সম্প্রতি সময়ে উভয় সংকটে হেফাজতে ইসলাম। ঘর-বাহির দু’টোই উজাড় হয়ে যাচ্ছে তাদের। ২০১৩ এর পর থেকে সরকারের সাথে গড়ে ওঠা সম্পর্কে বড়সড় ফাটল, যা থেকে প্রায় ধ্বসে পড়তে চলেছে আল্লামা শফীর সময়ে গড়ে ওঠা সম্পর্কের ইমারত। একই সাথে মামুনুল হকের রিসোর্ট কেলেঙ্কারি এবং তা নিয়ে হেফাজতের নমনীয়তার কারণে সাধারণ মানুষের চোখে নিজেদের অবস্থান হারিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
হেফাজতের নেতৃস্থানীয়রা ভেবেছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সফরকে ঘিরে তাদের প্রতি দেশের মানুষের সমর্থনকে কাজে লাগিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করে সরকারকে কাঁপিয়ে দেবে। কিন্তু সরকারের কৌশলের কাছে হেফাজতে ইসলাম এগোতে পারেনি খুব একটা। কাঁপিয়ে দেয়া তো দূরে থাকুক, সরষে পরিমাণ টলাতে পারেনি সরকারকে। একই সাথে মাদ্রাসা শিক্ষা হেফাজতে ইসলামের নেতাদের দায়িত্বজ্ঞানিহীন কার্যকলাপের কারণে সংকটের মধ্যে পড়ল।
সরকারবিরোধী শক্তি হিসেবে উত্থানের চেষ্টা
২০১৩ সালে রাজধানীতে হেফাজতে ইসলাম প্রথম সংঘবদ্ধ শক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছিল। তারা জাতীয় মসজিদকে সংঘাত ও নাশকতার কাজে ব্যবহার করেছিল। সরকার প্রথমে পুলিশি শক্তি ব্যবহার করে তাদের দমন করলেও দীর্ঘ মেয়াদে একটি সমঝোতার পথ খুঁজেছিল। হেফাজতের তৎকালীন শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একটা আপসেও পৌঁছেছিল। তাতে হেফাজত লাভবানও হয়েছিল। এতদিন ধরে হেফাজত সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা আদায় করছিলে।
তবে ২০১৩ সালে সরকার সফলভাবে হেফাজতকে দমন করতে করতে সক্ষম হয়েছিলো। এরপরই হেফাজত একটি সংগঠিত শক্তি হিসেবে রাজনৈতিক মাঠে আবির্ভূত হয়। তখন সব রাজনৈতিক সংগঠনই হেফাজতকে কাছে পেতে নানা রকম চেষ্টা করে। তবে এই দৌঁড়ে সরকারই এগিয়ে যায়। সরকার হেফাজতের সঙ্গে একটি সমঝোতা করে এবং সেই সমঝোতায় হেফাজত বিভিন্নভাবে লাভবান হয়। হেফাজতের কথা সরকার যেমন পাঠ্য পুস্তক সংশোধন করে, তেমনি হেফাজতের নেতারা নানা ভাবে লাভবান হয়েছে বলে জানা যায়।
এখন হেফাজতের ইসলামের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। পাশাপাশি বর্তমান নেতৃত্বে যারা আছে, তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকায় রাজনৈতিকভাবেও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে হেফাজতে ইসলামকে। পাশাপাশি যেমন সরকারকে চাপে ফেলিয়ে আরও সুবিধা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা যেমন বানচাল হয়ে গেল, তেমনি সরকারকে চাপে ফেলে তথাকথিত ইসলামী বিপ্লব প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন, সে স্বপ্নও ভেস্তে গেল। ফলে এখন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে হেফাজতে ইসলাম।
গত ২৬ মার্চ হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদ সমাবেশে শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যা ঘটেছে, সেদিকে নজর দিলে আমরা বুঝতে পারব তাদের চিন্তাধারার ধরন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাদের আক্রোশ প্রবল, উপমহাদেশের সর্বমান্য সংগীতসাধক ব্রাহ্মণবাড়িয়ারই কৃতী সন্তান ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই, সরকারি দপ্তরে ধ্বংসাত্মক হামলায় বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের নেতিবাচক মনোভাবেরই প্রকাশ ঘটে। তারা জাতীয় সংগীত গ্রহণ করে না, জাতীয় পতাকার প্রতিও সম্মান প্রদর্শনে অনিচ্ছুক।
আদতে সংবিধান, গণতন্ত্র, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, জাতীয় শিক্ষানীতি, বাঙালির সামাজিক রুচি-রীতি অর্থাৎ এ জাতি দীর্ঘ সংগ্রাম করে রাষ্ট্রীয় ও নাগরিক জীবনের জন্য যা কিছু অর্জন করেছিল, তার অনেক কিছুই এরা মানে না। এ যেন রাষ্ট্রের ভেতরে আরেকটি রাষ্ট্র। আর কারও জন্যই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অবস্থান কাম্য নয়। এ চিন্তাধারা এই সমাজে বহুকালের একটি বহমান ধারা। কেবল আইন ও পুলিশি ব্যবস্থায় এর সুরাহা হবে না। তবে স্বাধীনতা দিবস ও পরের কয়েক দিনে যেসব ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিচার করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। দোষীদের ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদেরও বুঝতে হবে, রাষ্ট্র সংবিধান ও আইনের পথেই চলতে বাধ্য। এখানে শৈথিল্য বা দ্বিচারিতা সম্ভব নয়।
