গত ১৫ বছরে বৃটেনের সবথেকে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনমানের কোনো উন্নতি হয়নি। এমনটাই বলছে ‘সেন্টার ফর সোশ্যাল জাস্টিস’ বা সিএসজে’র গবেষণা। এর আগে সিএসজে’র গবেষণার ওপর ভিত্তি করে বৃটেনের ওয়েলফেয়ার সিস্টেম সংস্কার করা হয়েছিল। চালু করা হয়েছিল ‘ইউনিভার্সাল ক্রেডিট’, যার অধীনে বৃটিশ সরকার সে দেশের কম আয়ের মানুষদের জন্য প্রতি মাসে একটি পেমেন্ট নির্ধারণ করে।
সিএনএন জানিয়েছে, সেই সিএসজে’র সাম্প্রতিক রিপোর্টে এবার উঠে এসেছে বৃটেনের ধনী ও গরীবের মধ্যেকার ভয়াবহ পার্থক্য। গত রোববার ৩০০ পাতার ওই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, বৃটেনের অর্থনৈতিক স্থবিরতা কীভাবে দরিদ্রদের জীবন কঠিন করে তুলছে। জীবন যাত্রার ব্যয় দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় দরিদ্রতা মোকাবিলা করা যাচ্ছে না।
সিএসজে’র ডেপুটি পলিসি ডিরেক্টর সোফিয়া ওরিঙ্গার বলেন, আমরা আবিষ্কার করেছি যে বৃটেন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। দেশের সাধারণ মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঠিকঠাকমতো চালিয়ে নিতে পারছেন। কিন্তু আরেক অংশ আছেন যাদের পরিবার ভেঙে যাচ্ছে, মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা গ্রাস করেছে। তারা অপরাধপ্রবন এলাকায় বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।
থিংকট্যাংকটি সতর্ক করে জানিয়েছে, বৃটেন এখন ভিক্টোরিয়ান যুগে ফিরে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে, যেখানে এক দেশের মধ্যেই দুই জাতি সৃষ্টি হবে। সে যুগে মূলধারার সমাজের সঙ্গে দরিদ্রপীড়িত ‘আন্ডারক্লাস’ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিশাল ব্যবধান ছিল।
সিএনএন জানিয়েছে, ১৯ শতকের শেষ ভাগগে বলা হয় বৃটেনের ভিক্টোরিয়ান যুগ। সে সময় ভয়াবহ সামাজিক বৈষম্য বিদ্যমান ছিল দেশটিতে। শ্রমিক শ্রেণিকে নির্মম জীবনযাপন করতে হতো। তাদের ছিল না পরিস্কার পানি, খাবারের সুযোগ। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ছিল খারাপ। এমনকি কেউ তাদের জীবন মানের উন্নতি করবে সেই উপায়ও ছিল না।
সিএসজে’র নতুন রিপোর্ট বলছে, সেই যুগের মতোই আধুনিক বৃটেনেও দরিদ্রতা গেথে বসেছে। বাড়ছে পরিবার ভেঙে যাওয়া, মাদকাসক্তি, বেকারত্ব, ঋণ এবং পড়াশুনায় ব্যর্থতা বাড়ছে।
বৃটেনের দরিদ্র এলাকাগুলোর বাস্তবতা ভয়াবহ কঠিন হয়ে উঠেছে। এই গবেষণাটি করতে ৬ হাজার বৃটিশের সঙ্গে কথা বলেছে সিএসজে, যাদের মধ্যে অর্ধেক দরিদ্রদের মধ্য থেকে এসেছেন। এছাড়া ৩৫০টিরও বেশি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে তারা। ভ্রমণ করেছে বৃটেনের ২০টিরও বেশি শহরে।
আপনার মতামত জানানঃ