বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী দেশে গৃহকর্মীর সংখ্যা ১৩ লাখ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাব অনুযায়ী এই সংখ্যা প্রায় ৩২ লাখ। তাদের মধ্যে ৮০ ভাগই নারী। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালে দেশে মোট ৫১ গৃহকর্মী নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে নির্যাতন ও নৃশংসতার শিকার হয়েছেন ৩১ গৃহকর্মী। তাদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা, শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি এবং দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তাদের সংগঠিত করতে আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থন করা জরুরি।
২০১৯ সালে নির্যাতনের শিকার ৫১ জন গৃহকর্মীর মাঝে ১৭ জন মারা গেছেন।
গতকাল সোমবার বিলস ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) যৌথ উদ্যোগে এবং আইএলওর সহযোগিতায় এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ডিআরইউ মিলনায়তনে ‘গৃহশ্রমিকদের শোভন কাজ-সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থনের প্রয়োজনীয়তা ও করণীয়’ শীর্ষক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিলস মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান। প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বাসসের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও লেবার রাইট জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া, ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) যুগ্ম সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ চৌধুরী, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেইলি অবজারভারের অনলাইন সম্পাদক ও লেবার রাইট জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাজী আ. হান্নান। তিনি বলেন, বিলসের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিক বিদেশে যান, যাদের বেশির ভাগই যান গৃহশ্রমিক হিসেবে। ২০১৯ সালে শুধু সৌদি আরবেই গেছেন ৬২ হাজার নারী শ্রমিক। বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চার বছরে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে যাওয়া ৪১০ নারী লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরবেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৩ জন। তাদের ৩৯ জন আত্মহত্যা করেন এবং ৬৯ জন মারা গেছেন দুর্ঘটনায়, যার কারণ কেউ জানে না। আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিতে সামাজিক সচেতনতা জরুরি। এ জন্য আইন করা প্রয়োজন।
খবর : সমকাল, পৃষ্ঠা ৬ / ০৩ নভেম্বর ২০২০
আপনার মতামত জানানঃ