
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ছবি তোলায় এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রায়গ্রাম বাণীকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মিশন আলী নামে ওই সাংবাদিক একাত্তর টেলিভিশনের কালীগঞ্জ প্রতিনিধি ও দৈনিক যশোরের স্টাফ রিপোর্টার।
জানা গেছে, নাগরিকদের কাছ থেকে বক্স ও কমপার্টমেন্ট নম্বর দেওয়ার কথা বলে টাকা নেয় একদল যুবক। এ সময় রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু এক চান আলী নামে যুবককে ইউনিয়নের দফাদার দিয়ে মারধর করে।
এ সময় ছবি তোলায় সাংবাদিক মিশন আলীর ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে লাঞ্ছিত করে একটি কক্ষে আটক করে রাখা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিককে উদ্ধার করে।
সাংবদিক মিশন আলী বলেন, উপজেলার ৭নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর লোকজন স্মার্টকার্ড বিতরণের বক্স ও কমপার্টমেন্ট নম্বর দেওয়ার কথা বলে নাগরিকদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে নেয়। এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এসময় চেয়ারম্যানের নির্দেশে চান আলী নামে এক যুবককে মারধর করে দফাদার।
এ সময় আমি ছবি তুলি। তখন চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। চেয়ারম্যানে নিজে আমাকে একটি কক্ষে আটক করে রাখে। এ সময় তিনি আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে বিষয়টি আমি অন্য সাংবাদিকদের জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমাকে উদ্ধার করে।
আলী হোসেন অপু জানান, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সাংবাদিককে আটক করার ৫ মিনিট পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
কালীগঞ্জ থানার এসআই আবুল কাশেম জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একটি কক্ষে সাংবাদিককে দেখতে পাই। পরে উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রাণী সাহা জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। চেয়ারম্যান তাকে বলেছেন, আটকের ৫ মিনিট পর সাংবাদিককে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মফস্বলের প্রত্যেকটা সাংবাদিক পরিচিত। সবাই সবাইকে চেনে। ওখানে কোন সংবাদ হলে তাকে টার্গেট করা সহজ। ঢাকায় সেটা সম্ভব না। মফস্বলের সাংবাদিক প্রতি মুহুর্তে, প্রতিদিনই ঝুঁকির মধ্যে থাকে। মফস্বল সাংবাদিকদের কোনো ধরনেরই নিরাপত্তা নাই৷ আর্থিক বা শারীরিক কেনোটাই না৷ অধিকাংশ সাংবাদিক বেতন পান না আবার প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও দুর্বৃত্তদের চাপের মুখে থাকতে হয়। শীঘ্রই পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হবে – এমন আশাও করেছন না বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১২২০
আপনার মতামত জানানঃ