সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে দৈনিক ইত্তেফাকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাংবাদিক শরিয়ত উল্যাহর উপর হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার সপ্তাহ পার না হতেই সাংবাদিক শরিয়ত উল্যার পারিবারিক মিনি ট্রাক ঢাকা মেট্রো-৬৪৬৬ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। রবিবার দিবাগত রাত (১৪ ফ্রেবুয়ারি) সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শরিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত তিনটার দিকে হঠাৎ পোড়া গন্ধে বাড়ির সবার ঘুম ভাঙে। দরজা খুলে দেখেন উঠোনে থাকা তাদের মালিকীয় পিকআপটিতে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এতে গাড়িটি পুড়ে ভস্মীভুত হয়ে যায়।
সাংবাদিকের ভাই মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, দিনের বেলা কাজ শেষে সোনাপুর বাজারের পাশে বাড়ির সামনে গাড়িটি রেখে তারা ঘুমাতে যান। রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগুনে পোড়ার শব্দ শুনে ঘরের বাইরে আসলে দেখতে পান তাদের গাড়িটি কে বা কারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তবে তার ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছিলো বলে জানান তিনি। তার ধারণা এ কারণে ট্রাকটি পুড়িয়ে দেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত আট ফেব্রুয়ারি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাড়িতে আসলে সাংবাদিক শরিয়ত উল্লাহর পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি করে প্রতিপক্ষের ভাড়াটে সন্ত্রাসী আমিরাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব নবী ফরহাদ। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরদিন দুপুর ২টার দিকে শরিয়তকে বাড়ি থেকে ডেকে সোনাপুর বাজারে নেওয়া হয়। সেখানে কোনও ধরনের কথা ছাড়াই তাকে মারধর করা হয়। এসময় ফরহাদের নেতৃত্বে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক শরিয়তকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভার্তি করায়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়। তবে ঘটনার আটদিন পার হলেও গ্রেফতার হয়নি মামলার প্রধান আসামি আইয়ুব নবী ফরহাদ। অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা আইয়ুব আলী ফরহাদ বলেন, সাংবাদিক শরিয়তের উপর হামলা ও তাদের গাড়িতে আগুনের ঘটনায় আমি জড়িত নই।
এ বিষয়ে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। প্রধান আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আজকের ঘটনায়ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি। পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, আমরা বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এ ধরনের ঘটনা কখনো কাম্য নয়। আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দলীয় প্রভাব খাটিয়েই যুবলীগের সদস্যরা এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সরকার দলীয় বিধায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে কেউ সাহস করে না। এমনকি যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনও কোনো ভূমিকা নিতে পারে না। এসবের শাস্তি নিরূপণ নয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৮৪০
আপনার মতামত জানানঃ