গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর প্রভাবে ক্রমশ জটিল সংকটের মুখে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। বাংলাদেশের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ রেকর্ড ভঙ্গ করেছে ইতোমধ্যেই। প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল মানুষের স্বাভাবিক জীবন। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সাধারণ মধ্যবিত্তের মানুষও এসি -রেফ্রিজারেটর কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বিপণি কেন্দ্রে । তাপপ্রবাহে মানুষ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবী মরুকরণের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে।
এরূপ পরিস্থিতির ফলস্বরূপ হয়তো একদিন এই সুন্দর সবুজ পৃথিবী মানুষ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। আরও সীমাবদ্ধ পরিবেশে জীবন কাটাতে হবে সভ্যতায় উত্তীর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর মানুষকে। আর মানুষ তখন বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত ক্যাপসুলের ভেতর জীবন যাপন করবে সেই দিন হয়তো খুব বেশি দূরে নয়। আমরা আমাদের এই পৃথিবীকে সেই পথেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
এর মধ্যেই নতুন এক প্রস্তাব নিয়ে এসেছে হোয়াইট হাউজ। সূর্যালোককে আটকে দিলে কি দিন দিন উষ্ণায়নের হার কমিয়ে দেওয়া সম্ভব? হোয়াইট হাউসের বিজ্ঞানীরা এবার তাঁর খোঁজই শুরু করলেন। সম্প্রতি তাদের একটি বিবৃতিতে তা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
পৃথিবীপৃষ্ঠে সূর্যের আলো আটকে কি বিশ্ব উষ্ণায়ন রুখে দেওয়া যেতে পারে? কী বলছে বিজ্ঞান? আর যদি সত্যি সূর্যের আলোকে রুখে বিশ্ব উষ্ণায়ন কমানো যায়, তবে কীভাবেই বা তা সম্ভব? কীভাবে বিশাল পৃথিবীকে সূর্যের আলো থেকে ঢেকে রাখা যায়? সম্প্রতি এই প্রশ্নগুলিরই উত্তর খুঁজতে শুরু করেছে হোয়াইট হাউস।
বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে তাদের এক বিবৃতিতে। কী বলা হয়েছে সেখানে? জানানো হয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ বর্তমানে বিশ্ব উষ্ণায়নকে অনেকটাই গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে।
এর জন্য সোলার জিওইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে একটি বিশেষ শাখাও গুরুত্ব পাচ্ছে বিজ্ঞানে। সেই শাখার জোরেই উষ্ণায়নের সমস্যাগুলি কমানো সম্ভব কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে বিজ্ঞানীরা। কিন্তু আদতে কী ব্যবস্থা নিতে চাইছে বাইডেনের হোয়াইট হাউস?
সম্প্রতি প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উষ্ণায়ন একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থাতে পৃথিবীকে রক্ষা করতে কোনোভাবে সূর্যের আলোকরশ্মি আটকানো সম্ভব কী? সেই পথই খুঁজছে বাইডেন প্রশাসনের বিজ্ঞানীরা।
সোলার জিও ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি বিশেষ বিজ্ঞানের ধারাকে ব্যবহার করা হচ্ছে এই কাজে। তবে সূর্যালোক পৃথিবীপৃষ্ঠে না পৌঁছালে আরও কিছু ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে। ফলে উভয় বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। এবার সেদিক নিয়েই চলবে হিসাবনিকাশ।
সূর্যের আলো পৃথিবীতে না এলে উষ্ণায়নের হার কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু কী কী ক্ষতি হতে পারে এতে? প্রথমেই উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষনে বাধা তৈরি হবে। গাছের সালোকসংশ্লেষণের অন্যতম জরুরি উপাদান হল সূর্যালোক। ওই আলো না থাকলে কার্বন ডাই অক্সাইড বিশ্লেষিত হবে না। ফলে উৎপন্ন হবে না অক্সিজেন। এতে আরেক বিপত্তির আশঙ্কা রয়েছে।
তবে বিশ্ব উষ্ণায়নের মূল কারণ কিন্তু কয়েকটা বিষাক্ত গ্যাস। এদের বিজ্ঞানের ভাষায় গ্রিন হাউস গ্যাস বলা হয়। কার্বন ডাই অক্সাইড সহ আরও বেশ কিছু গ্যাস এভাবেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বেড়ে চলেছে। অন্যদিকে গাছ কাটার হারও বাড়ছে।
দুইয়ের জোড়া হানায় বাড়ছে গ্রিন হাউস গ্যাস। যার জেরেই বাড়ছে উষ্ণায়ন। এই পরিস্থিতিকে সামাল দিতেই নয়া পথের খোঁজ করছেন বিজ্ঞানীরা। হোয়াইট হাউসের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের তরফেও এবার তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে তাদের বিবৃতিতে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৮৩০
আপনার মতামত জানানঃ