‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’স্লোগান নিয়ে শুরু হচ্ছে ‘ঊনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২১। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ-এর উদ্যোগে ১৬ জানুয়ারি (শনিবার) থেকে ২৪ জানুয়ারি (রোববার) পর্যন্ত নয় দিনব্যাপী এবারের এই উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি।
এবারের উৎসবে পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য মিলিয়ে ৭৩ দেশের ২২৭ চলচ্চিত্র দেখানো হবে, যা চলবে ঢাকার আট ভেন্যুতে। ২২৭ ছবির মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১০৭ এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চত্রির সংখ্যা ১২০। এগুলোর মধ্যে বাংলাদশের ছবি থাকছে ৪১। যার মধ্যে ৩৩ স্বল্পদর্ঘ্যৈ এবং আট পূর্ণদৈর্ঘ্য। বরাবরের মতো এবারের উৎসবেও থাকছে এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ। এই বিভাগের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাকে প্রদান করা হবে এক লাখ টাকার পুরস্কার। এছাড়া অন্য বিভাগগুলো হচ্ছে রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট এ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগ। উৎসবে এবারই প্রথম সংযুক্ত হয়েছে ‘লিজেন্ডারি লিডারস হু চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড’এবং ‘ট্রিবিউট’ নামের দুই নতুন বিভাগ।
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ঢাকা, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত একটি দ্বিবার্ষিক চলচ্চিত্র উত্সব। ১৯৯২ সালে প্রথম উৎসবটি শুরু হয়। প্রথমদিকে উৎসবটি বার্ষিক ভিত্তিতে আয়োজন করা হত কিন্তু ১৯৯৫ সালে হতে উৎসবটি দ্বিবার্ষিক ভাবে আয়োজন করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উত্সব, স্থানীয় চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মূলধারার বিশ্ব চলচ্চিত্রে পরিচয় করিয়ে দিতে পাশাপাশি বাংলাদেশের সুস্থ চলচ্চিত্র সংস্কৃতির প্রচারে উৎসবটি নিবেদিত হয়। উত্সবটি রেনবো ফিল্ম সোসাইটি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
১৪ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্লাবে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, রাজধানীর আট ভেন্যুতে দর্শকরা উৎসবের ছবিসমূহ উপভোগ করতে পারবেন। এই ভেন্যুগুলো হলো জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, শিল্পকলার নন্দন থিয়েটার (মুক্তমঞ্চ), বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স এবং সীমান্ত স্কয়ার সিনেপ্লেক্স। এছাড়া এবারের উৎসবে মিলনায়তনের পাশাপাশি অনলাইনেও চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ থাকছে। লাগ ভেলকি অনলাইন প্লাটফর্মে দেখা যাবে উৎসবের জন্য নির্বাচিত ছবিগুলো। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান কিশোয়ার লায়লা, উৎসবের বিচারকমণ্ডলীর সদস্য মঈনুদ্দীন খালেদ, রোকেয়া প্রাচী, ফেরেদৌস আহমেদ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন উৎসব কমিটির নির্বাহী সদস্য ম. হামিদ।
জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকেল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। এর বাইরে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেট মূল্য ৫০ টাকা। গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। যেখানে অভিভাবকরাও শিশুদের সঙ্গে এই চলচ্চিত্রগুলো বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দেখতে পারবেন। এক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। এর বাইরে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেট মূল্য থাকবে ৫০ টাকা। জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনের সব প্রদর্শনী বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন সবাই। একইভাবে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা, নন্দনমঞ্চ ও নৃত্যশালায় অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য মিলিয়ে উৎসবে অংশ নিচ্ছে ৭৩ দেশের চলচ্চিত্র। যেসব দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে তার মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, আলবেনিয়া, আর্মেনিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বেলজিয়াম, ভুটান, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, কিউবা, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, প্যালেস্টাইন, জার্মানি, গ্রিস, হংকং, হাঙ্গেরি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কাজাখস্তান, কসোভো, কিরগিস্তান, লাটভিয়া, লেবানন, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মেক্সিয়া, নেপাল, নরওয়ে, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, সিরিয়া, তাইওয়ান, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, আরব-আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভেনিজুয়েলা, সাইপ্রাস ও স্বাগতিক বাংলাদেশ।
এসডব্লিউ/ফাআ/১৮৫০
আপনার মতামত জানানঃ