নিজস্ব প্রতিনিধি : চলে যাচ্ছে আরো একটি বছর। কিন্তু সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার ক্ষেত্রে এ বছরও তেমন কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিধি মোতাবেক সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে আদালতের। কিন্তু বছরজুড়ে এমনসব ঘটনা আদালতকে ঘিরে ঘটেছে, যা সুখকর ছিল না। করোনার কারণে আদালতে এবার রাজনীতির উত্তাপ কম ছিল বটে, তবে ঘটেছে বেশ কিছু আলোচিত ঘটনা। এসব ঘটনা বিচার বিভাগের জন্য তাৎপর্যময় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত অধ্যাদেশ জারি করে ভার্চুয়াল আদালত চালু ছিল আদালতের জন্য বড় ঘটনা। তবে সুপ্রিম কোর্টে ছাগলের হাট বসা, জালিয়াতি করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন আদায়, নতুন অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগে ক্ষোভে দুই অতিরিক্ত অ্যাটর্নির পদত্যাগ, উচ্চ আদালতের দুর্নীতি রুখতে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা, আদালতের নির্দেশে জেলগেটে ধর্ষিতার সঙ্গে বিয়ে, ভাস্কর্য ভাঙার বিরুদ্ধে মাঠপর্যায়ে সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বিচারকদের প্রতিবাদ এবং করোনা সংক্রমণের শঙ্কা উপেক্ষা করে আদালতে শতাধিক নেতা নিয়ে এমপির জামিন নিতে আসা ও জামিন পাওয়ার মতো আলোচিত সমালোচিত নানা ঘটনার জন্ম দিয়েছে আদালতপাড়া।
১. করোনার আঘাত ও ভার্চুয়াল কোর্ট
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ১২ মার্চ থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতসহ সারাদেশের আদালতে নিয়মিত বিচার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। গত ০৯ মে রাতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০’ নামের ওই অধ্যাদেশ জারি করা হয়। মূলত তখন থেকেই দেশে প্রথমবারের মত অনলাইন আদালত কার্যক্রম চলছে। প্রথমে উচ্চ আদালত ও পরে নিম্ন আদালত এই প্রক্রিয়া কার্যকর করে। আইনজীবীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে করোনাঝুঁকির মধ্যে গত ১২ আগস্ট থেকে ফের আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা হয়।
২. দুই নবজাতকের লাশ নিয়ে হাইকোর্টে পিতা
দুই যমজ নবজাতকের চিকিৎসার জন্য পাঁচ ঘণ্টায় তিনটি হাসপাতাল ঘুরেও ভর্তি করাতে পারেননি বাবা। এর ফলে ওই দুই নবজাতক মৃত্যুবরণ করায় বিচার চাইতে বাবা তাদের নিয়ে ছুটে আসেন হাইকোর্টে। অ্যাম্বুল্যান্সে নবজাতকের মরদেহ নিয়ে হাইকোর্ট চত্বরে মিনিট ১৫ অবস্থান করে। পরে ঘটনা জেনে দুই বিচারপতির হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই তিন হাসপাতালের প্রতি শিশু দুটিকে ভর্তি না করার কারণ ব্যাখ্যার আদেশ দেন। একই সঙ্গে শিশু দুটির চিকিৎসা অবহেলায় বিবাদিদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
৩. সিকদার ভাইদের বিদেশ থেকে জামিন আবেদন
আসামি থাইল্যাান্ড, আইনজীবী লন্ডন, আদালত শাহবাগ। নজিরবিহীনভাবে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে হত্যাচেষ্টার মামলায় বিদেশ থেকে সিকদার গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদার হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। নির্বিঘ্নে দেশে ফিরতে জামিন আবেদনও করেছিলেন তারা। এই জামিন আবেদনের ঘটনা তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করে। ধারণা করা হয়, করোনার সুযোগে লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে তারা জামিন আদায় করে নিতে পারবেন। কিন্তু খবরটি ফাঁস হয়ে যায়।
৪. সুপ্রিম কোর্টে ছাগলের হাট
