হেফাজতে ইসলামীর ডাকে বিগত হরতালে কর্মীদের সহিংসতায় ক্ষুব্ধ হয়ে হেফাজতে ইসলামের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আব্দুল আউয়াল। বিশিষ্ট আলেম জনাব আব্দুল আউয়াল হেফাজতের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আমির এবং নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়োর পর নেটিজেনদের মধ্যে সেটা নিয়ে তুমুল আলোচনাও চলেছ।
সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় রেলওয়ে জামে মসজিদের আয়োজনে শবে বরাতের আলোচনায় উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে তিনি আর হেফাজতের সঙ্গে না থাকার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ২৭ মার্চ হরতাল ডেকেছিল হেফাজতে ইসলাম। ওই কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে হেফাজতের কর্মীরা সহিংসতায় লিপ্ত হয়। হরতালকারী হেফাজতের কর্মীরা বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে অনেকে আহত হন।
এই সহিংসতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে সংগঠনটির অন্যতম নায়েবে আমির শবে বরাতের বক্তব্যে বলেন, ‘হরতালের দিন সকালে আমাকে মসজিদের ভেতরে আটকানো হয়েছে। তাঁরা (র্যাব–পুলিশ) আমাকে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ওপর থেকে সরাসরি অ্যাকশনে যাওয়ার অর্ডার রয়েছে। আমাদের তো অস্ত্র নাই, আমরা কি তাদের সঙ্গে পারি? পরে খবরে খবর থেকে জানতে পেরেছি, শিমরাইলে ১৭টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। কারা পুড়িয়েছে তা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কিছু সন্ত্রাসী লোকেরা পুড়িয়েছে, অথচ আমাদের ছাত্ররা কেউ নাই। এখন তাঁরা (পুলিশ) বলতেছে, আপনি যদি আমাদের কথা না শুনতেন, এই সবগুলো মামলা আপনার নামে হইত।’
আব্দুল আউয়াল উক্ত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘পুলিশ আমাদের বুঝতেছে না, আমাদের হেফাজতের অতি উৎসাহী লোকেরাও আমাদের বুঝতে চাইছে না। আমি আর তোমাদের হেফাজতের সাথে থাকব না, আমি মসজিদ নিয়েই থাকব। এখন আমার বয়স হয়ে গেছে, অসুস্থ হয়ে গেছি, দাঁড়াইতে পারি না, হাঁটতে পারি না। তাই আমি হেফাজতের নেতৃত্ব আর দিব না, কোনো আন্দোলনেও যাব না।
নারায়ণগঞ্জের হেফাজতের আরেক নেতা মাওলানা ফেরদৌস আহমেদ মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জেলা আমীর যে প্রক্রিয়ায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন এটা সঠিক পদ্ধতি নয়। তিনি পদত্যাগপত্র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জমা দিবেন- এটাই নিয়ম।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মাওলানা আব্দুল আউয়াল নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তিনি পদে থেকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, যার কারণে নেতাকর্মীরা তাকে চাচ্ছেন না।’
আপনার মতামত জানানঃ