মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
২৬ জানুয়ারী ২০২১, মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে একাধিক শিফটে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ক্লাস নেয়ার উপযোগী করে তুলতে বলা হয়েছে। ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হলেও আগের মতো একসঙ্গে সবার ক্লাস নেয়া হবে না। একাধিক শিফট করে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস নেয়া হবে। সেক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বাকি ক্লাসগুলো সপ্তাহে একদিন করে নিতে নির্দেশনা দেয়া হবে। সব বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস নেয়া হবে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বার্ষিক উন্নয়ন বরাদ্দ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠাতে অভিভাবকদের সচেতন করতে নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পেইন হিসেবে ভিডিও করে প্রচারণা ও কার্টুন তৈরি করে তা টিভিতে প্রচার করা হবে। বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসতে চাচ্ছে। আমরা আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
তিনি আরো বলেন, ১৮ বছরের কম হওয়ায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়ার সুযোগ নেই। তবে শিক্ষকদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে।
কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলার বিষয়ে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (কিন্ডারগার্টেন) চাইলে যেকোন সময় স্কুল খুলতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের কোন বাধা-নিষেধ নেই। তারা আমাদের নিবন্ধন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে না, তাদের বিষয়ে আমাদের কোন দায়-দায়িত্ব নেই।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে, সেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে বিদ্যালয় খুলে দেয়ার পরিকল্পনা নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্য দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। যাতে করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আদেশ পাওয়া মাত্রই প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত থাকতে পারে।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টি করতে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ১৭ মার্চ, ২০২০ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৩০ জানুয়ারি, ২০২১ পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১৪২৪
আপনার মতামত জানানঃ