এরপর থেকেই হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করা হয়েছে। এমনকি প্রায় আট বছর আগে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারা দেশে মোট ৮৩টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে ৬১টি মামলার তদন্ত এখনও পুলিশ শেষ করতে পারেনি। গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে ঘিরে হেফাজতের বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর নতুন করে পুরোনো মামলার তদন্ত শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। আগের সব মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করতে পুলিশ সদর দপ্তর নির্দেশনা দিয়েছে।
২০১৩ সালের তাণ্ডবের ঘটনায় শুধু রাজধানীতেই মামলা হয়েছে ৫৩টি। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, কক্সবাজার ও লক্ষ্মীপুরে আরও ৩০টি মামলা হয়। এসব মামলায় হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির, নেজামে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদেরও আসামি করা হয়।
এদিকে, হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এটি জমা দেওয়ার বিষয় প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন পিবিআই ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।
এছাড়া ৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে সোনারগাঁর একটি রিসোর্টে ঘেরাওয়ের পর ভাঙচুর-সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ওই সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়টি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে পুলিশ দুটি ও যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতারা চারটি মামলা করেন। এসব মামলায় গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় গত ২৬ মার্চ সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাজধানীর পল্টন থানায় মামলাটি হয়। মামলায় আসামি হিসেবে মামুনুল হকসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই থেকে তিন হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে মামুনুল হককে।
মার্চ পটিয়ায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভের সময় ভাঙচুর করেন। ওই ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় হেফাজতে ইসলামের ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সাধারণ মানুষের সমর্থন হারাচ্ছে হেফাজতে ইসলাম
আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতের নেতৃত্বে আসেন উগ্রবাদীরা। জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে বর্তমান হেফাজতের যারা নেতৃত্বে এসেছেন, তাদের সকলেরই একটি রাজনৈতিক পরিচয় আছে এবং এরা উগ্র মৌলবাদী ধারার প্রবক্তা বলেই হেফাজতের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে। হেফাজতে ইসলামকে ঘিরে সাধারণ মানুষের যে ধর্মীয় আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল, তার ভীত নড়তে শুরু করেছিল শফীর মৃত্যুর পর থেকেই। আর গত কিছুদিনের ঘটনায় তা পুরোপুরি ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।
হেফাজতের নতুন নেতৃত্বে আসা বাবুনগরী-মামুনুল আল্লামা শফীর অনুসারীদেরকে হেফাজতের মূল কমিটি থেকে বিতাড়িত করেন এবং তারা হেফাজতকে ব্যবহার করে একটি রাজনৈতিক মেরুকরণ করার চেষ্টা করেন। আর এই চেষ্টার অংশ হিসেবেই তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধিতা করে রাস্তায় নামে। এরপর নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর এর বিরোধিতা করে। এসব করতে গিয়ে তারা সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।
হেফাজতে বাবুনগরীপন্থীরা মনে করছিল এই চ্যালেঞ্জ এর মধ্য দিয়ে সরকার মাথা নত করবে এবং তাদের আরও সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। বিশেষ করে আর্থিক এবং অন্যান্য হবে লাভবান হওয়ার জন্যই মূলত তারা এ ধরনের শক্তি প্রদর্শনের কৌশল গ্রহণ করেছিল বলে অনেকে মনে করেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সমর্থন আরও পোক্ত হবে বলে মনে করেছিলেন তারা।
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই হেফাজতের নেতাদের যে বিভিন্ন রকম অপকর্মের ফিরিস্তি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে তাতে এই সংগঠনের অনেক নেতা মান সম্মান নিয়ে বাঁচতে চান। তারা মনে করছেন যে, এই সংগঠনের সঙ্গে থাকলে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হেফাজতের একজন নেতা বলেছেন যে, আগে আমরা হেফাজত করতাম এটা গর্ব করে বলতাম। কিন্তু মামুনুল হকের ঘটনার পর এখন হেফাজতের পরিচয় দিতেই আমরা লজ্জা বোধ করছি। হেফাজতের যে কৌশল জুনায়েদ বাবুনগরী নিয়েছিলো, সেই কৌশলের কারণে হেফাজতের দুই কূলই নষ্ট হয়ে গেছে বলে তারা মনে করছেন।
২৬-২৭ মার্চের তাণ্ডব এর ফলে হেফাজতের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। এই নেতিবাচক ধারণার রেশ কাটতে না কাটতেই মামুনুল হকের লাম্পট্য, ব্যভিচার এবং অবাধ যৌনাচার মানুষের মধ্যে এক ধরনের অরুচি তৈরি করেছে হেফাজত সম্পর্কে।
