সারা বিশ্বে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ হ্যামবার্গার স্যান্ডউইচ খায়। এটি মানুষের প্রিয় নন ভেজ স্যান্ডউইচের মধ্যে অন্যতম। ভারতেও এর ভক্তের অভাব নেই। ম্যাকডোনাল্ডস বা অন্য কোন রেস্তোরাঁ থেকে অর্ডার করে ভারতীয়রা এটি খায়।
একটি রিপোর্ট অনুসারে জানা গেছে, ম্যাকডোনাল্ডস বিশ্বব্যাপী প্রতি সেকেন্ডে ৭৫টির বেশি হ্যামবার্গার বিক্রি করে। এর ইতিহাসও অনেক আকর্ষণীয়। এটি অনেক মহাসাগর ও মহাদেশ পার করে তবে মানুষের কাছে পৌঁছেছে। আসুন হ্যামবার্গারের ইতিহাস সম্পর্কে জেনেনি।
হ্যামবার্গার কে আবিস্কার করেছেন তা জানার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত কেন একে হ্যামবার্গার বলা হয়? এই প্রশ্নের উত্তর না খুঁজলে আমরা প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না। এছাড়া আরো যে প্রশ্ন গুলি উঠে আসে সেটা হলো হ্যামবার্গারে হ্যাম থাকে না, তবুও কেন একে হ্যামবার্গার বলা হয়? জার্মানির হামবুর্গ শহরের সাথে এর কি কোনো সম্পর্ক আছে? তাই আজ আমরা আপনাকে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর বলবো।
এই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিখ্যাত মার্কিন লেখক জর্জ মোটজ। তিনি হ্যামবার্গার আমেরিকা নামে একটি বই এবং একই নামে একটি ডকুমেন্ট্রি তৈরি করেছিলেন।হ
জানার বিষয় হলো হ্যামবার্গার তৈরির অনুপ্রেরণা হ্যামবার্গ থেকে এসেছিল। তবে এই স্যান্ডউইচটি পরে তৈরি করা হয়েছিল।
জানা গেছে যে দ্বাদশ শতাব্দীতে মঙ্গোল সাম্রাজ্যের ঘোড়া চালকরা গরুর মাংস দিয়ে তৈরি প্যাটি খেতেন। একে হ্যামবার্গার স্টেক বলা হত। সেখান থেকে এটি রাশিয়া এবং পরে জার্মানিতে পৌঁছায়। এর পরে, ১৮-১৯ শতাব্দীতে জার্মানের সাথে সাথে আমেরিকাতে পৌঁছেছিল। এছাড়া প্রথম শতাব্দীর রান্নার বই Caelius Apicius-এ এর উল্লেখ রয়েছে। বইটিতে ব্রেডের উপর শুকনো ফল এবং কিমার মিশ্রণ পরিবেশনের কথা উল্লেখ আছে।
মজার বিষয় হল হ্যামবার্গার আবিষ্কার হয়েছিল আমেরিকায়। ১৮৭০- ১৮৯০এর দশকে, অনেক জার্মান আমেরিকায় বসতি স্থাপন করেছিল। সেখানে তারা গরুর মাংসের প্যাটি তৈরি করতে শুরু করেছিল। এর থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমেরিকার মানুষ প্রথম হ্যামবার্গার তৈরি করে। ব্রেডের উপর পরিবেশন করে তারা এটিকে নতুন রূপ দেন।
হ্যামবার্গার কে আবিষ্কার করেছিলেন তা কেউ জানে না। তবে কিছু লোক বলে যে এটি আমেরিকার বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট লুই লাঞ্চ দ্বারা আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই রেস্টুরেন্টের মালিকের নাম লুই ল্যাসেন ছিল। ১৯০০ এর দশকে একটি হাত গাড়িতে হ্যামবার্গার স্যান্ডউইচ তৈরি করতেন এবং সেটি বিক্রি করতেন। এই রেস্তোরাঁটি নিউইয়র্কে খুবই বিখ্যাত। এখানকার হ্যামবার্গার গুলো এখনো লোকেরা খেতে খুব ভালোবাসে।
হ্যামবার্গার যেই আবিষ্কার করে থাকুক না কেন, এখন এটি সারা বিশ্বে বিখ্যাত। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এর অনেক ভ্যারাইটি বিক্রি হয়। বিশ্বের যেকোনো রেস্তোরাঁর মেনুতে আপনি এটি অবশ্যই পাবেন। ভারতে, এর নিরামিষ সংস্করণ আলু টিকি বার্গার খুব বিখ্যাত। এর ইতিহাস পড়তে গিয়ে আপনার মন নিশ্চয়ই হ্যামবার্গার খেতে শুরু করেছে।
আপনার মতামত জানানঃ