মিশর, নামটা নিশ্চয়ই কখনও না কখনও শুনেছেনই, যাকে পিরামিডের দেশও বলা হয়। কথায় আছে সেখানকার এক একটা পিরামিডয়ে আলাদা আলাদা রহস্য লুকিয়ে আছে। সাহুরার পিরামিডও তার মধ্যে একটি। ইঞ্জিনিয়ার জন পেরিং ১৮৩৬ সালে প্রথমবারের মতো পিরামিড খনন করেন।
এবার মিশরের গবেষকরা ৪৪০০ বছরের পুরনো কক্ষ আবিষ্কার করেছেন। মিশরের পঞ্চম ফারাও সাহুরার পিরামিডে এই ঘরগুলো পাওয়া গিয়েছে। জুলিয়াস ম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ উরজবার্গের একটি দল এই ঘরগুলি আবিষ্কার করেছে। আবিষ্কার করা এই সব ঘর থেকে প্রাচীন রহস্য উদঘাটন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এখানে মোট আটটি ঘর পাওয়া গিয়েছে।
বহুদিন ধরে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, এই পিরামিডটি মিশরীয় ফারাও সাহুরার জন্য নির্মিত হয়েছিল, অর্থাৎ প্রায় ৪৪০০ বছর আগে। এখন এই রহস্যময় পিরামিডের একটি ঘর খোলা হয়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানীরা এও মনে করেছেন যে, এই ঘর থেকে প্রাচীন রহস্য উদঘাটিত হতে পারে। এমনকি রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে পিরামিডের ভিতরে লুকিয়ে থাকা ফারাওদের সম্পর্কেও অনেক কিছু জানতে পারবেন।
কীভাবে গবেষকরা এই ঘরগুলি আবিষ্কার করেছেন? সুহরার পিরামিডটি প্রথম খনন করেন ১৮৩৬ সালে কর্নেল হাওয়ার্ড ওয়াইসে কর্মরত প্রকৌশলী জন পেরিং। এর পরে, ১৯০৭ সালে, মিশরবিদ লুডভিগ বোরচার্ড এটি সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানতে পারেন। ১০০ বছরেরও বেশি সময় পরে, গবেষকরা ভেঙে পড়া এই পিরামিড নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলিয়াস-ম্যাক্সিমিলিয়ানস-ইউনিভার্সিটির একটি দল সাহুরার পিরামিডের গোপন রহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তার জন্য দলটি থ্রিডি লেজার স্ক্যানিং এবং এলাকার মানচিত্র ব্যবহার করছে। এসবের সাহায্যে তারা পিরামিডের ভিতরে আটটি ঘরের মধ্যে একটিকে খুলতে পেরেছেন। বিজ্ঞানীদের মতে, পিরামিডের এই সমস্ত ঘরগুলি ভিতরে এমন কিছু আছে, যা আগে কেউ কখনও দেখেনি। তবে ৪৪০০ বছর পরে সেই সমস্ত ঘরগুলি আর ভাল অবস্থায় নেই। বলতে গেলে ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে।
রিপোর্ট অনুসারে, এই পিরামিডটি খ্রিস্টপূর্ব ২৬ থেকে ২৫ শতকের মধ্যে সাহুরার জন্য নির্মিত হয়েছিল, যা সাহুরে নামেও পরিচিত। প্রধান পিরামিডটি চুনাপাথর টুকরো দিয়ে নির্মিত। বিজ্ঞানীদের মতে, এই পিরামিডের ভিতরের বেশিরভাগ ঘরেই সাহুরার কোনও না কোনও নিদর্শন লুকিয়ে আছে।
তবে এখনও পর্যন্ত এই পিরামিডের গবেষণা শেষ হয়নি। যদিও পিরামিড নিয়ে বেশ ভয়েই রয়েছেন স্থানীয়রা। তুতানখামেন হোক বা ক্লিওপেট্রা- ফারাওদের সমাধিতে খনন কার্য চালিয়ে নানাবিধ অলৌকিক কাণ্ড কারখানার সম্মুখীন হয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ফলত, আটটি দরজার বাকি সাতটি খুলে গেলে যে ফের ‘অপদেবতা’র রোষে পড়তে হতে পারে, তা ভেবেই শঙ্কিত মিশরীয়রা।
আপনার মতামত জানানঃ