যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তন চায় তারা ইসলাম, মুসলমান ও দেশবান্ধব নয় মন্তব্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ নেতারা বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপট ছিলো ব্লগার নাস্তিকদের মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক নামে ইসলাম বিদ্বেষী লেখা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী লেখা বন্ধ করা। ইসলাম বিদ্বেষী ও ইসলামের ওপর মিথ্যারোপকারী নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া।
কিন্তু এখন আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিক ব্লগাররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান বরদাশত করবে না। তাই ধর্মপ্রাণ দেশবাসী মুসলমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রক্ষার পক্ষে। যা সরকারকে একান্তভাবে মনে রাখতে হবে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমাননা সরকারের পক্ষে ১৩টি দলের নেতাকর্মীরা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে ওলামা লীগের নেতারা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ২ (ক) ধারায় বর্ণিত হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। আর দ্বীন ইসলামের মূল ভিত্তি নামাজ। নামাজ মুসলমান আর অমুসলমানদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল। নামাজ বেহেশতের চাবি। আর মুসলমান পবিত্র নামাজের হাদিয়া লাভ করেছেন পবিত্র শবে মিরাজের উছিলায়। তাই পবিত্র শবে মিরাজ মুসলমানদের কাছে ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ। কাজেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে শবে মিরাজকে অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া উচিত। যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় ভাবমর্যাদায় পালনসহ এদিন সাধারণ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা উচিত।
এ সময় বক্তারা লিখিত বক্তব্য থেকে বলেন, ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ প্রচারে শীর্ষস্থানীয় সামহোয়্যার ইন, আমার ব্লগ, মুক্তমনা, নাগরিক, প্রথম আলো ব্লগ, ধর্মকারী, নবযুগ, সচলায়তন, অগ্নিসেতু ইত্যাদি নামের ব্লগগুলো অনবরত দেশি-বিদেশি এনজিওগুলোর মদদে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীদের উসকে দিচ্ছে। এদের অশুভ অপতৎপরতা রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুণ্ন রাখতে হবে ও এদেরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনতে হবে।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১ বছর বন্ধ রেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফফে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তকে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইসলামবৈরী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছে। রমজানের ভেতর ক্লাস চলা উচিত নয় জানিয়েছে দেশের প্রায় ৮৭ শতাংশ মানুষ। গত বুধবার (৩ মার্চ) থেকে শুরু করে গত শনিবার (৬ মার্চ) পর্যন্ত চলা সময় অনলাইনের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বক্তারা বলেন, রোজায় সব নিয়মই লঘু করে দেয়া হয়। অফিস আদালতের সময় কমিয়ে দেয়া হয়। সেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর পুরো নিয়ম জারি করে দেয়া তাদের প্রতি বৈষম্য ও বাড়তি চাপ তৈরির শামিল। এতে করে অনেকেই রোজা পালনে নিরুৎসাহিত হবে এবং যারা রোজা রাখবে তাদের অতি বেশি কষ্ট পোহাতে হবে। অথচ হাদিস শরীফে রোজার সময় শ্রমকে কমিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআন সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন পাশ হবে না এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং সরকার রোজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবে এটাই ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান আশা করে।
মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার ও মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী প্রমুখ। এ সময় সংগঠনটির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭০০
আপনার মতামত জানানঃ