জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাস বলছে ১৯৯৪ এবং ২০০৯ সালে বৃহস্পতির ওপর দুটি বড় মহাজাগতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ১৯৯৪ সালে বৃহস্পতির বুকে যে বিস্ফোরণ ঘটে, তার তুলনা টানতে গিয়ে নাসা
নাসা থেকে ইসরো কিংবা ইউরোপিয়ান স্পেস সেন্টার, মহাকাশ গবেষণা এবং অনুসন্ধান নিয়ে একে অপরকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে চলেছে প্রত্যেকটি সংস্থা। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিজ্ঞানীদের চেতনাতেও যে মহাকাশ বিজ্ঞান গভীর ছাপ ফেলেছে, তা আরও একবার প্রমাণিত হল সাম্প্রতিক এক ঘটনায়।
জাপানের এক ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত ডক্টর আরিমাতসু সম্প্রতি পর্যবেক্ষণ করেছেন বৃহস্পতি গ্রহে আঘাত করছে এক বৃহৎ উজ্জল অগ্নিপিণ্ড।
সৌরজগতের দূরবর্তী প্রান্ত থেকে গ্রহাণু বা ধূমকেতুর মতো কিছু যখন বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলে আসে, তখন এই ধরনের ঝলক দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত বৃহস্পতির মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে এই বস্তুগুলি গ্রহের পৃষ্ঠদেশে আছড়ে পড়ে।
আরিমাতসুর মতে, এই ফ্ল্যাশগুলি পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমাদের সৌরজগৎ আগে ঠিক কেমন ছিল, সে সম্পর্কে একটি আভাস দেয় এই ধরনের ঘটনা। গ্রহগুলি কীভাবে বিকশিত হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রম বিবর্তিত হয়েছে, তারও একটি ধারণা পাওয়া যায় এই ধরনের মহাজাগতিক ঘটনাগুলি থেকে।
বৃহস্পতি গ্রহের সঙ্গে এই ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা বর্তমানে বিরল হলেও মাঝেমধ্যে এই ধরনের ঘটনা দেখা যায় এবং তা সাধারণ অপেশাদার জ্যোতির্বিদরাও দিব্যি পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাস বলছে ১৯৯৪ এবং ২০০৯ সালে বৃহস্পতির ওপর দুটি বড় মহাজাগতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ১৯৯৪ সালে বৃহস্পতির বুকে যে বিস্ফোরণ ঘটে, তার তুলনা টানতে গিয়ে নাসা জানিয়েছে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন অ্যাটমিক বোমের সমান শক্তি এই বিস্ফোরণের ফলে উন্মুক্ত হয়।
একইভাবে ২০০৯ সালে একজন অনভিজ্ঞ জ্যোতির্বিজ্ঞানী এন্টনি ওয়েসলে প্রত্যক্ষ করেন একটি পৃথিবীর সমান কালো রঙের বিন্দু বৃহস্পতির দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করছে। বহু জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং উৎসাহী মানুষ বৃহস্পতি গ্রহের উপর বিশেষ দৃষ্টি রাখেন এর বৃহৎ আকারের জন্য। বৃহৎ আকারের ফলে এটি দেখা তুলনামূলকভাবে সহজ হয় অন্যান্য গ্রহগুলির তুলনায় তবে।
অন্যান্য বৃহৎ আকৃতির গ্রহ শনি, ইউরেনাস, নেপচুন এই গ্রহগুলির মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানেও বহু মহাজাগতিক বস্তু এসে এই গ্রহের পৃষ্ঠে ধ্বংস হয়। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বৃহৎ বৃহস্পতি গ্রহ আমাদের সৌরজগৎকে রক্ষা করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
বিভিন্ন বৃহদাকার মহাজাগতিক বস্তুগুলি বৃহস্পতির গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স বা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে সেই গ্রহের দিকে চলে গেলে সৌরজগতের বাকি গ্রহ এবং উপগ্রহগুলি বৃহদাকার ধুমকেতু বা অন্যান্য ধ্বংসাত্বক মহাজাগতিক বস্তুগুলি থেকে নিরাপদে অবস্থান করে।
আপনার মতামত জানানঃ