শিকার সভ্যতা ছেড়ে কৃষিতে মানুষ পা রেখেছে আনুমানিক ১৫ হাজার বছর আগে। আর কৃষির গোড়া থেকেই প্রাধান্য পেয়েছে গম, বার্লি, বাজরা, জোয়ার ও ধান। প্রথম কীভাবে ধান চাষ করা হলো তা হলফ করে বলা মুশকিল। সূচনাটা নারীর হাতেই হোক আর স্বতঃস্ফূর্ত গতিতে; ধান চাষের আদি নজির দক্ষিণ এশিয়ায়। সম্ভবত এখানেই প্রথম চাষ করা হয় এবং সে চাষপ্রণালি চীনে অগ্রগতি পায়। চীনের ইয়াংজি নদীরে উপকূলেই ধানচাষ তার পরিণতি লাভ করে। পরবর্তী সময়ে যা ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে।
ধান চাষের ইতিহাসের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারত, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ চীন ও ইন্দোনেশিয়া অঞ্চল ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভারত ও চীনকে কেন্দ্র করে চাষ ব্যবস্থায় যে ক্রম অগ্রগতি; সেটাই পরবর্তী সময়ে ছড়িয়ে পড়েছে কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা ও ইন্দোনেশিয়ায়। প্রত্নতাত্ত্বিকরা চীনের ইয়াংজি নদীর উপত্যকা, থাইল্যান্ডের স্পিরিট গুহা, উত্তর প্রদেশের কোলদিয়া ও কোরিয়ার সরোরিতে ধান চাষের আদি নিদর্শন খুঁজে পেয়েছেন।
সবচেয়ে পুরনো নজির ১৫ হাজার বছর আগের। কেবল খাবার হিসেবে না, চুনাপাথর ও বালির সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে চীনের মহাপ্রাচীরেও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে কাজ হিসেবেও ধান ব্যবহৃত হয়েছে, তার উদাহরণও পাওয়া যায় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে। ধানের ভুসি ব্যবহৃত হয়েছে বাক্স, জুতা কিংবা নিছক জ্বালানি হিসেবে।
ষষ্ঠ শতাব্দীর গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন হয়ে উঠেছিল চাল উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। যদিও রাজনৈতিক আধিপত্য ছিল উত্তর চীনে। উত্তর ও দক্ষিণ চীনের মধ্যে তখন সংস্কৃতির পার্থক্যের পাশাপাশি ব্যবধান ছিল খাবারের অভ্যাসেও। দক্ষিণ চীনের সাধারণের মাঝে তখন কঙ্গি নামে সিদ্ধ জনপ্রিয়তা পায়।
কোরিয়ায় জাক নামে, ভারতে কানজি নামে ও জাপানে ওকায়ু নামে প্রায় সারা দুনিয়ায়ই পরিচিত কঙ্গি। অনেক বছর পরে ইতালি ও আমেরিকার রেস্তোরাঁয়ও আধিপত্য বিস্তার করেছে। যদিও ধান ও চালের ভিন্নতায় কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা যায়। সং সাম্রাজ্যের আমলে (৯৬০-১২৭৯ খ্রিস্টাব্দ) চম্পা ধান ভিয়েতনাম থেকে দক্ষিণ চীনে আসে। ধানের এ জাত ছিল দ্রুত ফলনশীল ও তীব্র খরায়ও সহনীয়। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আধিপত্য বিস্তার করে ফেলল।
বছরে দুই-তিনটি ফলন পাওয়া যেত এ ধানের। যারা ধান উৎপাদন করত, তাদের বলা হতো নঙশি। কৃষকরা ক্রমে প্রযুক্তি আত্মস্থ করতে থাকেন ফলন বাড়ানোর জন্য। তখনকার ক্ষমতাসীন রাজারাও তাদের সহযোগিতা করতে থাকেন। যুক্ত হয় নতুন নতুন জাতের নাম। ইউরোপীয় পর্যটক মার্কো পলো যখন চীন সফর করেন ১২৭১-৯৫ সালের মধ্যে, কুবলাই খানের দরবারে তাকে ভাত থেকে নির্মিত শরাব খেতে দেয়া হয়েছিল।