মামুনুল হকের রিসোর্ট কেলেঙ্কারিতে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান ছিল তুমুল বিতর্কিত। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়্যাল রিসোর্টে কথিত স্ত্রীসহ অবরুদ্ধ হওয়া এবং এর পরবর্তী সময়ে নানা ঘটনায় বিতর্কিত যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় কোনো আলোচনা না হওয়া এবং সাংগঠনিক দায়মুক্তি পেয়ে মামুনুল হকের হেফাজতে বহাল থাকার ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
এমনকি রিসোর্টে নারীসহ মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তাতে তার জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের মুখপাত্র ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
আজিজুল হক বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনতা ও হেফাজতের কর্মীরা মাওলানা মামুনুল হককে উদ্ধার করে নিয়ে গেছেন। তিনি সেখানে গেছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে। সেটি আমরা তার প্রথম পরিবারের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়েছি। হেফাজতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমরা ঢাকার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই বিষয়টি নিয়ে তারা কাজ শুরু করেছেন। এর পেছনে যারা ছিল, সরকার দলের লোকজন ছিল তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- সেটা ঢাকার নেতারা নির্ধারণ করবেন। এই ঘটনায় তার জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামুনুল হকের বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য আগুন উস্কে দিয়েছে। রিসোর্টে আটক নারীর সাথে মানবিক বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ দাবি করার পর, সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায় ‘মানবিক বিয়ে’। বিভিন্নভাবে ট্রোল হতে থাকেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। এরপর স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে, স্ত্রীকে খুশি করতে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে কোনো সত্যকে গোপন করারও অবকাশ রয়েছে।’- তার এমন বক্তব্য আরও বিতর্কিত করে তুলেছে হেফাজতে ইসলামের আদর্শিক অবস্থানকে।
পাশাপাশি গত বুধবার (৭ মার্চ) ভোরে ‘শিশুবক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে রাষ্ট্রবিরোধী ও রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে কটাক্ষ করা এবং উসকানিমূলক কথাবার্তা বলার অভিযোগে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় মাদানীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বিভিন্ন পর্নো ভিডিও’র খোঁজ পায় র্যাব। প্রসঙ্গত, শারীরিক গঠন শিশুদের মতো হলেও প্রকৃতপক্ষে ‘শিশু বক্তা’ মাদানীর বয়স প্রায় ২৬-২৭ বছর।
আটক রফিকুল ইসলাম মাদানীর মোবাইল ফোন চেক করলে একাধিক পর্নো ভিডিও’র অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তাছাড়া মাদানীর ব্যক্তিগত ম্যাসেঞ্জার অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন জনকে আপত্তিকর ছবি পাঠানোর প্রমাণও পাওয়া গেছে। এদিকে, মাদানী দু’ বছর আগে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়াকে বিয়েও করেছেন। তবে বিয়ের বিষয়টি তাদের পরিবারের কেউও জানতো না। মাদানী তার ভাবির এক আত্মীয়াকে ২০১৯ সালে গোপনে বিয়ে করেন। এ বিয়ে শুধু কলেমা পড়েই করা হয়েছিল, কোনও কাবিননামা বা রেজিষ্ট্রেশন করা হয়েছিল না। মাদানীর ভাবি ছাড়া এই বিয়ের কথা আর কেউ জানতো না বলেও জানিয়েছে তারা।
মাদানী তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গত মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে মাদানীর গোপনে বিবাহিত স্ত্রী’র বাড়িতে আনুষ্ঠানিক বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। তবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে মেয়েটির পরিবার।
মামুনুল হক, ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামের নারীঘটিত কেলেঙ্কারি যেনো হেফাজতের একটি প্রতীক হিসেবে এসেছে। এর ফলে হেফাজত সম্পর্কে সাধারণ মানুষ এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে শুরু করেছে। আর সরকার হেফাজতের ব্যাপারে একটি বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল গ্রহণ করে হেফাজতকেই একটা সংকটের মধ্যে ফেলেছে। এখন হেফাজত না পারছে সরকারের সাথে আপোষ সমঝোতায় যেয়ে ফায়দা লুটতে, না পারছে সরকার বিরোধিতার হুংকার ছাড়তে। ফলে হেফাজত এখন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। হেফাজতের নেতারাই এখন জুনায়েদ বাবুনগরীসহ উগ্রবাদী নেতাদেরকে গালমন্দ করছেন এবং তাদের জন্য হেফাজতের একূল ওকূল দুকূলই গেলে বলে তারা অভিযোগ করছেন।
এসডব্লিউ/এসএস/১৫০৫
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