অ্যান্টার্কটিকার পুরু বরফে ফলল গরমের চেনা ফল, কিন্তু এটা কেমন করে সম্ভব। অসম্ভব বললেও বোধহয় কম বলা হবে। এ রসাল ফল গরমের ফল বলেই বিখ্যাত। পুরু বরফের চাদরের ওপর এ ফল তো ফলতেই পারেনা। কিন্তু সেটাই হল।
অ্যান্টার্কটিকা বা দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে এখন চলছে শীতকাল। একেই হাড় কাঁপানো অসহ্য ঠান্ডা সেখানে। বরফের পুরু চাদরে ঢাকা। সেখানে শীতকাল হলে ঠান্ডার মাত্রা কতটা ভয়ংকর তা সাধারণ মানুষের পক্ষে অনুমান করাও কঠিন। চারিদিকে যতদূর চোখ যায় শুধু বরফের মোটা চাদরে ঢাকা।
সেখানে কিনা ফলল গরমের ফল! এও কি সম্ভব! কিন্তু সেটাই করে দেখালেন বিজ্ঞানীরা। দক্ষিণ মেরুতে শীতকালে ফলল তরমুজ।
ভোস্টক স্টেশন হল দক্ষিণ মেরুতে রাশিয়ার গবেষণাগার। সেখানেই বিজ্ঞানীরা ৮টি তরমুজ তৈরি করে দেখিয়ে দিয়েছেন। কনকনে ঠান্ডায় দিব্যি ৮টি তরমুজ বড় হয়েছে। সেসব তরমুজ তার স্বাদ বা গন্ধে কোনও অংশে কম যায়না।
রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা হাত দিয়ে পরাগমিলন করিয়েছেন এখানে। তারপর তরমুজ ক্রমে বড় হতে শুরু করে। এজন্য কৃত্রিম মাটি ব্যবহার করা হয়েছে।
গরমের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে আলো। বিশেষভাবে ওই মেরুর ঠান্ডাতেও এইভাবে তরমুজ বড় হয়েছে। তার স্বাভাবিক আকার নিয়েছে। এভাবে দক্ষিণ মেরুতে তরমুজ ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশে যে স্পেস স্টেশন রয়েছে সেখানে ফসল ফলানো যায় কিনা তার চেষ্টা অনেকদিন ধরেই চলছে। অল্প বিস্তর সাফল্যও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এবার বিশ্বের অন্যতম ঠান্ডা জায়গায় তরমুজ ফলিয়ে আরও এক নতুন চমক দিলেন তাঁরা। যা আগামী দিনে এটা আরও বেশি পরিমাণে ফলানো সম্ভবের ইঙ্গিত বহন করছে।
কেউ যদি অ্যান্টার্কটিকায় হাজির হন তাহলে নিশ্চয়ই তিনি সেখানকার অতি ভয়ংকর ঠান্ডার মোকাবিলার জন্য সেই ধরনের বিশেষ গরমের পোশাক নিয়ে যাবেন। ওখানে যারা গবেষণার কাজ করেন তারাও এমনই গরমের পোশাক পরেন।
কিন্তু যদি বলা হয় একটা সময় ছিল যখন অ্যান্টার্কটিকায় ঘাম হত! গরমে বেশ কষ্ট হত সেখানে। হতে পারে এখন কথাটা প্রলাপ বকার শামিল। কিন্তু একটা সময় তাই ছিল।
অ্যান্টার্কটিকায় যে গরম পড়ত, এখন অনেক শহরেই তেমন গরম দেখা যায়। সে সময় অ্যান্টার্কটিকা ছিল সবুজ গাছে ভরা। সেসব গাছের জীবাশ্ম এখনও অ্যান্টার্কটিকায় দেখতে পাওয়া যায়। এমনকি সেখানে ডাইনোসর ঘুরে বেড়াত বলেও জানা যায়
এসডব্লিউএসএস/১৭৪০
আপনার মতামত জানানঃ