চীন সাম্রাজ্যে সাদা ভাত ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। সম্রাট কিয়ানলঙের (১৭৩৬-৩৬ খ্রিস্টাব্দ) আমলে খাবারের ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপ্লব আসে। দরবারে খাওয়ার জন্য তখন নিয়মিত থাকত স্যুপ, মাছ, মাংস, সবজি, নুডলস ও মিষ্টান্ন। স্বাভাবিকভাবেই কয়েকটি উপাদানের সঙ্গে সাদা ভাতও দেয়া হতো। ভোজসভা হলে অতিরিক্ত খাওয়া ছিল ঐতিহ্য। চৌ বা ফসল তোলা উৎসব ছিল তাদের একটি। আধুনিক দুনিয়ায় বৈশ্বিক চাল চাহিদার বড় অংশই রফতানি করে চীন।
চীনের ভেতরে ও বাইরে খাল হয়ে বাহিত হতো চাল। দক্ষিণে হাংজু থেকে উত্তরে বেইজিং পর্যন্ত চাল সরবরাহ হতো গ্র্যান্ড ক্যানেলের মধ্য দিয়ে। বিশেষ করে সামরিক বাহিনীর জন্য যেত খাবার। সে সময় সিল্ক রোডের বিভিন্ন অংশে গাধা কিংবা উটের কাফেলায় সরবরাহ করা হতো ধান ও চাল।
মধ্য এশিয়া থেকে পারস্য উপসাগর ও ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত কিংবা সিচুয়ান প্রদেশ থেকে বর্তমান ভারত ও ব্যাকট্রিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল ধানের বাণিজ্যিক সরবরাহ। সমুদ্রপথে জিয়াওচৌ ও গুয়াংচৌয়ে যেত ধান। মধ্যযুগজুড়ে আরব, পারসিক ও ভারতীয় মুসলিমরা নুডলসের ধারণা নিয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয় উপদ্বীপে। সেটা প্রভাব ফেলেছে সেখানকার সাংস্কৃতিক কাঠামো তৈরিতে। ধানসংশ্লিষ্ট খাদ্যের সংস্কৃতিতে প্রভাব ফেলেছে ইসলাম, বৌদ্ধ ও হিন্দুধর্ম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাত ছিল আবশ্যিক খাবার। জাভায় উৎপাদিত চাল ব্যবহার করা হতো তরকারিতেও।
ষোড়শ শতাব্দীর দিকে চীন বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করে মালয়েশিয়ার পশ্চিম অঞ্চলগুলোয়। ইন্দোনেশিয়ায়ও আবাস স্থাপন করতে থাকে চীনারা। মালাক্কা প্রণালিতে আগে থেকেই নানা সুবিধা বিস্তৃত হয়েছিল। এখন সেখানে চীনা, ভারতীয় ও আরবদের জাহাজে সরব হয়ে উঠল। যেহেতু মালয়েশিয়া মুসলিমপ্রধান অঞ্চল আর মুসলিমদের কাছে শূকর নিষেধ। বিপরীতে হিন্দুদের কাছে নিষেধ গরু।
ফলে সেখানে বিকল্প হিসেবে চাল পেয়েছিল সাধারণ খাদ্যের জায়গা। মাছ ও ভাতের দ্বারা সৃষ্ট এমনই এক রেসিপি ইকান ব্রিয়ানি। কেউ কেউ মনে করে এর ওপর মোগল বিরিয়ানির প্রভাব বিদ্যমান। সেখানকার হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ সবাই এ রেসিপি ধর্মীয় সীমার মধ্যে থেকেই খেতে পারেন। সকালের খাবার হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয় লাখশা, যা অনেকটাই পারসিক প্রভাবে তৈরি। নুডলসের পারসিক নাম লাখশা।
আফগানিস্তান ও উত্তর ভারতে মানুষ ধান চাষ শুরু করে আগে। তারপর সেখান থেকে তা দক্ষিণ ভারত ও পশ্চিম দিকে ছড়িয়ে পড়ে। গাঙ্গেয় অঞ্চলে চাল উৎপাদন শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব আড়াই হাজার বছর আগে।
আধা যাযাবর ও মৎস্যজীবী জাতিগোষ্ঠীর জন্য মধ্য এশিয়ার অস্থিরতা সহনীয় ছিল না, তারা দফায় দফায় ভারতের ভেতরে ঢুকে যেতে থাকে চাষযোগ্য জমির খোঁজে। তারপর যত পূর্ব দিকে গেছে বেড়েছে ধানের কদর। বাঙালি জনগোষ্ঠীর জন্য ভাত, ডাল আর সরিষার তেল তো রীতিমতো পরিণত হয়েছে হোলি ট্রিনিটির মতো। ভাতই এখানকার খাদ্যসংস্কৃতির প্রধান জোগানদাতা। ধান মজুদ করে রাখা যায়। পুনরায় চাষ করার জন্য হোক কিংবা খাওয়ার জন্য। এ সুবিধা ভাতকে আরো বেশি জনপ্রিয় করেছে।
খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ সালেই মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল ধান। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দের দিকে পারস্যের আকামেনিড সাম্রাজ্যের আমলে আফগানিস্তান থেকে গ্রিস, উত্তর আফ্রিকা, মিসর ও লিবিয়ায় ছড়িয়ে যায় ধান। পারস্যের এ প্রভাব মুসলিম আমলে আরো বিস্তৃত হয়। বিশেষ করে আরব মুসলিমরা বাণিজ্যের জন্য উত্তর আফ্রিকা, তুরস্ক ও ইতালির বন্দরগুলোয় ভ্রমণ করত। দক্ষিণ স্পেন থেকে চীন পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিল তাদের প্রভাব। মুসলিম খেলাফতের রাজধানী বাগদাদ ছিল রন্ধনশিল্পের রাজধানী।
সেখান থেকে আন্দালুসিয়ার নগরী কর্ডোভায়ও গেছে নানা রেসিপি। গেছে পোলাওয়ের সংস্কৃতি। এর আগে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে সম্রাট আলেকজান্ডার ভারত থেকে ধান নিয়ে গিয়েছিলেন গ্রিসে। চীনের মতো সেখানেও ধান ছিলে অভিজাত খাদ্য। গ্যালেন ও অ্যান্থিমাসের মতো গ্রিক চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা রোগীর পথ্য হিসেবে ভাত খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। সপ্তম শতাব্দীর দিকে মুসলিম বণিকরা এশিয়ার ভাত ভূমধ্যসাগরের দিকে নিয়ে আসেন। মুসলিম আরবরা ব্যবসা করতেন চীন ও এশীয় অন্যান্য জাতির সঙ্গে।
অবশ্য তাদের আগে থেকেই মিসরে গড়ে উঠেছিল সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। মিসরে ধান চাষ হতো নীল নদের সেচ ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। ধানখেতে এ সেচ ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন রোমান, পারসিক, চীনা ও আরবীয় কৃষকরা। রোমানরা সেচের জন্য অতিকায় সেচযন্ত্র নুরিয়া তৈরি করেছে। স্পেনে প্রায় আট হাজার নুরিয়া তৈরি হয়েছিল। নুরিয়ার প্রচলন এখনো কোথাও কোথাও দেখা যায় ইউরোপে।
ভারতীয় ধানের বাইরে আফ্রিকায় নিজস্ব ধরনের ধান পাওয়া যেত। হাজার বছর আগে পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চলে ধান চাষ হতো, যাদের রঙ ছিল লাল। আফ্রিকান চালের বিশেষত্ব হলো লবণসহ। ব্রিটিশ, পর্তুগিজ, ফ্রেঞ্চ ও স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক শক্তিরা যখন আফ্রিকা থেকে দাস নিয়ে যাচ্ছিল, একই সময়ে নিয়ে গেছে ধান ও চাল।
পশ্চিম আফ্রিকা, পশ্চিম ইউরোপ ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে একটা বাণিজ্যিক সম্পর্ক দাঁড়িয়েছিল ধানকে কেন্দ্র করে। নয়া দুনিয়ায় আফ্রিকান চাল ক্রমে সমাদৃত হয়ে উঠতে লাগল। বিশ শতকের শেষ দিকে এল হাইব্রিড জাত। ইউরোপে ক্রমে বাড়ছিল চালের চাহিদা। ফলে ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা জ্যামাইকা ও বার্বাডোজের নদী-তীরবর্তী জায়গাগুলোকে ধান চাষের জন্য বেছে নেয়। ব্রিটিশ কলোনিগুলোয় জোলা, ইয়োরুবা, ইগবো ও মান্দি জনগোষ্ঠীর মানুষ তাদের কৃষিজ মুনশিয়ানার জন্য পরিচিত ছিল।
দাস কেনাবেচার সময় এসব দাসের ছিল বাড়তি কদর। খাবারের টেবিলে ধানের প্রভাব সম্পর্কে একটা আঁচ পাওয়া যায় প্রথম আমেরিকান রান্নার বই ‘দ্য কমপ্লিট হাউজওয়াইফ’ বইয়ে, যা প্রকাশিত হয় ১৭৪২ সালে। পরবর্তী দিনগুলোয় আরো বই বের হয়েছে, দেখা গেছে চালের আধিপত্য। আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময়ে সেখানকার চাল রান্নার প্রণালিতেও পরিবর্তন এসেছে। সাউথ ক্যারোলাইনা থেকে চাল ছড়িয়ে পড়েছে লুইজিয়ানা, নিউইয়র্কসহ অন্যান্য অঞ্চলে।
