 মহাশূন্যের দূরবর্তী কোনো ছায়াপথ থেকে আসা ২১ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রেডিও সংকেত শনাক্ত করেছেন ভারতের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই প্রথমবার অন্য কোনো ছায়াপথ থেকে আসা এত দীর্ঘ রেডিও সংকেত রিসিভ করা হলো।
মহাশূন্যের দূরবর্তী কোনো ছায়াপথ থেকে আসা ২১ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রেডিও সংকেত শনাক্ত করেছেন ভারতের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই প্রথমবার অন্য কোনো ছায়াপথ থেকে আসা এত দীর্ঘ রেডিও সংকেত রিসিভ করা হলো।
বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স অ্যালার্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, হাইড্রোজেন হলো মহাবিশ্বের অন্যতম প্রধান গাঠনিক উপাদান। তাই কোনো স্থানে এর উপস্থিতি সেখানকার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অনেক বেশি তথ্য দিতে পারে। এ কারণে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই উপাদান থেকে আগত সংকেত শনাক্ত করতে খুব আগ্রহী।
ভারতের এখন চার্জবিহীন, ভারতের জায়ান্ট মেট্রিওয়েভ রেডিও টেলিস্কোপ (জিএমআরটি) আণবিক হাইড্রোজেনের বিচ্ছুরণের কারণে তৈরি হওয়া আলোর একটি তরঙ্গ শানক্ত করেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই তরঙ্গ সংকেতটি অন্তত ৮৮০ কোটি বছর আগে তার উৎস থেকে নির্গত হয়েছিল, যা আমাদের প্রায় ১৪০০ কোটি বছর পুরনো মহাবিশ্বের শুরুর দিকে ঘটনাবলির বিষয়ে তথ্য দেবে।
এ বিষয়ে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মহাকাশ গবেষক অর্ণব চক্রবর্তী বলেছেন, ‘প্রতিটি গ্যালাক্সি বিভিন্ন ধরনের রেডিও সংকেত নির্গত করে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কাছাকাছি গ্যালাক্সিগুলোতেও আমাদের জ্ঞান। তবে সম্ভবত এ সংকেতটি আমাদের ছায়াপথের কাছাকাছি কোনো একটি ছায়াপথ থেকে নির্গত হয়েছে।’
এ ক্ষেত্রে আণবিক হাইড্রোজেন দ্বারা নির্গত রেডিও সংকেতটির তরঙ্গগুলো খুব শক্তিশালী নয়। আলো হিসেবে এর তীব্রতাও ততটা নয় যার ফলে দূরত্বে শনাক্ত করা সহজ হতে পারে। তারপরও গবেষকরা শংকেতটির উৎস শনাক্ত করতে মহাকর্ষীয় লেন্সিং ব্যবহার করেছে। যার ফলে তারা ধারণা করছেন, তরঙ্গটি এসডিএসএসজে০৮২৬+৫৬৩০ নামক একটি দূরবর্তী ছায়াপথ থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
এবার প্রশ্ন তাহলে কি এলিয়েন সত্যিই আছে! এক্ষেত্রে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করতে পারি। যার মূল বিষয়বস্তুই ছিল মহাকাশে এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে নাকি নেই?
