দীর্ঘ তিন দশক ধরে হাবল স্পেস টেলিস্কোপের লেন্সে ধরা পড়েছে বহু অভূতপূর্ব মহাজাগতিক দৃশ্য। এবার সেই টেলিস্কোপেই ধরা পড়ল দুই ছায়াপথের সংঘর্ষের আশ্চর্য দৃশ্য়।
কত দূরে ঘটেছে ওই সংঘর্ষ? জানা যাচ্ছে, পৃথিবী থেকে ৫৭ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ওই দুই ছায়াপথ। যার একটির নাম এনজিসি ৬০৪০। অন্যটি এলইডিএ ৫৯৬৪২।
দুই ছায়াপথের সংঘর্ষের যে অনুপম দৃশ্য, তা দেখে মুগ্ধ বিজ্ঞানীরা। দুই ছায়াপথের মধ্যে থাকা লাখ লাখ সূর্য সেই সংঘর্ষে যেভাবে লিপ্ত হয়েছে তা সত্যিই অনবদ্য। সাধারণ নেটিজেনরাও তা দেখে চমকে উঠেছেন।
সাধারণত এই ধরনের সংঘর্ষ এবং তার পর তাদের একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে যাওয়ার এক অবর্ণনীয় আকর্ষণ রয়েছে। তবে সময়ের নিরিখে তা আসলে অত্যন্ত ধীর এক প্রক্রিয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথ যদি তার নিকটতম ছায়াপথ অ্যান্ড্রোমিডার সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে তার আগে তাদের পরস্পরের কাছে আসতে সময় লাগবে ৪০০ কোটি বছর। নাসা তাদের পোস্টে একথাই জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, নক্ষত্র, ধুলো, গ্যাস ও অদৃশ্য ডার্ক ম্যাটার দিয়ে গড়া ছায়াপথগুলি। যখন তারা একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন শক্তিশালী অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে তাদের মধ্যে বড়সড় পরিবর্তন হয়। কাজেই কখনও আমাদের ছায়াপথ যদি এমন সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তাহলে সব কিছু চিরতরে বদলে যাবে।
এটাই প্রথম নয়। এর আগেও মহাকাশের অসাধারণ সব ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসার হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপ। ৩০ বছরের পুরনো এই দৈত্যাকার টেলিস্কোপে নাসা এবং ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি যৌথভাবে নির্মাণ করেছিল। ১৯৯০ সালে এই স্পেস টেলিস্কোপ মহাকাশে লঞ্চ করা হয়েছিল। তারপর থেকে একের পর এক মহাজাগতিক বিস্ময়ের ছবি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছে এই হাব্বল টেলিস্কোপ। এ যাবৎ এই টেলিস্কোপ ১.৩ মিলিয়নের বেশি পর্যবেক্ষণ করেছে মহাকাশে।
বর্তমানে মহাকাশের গভীর অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করছে হাব্বল টেলিস্কোপ। ইউনিভার্সের বয়স কত তা নির্ধারণে এবং মহাকশের বিভিন্ন গ্রহ, নক্ষত্র ও সৌরমণ্ডলের উপর জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নজর রাখতে সাহায্যে করে এই স্পেস টেলিস্কোপ।
মহাকাশের বিস্তীর্ণ অংশ ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য নাসার মূল হাতিয়ার হল এই স্পেস টেলিস্কোপ। দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশের বিভিন্ন বিস্ময়কর ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরেছে এই স্পেস টেলিস্কোপ। জ্যোতির্বিজ্ঞানে বিপ্লব আনতেই এই টেলিস্কোপের উদ্ভাবন হয়েছিল। মহাকাশ, ছায়াপথ, গ্রহ-নক্ষত্র…
এইসব প্রসঙ্গে আদি ধারণা পরিবর্তন করে, নতুনভাবে সকলের কৌতূহল নিবারণের জন্যই আবিষ্কার করা হয়েছিল Hubble স্পেস টেলিস্কোপ। মিল্কি ওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছাড়াও মহাকাশে যে আরও অসংখ্য ছায়াপথ রয়েছে সেই ধারণা দিয়েছে নাসার এই Hubble স্পেস টেলিস্কোপ
আপনার মতামত জানানঃ