মধ্য যুগ থেকেই ডাচ ও পর্তুগিজরা পর্যায়ক্রমে মালাক্কা দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করেছে। মালাক্কা দ্বীপপুঞ্জে মরিচ, জায়ফল, লবঙ্গ ও আদা উৎপাদিত হতো, যা অত্যন্ত লাভজনক। এসব পণ্যের কারণেই ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যকে প্রসারের জন্য আরো মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রভাবশালী হয় ডাচরা।
ভারতে ব্রিটিশদের মতোই তারাও স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রভাবিত হয়েছে। তাদের টেবিলে স্পষ্ট উঠতে থাকে ভাত, সবজি আর স্যুপ। জাভায় শক্তিশালী ডাচ উপস্থিতি ছিল। তারা রান্না করা এবং কাঁচা খাবারের অনেক ছোট ছোট উপাদান যুক্ত করে খাবারের অভিজ্ঞতাকে আরো সমৃদ্ধ করে। তারা বাণিজ্য উপাদান হিসেবেই এশিয়া থেকে ইউরোপে বয়ে নিয়ে গেছে চাল ও ধান। চাল পেয়েছে ইউরোপীয় কদর। ডাচদের চেয়ে ব্রিটিশদের ইতিহাস খুব একটা ব্যতিক্রম নয়। সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ব্রিটিশরা ভারতে ব্যবসা শুরু করে। সে ব্যবসা সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছায় ১৮৫৮ সালের প্রথম ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন ব্যর্থ হওয়া ও ব্রিটিশদের ক্ষমতা পোক্ত হওয়ার পর।
ব্রিটিশ ও ভারতীয়দের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে এ সময়ে। ব্রিটেনে ত্বরান্বিত হয়েছে ভারতীয় অভিবাসন। এখানে থাকা ইউরোপীয়রা দেশে ফিরে যাওয়ার পর কিংবা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ভারতীয় নাবিকদের ব্রিটেন যাওয়ায় বিবর্তিত হতে থাকে সেখানকার সংস্কৃতি। ভারতীয়দের আগমন সেখানকার খাদ্যাভ্যাসেও ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। প্রক্রিয়াজাত ভারতীয় খাবার এবং তাদের ক্রমবর্ধমান সুবিধা আছে, যা ব্রিটিশ-ভারতীয় খাবারকে সর্বব্যাপী করে তুলেছে। আঠারো শতকের মাঝামাঝি থেকে ব্রিটেন ছিল ভারতীয় চালের অন্যতম প্রধান গন্তব্য। আমেরিকার জন্যও আলাদা ছিল না গল্প।
আমেরিকান গৃহযুদ্ধের পর সেখানকার প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাক্তন ব্রিটিশদের কাছ থেকে চাল আমদানি বন্ধ করে দেয়। সেই চাহিদা পূরণ করতে থাকে ভারতীয় চাল। ভারতীয় অভিবাসীদের জন্যই কিছু চাল ব্রিটেনে থেকে গিয়েছিল। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এবং আফ্রিকান-ক্যারিবিয়ান অভিবাসী। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে সামরিক কর্মকর্তা ও প্রশাসকরা ভারতে নিজেদের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান হিসেবে উল্লেখ করে, তারা ছিল চালের প্রসারে অন্যতম অনুঘটক। তারা প্রায়ই নিয়ে যেতে থাকে তাদের ভারতীয় রান্না।
বাংলা অঞ্চলের নাবিক ও রাঁধুনিরা বিশ শতকের প্রথম দিকে ব্রিটেনে এসে ছোট ছোট রেস্তোরাঁ খোলেন। তাদের জন্য ব্রিটিশ ভারতীয় খাবারের সংস্করণ সহজেই পাওয়া যেত। আর পাওয়া যেত চাল। ভাত হিসেবেই হোক বা অন্য কোনো উপায়ে, চাল ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে। আড়াই হাজার বছর আগেও চাল হয়তো কয়েকটি জনপদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু আজ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তেই খাবার টেবিলে পৌঁছে গেছে চাল। সূত্র: সিল্করুট।
আপনার মতামত জানানঃ