সারা পৃথিবীর অনেকেই আগ্রহের সঙ্গে তাকিয়ে ছিলেন দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই রিপোর্টের দিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুব একটা সন্তোষজনক কিছু মিলেনি প্রতিবেদনে। অর্থাৎ এলিয়েনের উপস্থিতির তারা কোন প্রমাণ পান নি; কিন্তু আবার সম্ভাবনা উড়িয়েও দিতে পারছে না নাসা।
দীর্ঘ ১ বছর ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণার পর ৩৬ পৃষ্ঠার যে রিপোর্ট দিলো নাসা, তার অধিকাংশই বিভিন্ন কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক বিষয়ে পূর্ণ।
আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট; সংক্ষেপে ইউএফও। বাংলায় যেটাকে অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু বলা যেতে পারে। মহাকাশে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন যেসব বস্তুর নড়াচড়া চোখে পড়ে বলে দাবি করা হয়, সেগুলোকে ইউএফও হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
এই ইউএফও নিয়ে মানুষের আগ্রহ বহুদিন ধরে। কেউ কেউ চমক লাগাতে বলে থাকেন এগুলো আসলে এলিয়েনদের বাহন।
কোন প্রমাণ না থাকলেও দুনিয়াজুড়ে এই ইউএফও’র অস্তিত্ব বিশ্বাস করার লোকেরও অভাব নেই। প্রচুর ভিডিও গেমস আর চলচ্চিত্রে এই ইউএফওর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
এই ইউএফও’কে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা বলে থাকে ইউএপি বা আনআইডেন্টিফাইড অ্যানাম্যালাস ফেনোমেনা। বাংলায় বলা যেতে পারে অশনাক্ত অস্বাভাবিক ঘটনা।
এখন এই ইউএফও বা ইউএপি যেটাই বলি না কেন, তার ব্যাখ্যা খুঁজতে গত বছর এক আলাদা গবেষক দল নিয়োগ করে নাসা।
১৬ সদস্যের এই দল গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে গবেষণা। যাদের উদ্দেশ্য ছিল এই বিষয়টি নিয়ে যেভাবে নানা চাঞ্চল্যকর আলোচনা হয়ে থাকে, অর্থাৎ আসলেই পৃথিবীর বাইরে অন্য কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি-না সেসব বিজ্ঞানের মাধ্যমে জানা। এ গবেষণায় কী পেলেন তারা সেটাই তুলে ধরা হয় নাসার এই ইউএপি স্টাডি রিপোর্টে।
এই রিপোর্টের একেবারে শেষ পাতায় বলা হয়েছে ‘এরকম উপসংহারে আসার কোন কারণ নেই’ যে শত শত যেসব ইউএপি নিয়ে নাসা তদন্ত করেছে সেগুলো দেখা যাওয়ার পেছনে কোন বুদ্ধিমান প্রাণীর হাত আছে।
“তবে যাই হোক…এসব বস্তু আমাদের সৌরজগতের ভেতর দিয়েই ভ্রমণ করেছে এখানে পৌঁছাতে,” রিপোর্টে বলা হয়েছে।
যদিও রিপোর্টে বলা হয়নি যে বহির্জাগতিক কোন বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব আছে, কিন্তু নাসা আবার এই ব্যাপারটা অস্বীকারও করেনি যে “সম্ভবত পৃথিবীর অভ্যন্তরে অজানা কোন এলিয়েন প্রযুক্তি হয়তো কাজ করে চলেছে”।
তবে নাসার প্রশাসক বিল নেলসন স্বীকার করেন বিলিয়ন বিলিয়ন গ্রহ-নক্ষত্রের মধ্যে পৃথিবীর মতো আরেকটা গ্রহ থাকতে পারে।
“আপনি যদি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করেন যে এই বিশাল সৌরজগতে অন্য প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি-না আমি বলবো হ্যাঁ।”
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে খোলামেলা ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে কাজ করবেন তারা।
নিকোলা ফক্স, নাসার বিজ্ঞান মিশন অধিদপ্তরের সহযোগী প্রশাসক, বলেন: “ইউএপি আমাদের এই গ্রহের অন্যতম বড় এক রহস্য।” আর এর প্রধান কারণ হল এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যের অভাব।
যদিও প্রতিনিয়ত অসংখ্য ইউএপি দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়, কিন্তু ফক্স বলছেন আমাদের হাতে আসলে পর্যাপ্ত তথ্য নেই “যার সাহায্যে আমরা সুনিশ্চিত বৈজ্ঞানিক সমাপ্তি টানতে পারি যে এই ইউএপিগুলো কেমন ও কোথা থেকে আসছে?”
রিপোর্টে বলা হয় বেশিরভাগ ইউএফও ব্যাখ্যা করা গেলেও কিছু পাওয়া যায় যেগুলো মনুষ্যসৃষ্টও না আবার প্রাকৃতিক কারণেও হয়নি।
ফক্স ঘোষণা দেন নাসা ইউএপি গবেষণায় একজন নতুন পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তার নাম পরিচয় না জানালেও তার কাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে তিনি, “তিনি একটা বিশদ ডেটাবেজ তৈরি করবেন যাতে ভবিষ্যত ডেটা বিশ্লেষণে সহায়ক হয়।”
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
আপনার মতামত জানানঃ