, চলমান সংঘাতের অবসানে যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে, সে আলোচনায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করলে শান্তি ফিরিয়ে আনার আলোচনার পথ তৈরি হবে।
যুক্তরাষ্ট্র আবারও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসের চেষ্টা আটকে দিয়েছে। ফ্রান্স এ প্রস্তাব করলে নিরাপত্তা পরিষদের এ অবস্থান সংকট নিরসনে তাদের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করবে দাবি করে তাতে সমর্থন দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
দুই-একদিনের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি
অবরুদ্ধ গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। জবাবে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসও পাল্টা রকেট হামলা চালাচ্ছে।
বিরাজমান এ সংঘাতময় পরিবেশ দু-একদিনের মধ্যেই শান্ত হবে বলে আশা করেছেন হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। হামাসের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তার প্রত্যাশা, দুই পক্ষ ‘দুই-একদিনের ভেতরই’ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাবে।
লেবাননের আল-মায়াদিন টিভিকে হামাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক বলেন, আমরা ধারণা করছি যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখন যে চেষ্টা চলছে, তা সফলতা অর্জন করবে। আমার ধারণা, এক-দুইদিনের ভেতরেই আমরা যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে পারবো। পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে এ যুদ্ধবিরতি হবে।
যদিও সংঘাত বন্ধে গত কয়েকদিন ধরেই ইসরায়েল ও হামাসের ওপর আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছিল। বুধবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিয়েছেন বলে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে ইঙ্গিত মিলেছে।
মিশরের নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে একমত হয়েছে; তবে তাদের মধ্যে এখনও আলোচনা চলছে। উভয় পক্ষ শুক্রবারের মধ্যেই সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
প্রসঙ্গত, দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের একটি এলাকা ও আল-আকসা মসজিদে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। তা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা বৃদ্ধির এক পর্যায়ে হামাস ইসরায়েলের স্থাপনা টার্গেট করে রকেট ছোড়ে। সে সুযোগে ইসরায়েলও গাজায় পাল্টা বিমান হামলা শুরু করে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান হামলা গড়িয়েছে টানা দশম দিনে। বৃহস্পতিবার (২০ মে) মধ্যরাত ও ভোরেও ভূখণ্ডটিতে হামলা অব্যাহত রাখে দেশটি। টানা এই হামলায় আরও ৯ জন নিহত হয়েছেন। এতে করে গত দশদিনে ইহুদি এই দেশটির হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ২২৭ জনে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩১৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