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে ছাগল বিক্রির ঘটনা ঘটেছে ২০২০ সালে। গত ১৪ অক্টোবর দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তিন ব্যক্তি তিনটি ছাগল নিয়ে আসে। এতে ছাগলের দাম হাঁকান ২৬ হাজার টাকা। ছাগল বিক্রির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে নজরে আসে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের। নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গনে ছাগলের হাট বাসানোর ঘটনা তুমুল সমালোচনার জন্ম দেয়। এ ঘটনায় সুপ্রিমকোর্টের নিরাপত্তাঝুঁকি আবার সামনে চলে আসে। এ নিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের শোকজ করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
৫. মধ্যরাতে বসল হাইকোর্ট
পৈত্রিক নিবাসে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনায় সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবীর দুই নাতিকে বাড়িতে ফিরিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩ অক্টোবর মধ্যরাতে এক নজিরবিহীন আদেশ দেন হাইকোর্ট। মধ্যরাতে আদালত বসিয়ে দুই শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার ওই ঘটনায় বিচারবিভাগ প্রধানত প্রশংসিতই হয়। তবে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলের নাতি না হলে মধ্যরাতে এভাবে আদালত বসত কিনা, দেশের সাধারণ মানুষ একইভাবে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নও ওঠে। আদালতের নিকটেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে তাজরীন গার্মেন্টসের শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে দুই মাসের অবস্থান ধর্মঘট আদালতের দৃষ্টি কাড়তে পারেনি বলে সমাবেশে অভিযোগ করেছিলেন ওই আন্দোলনের নেতারা।
৬. সুপ্রিমকোর্টে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সুপ্রিমকোর্টের এফিডেভিট শাখায় অভিযান চালিয়ে ৪৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটকের ঘটনাও ঘটেছে এ বছর। গত ১৬ আগষ্ট ২০২০ দুপুরে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। পরে সর্তক করে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
৭. ক্ষোভে দুই অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ
রাষ্ট্রের ১৫তম অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় গত ৮ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিন উদ্দিনকে দেশের ১৬তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর ক্ষোভে সুপ্রিমকোর্টের দুই অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির পদত্যাগ করেন। তারা দুজনেই নিজ নিজ পদত্যাগপত্র সলিসিটর কার্যালয়ে জমা দিয়ে পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও মুরাদ রেজা পদত্যাগ করেছেন বলে পরে তারা গণমাধ্যমকে জানান।
৮. গোপনে হাইকোর্ট থেকে জিকে শামীমের জামিন
যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমকে অস্ত্র মামলায় ছয় মাসের জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে হাইকোর্টের পৃথক দু’টি বেঞ্চ থেকে ৪ ও ৬ ফেব্রুয়ারি দুই মামলায় শামীমের জামিন হয়। অস্ত্র মামলায় তাকে ৬ মাস এবং মাদক মামলায় এক বছরের জামিন দেওয়া হয়। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মুজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এবং বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি বিশ্বদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই দুই মামলায় তাকে জামিন দেন। তার জামিনের লিখিত আদেশ প্রকাশিত হয় ১২ ফেব্রুয়ারি। পরে তথ্য গোপন করে অস্ত্র মামলায় নেওয়া ৬ মাসের জামিন বাতিল (রিকল)করেন হাইকোর্ট।
৯. বিচার বিভাগের ইতিহাসে শীর্ষ জালিয়াতির ঘটনা
বিচারিক আদালতে অস্ত্র মামলায় দণ্ড পাওয়ার পর উচ্চ আদালতে জামিন আবেদনে তথ্য জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে এ বছর। আবেদনের শুনানি নিয়ে আসামি সাত্তারকে জামিন দেয়ার পর হাইকোর্টের কাছে প্রতীয়মান হয়, এই অস্ত্র মামলার এজাহার, তদন্ত প্রতিবেদন, জব্দ তালিকা ও রায় পরিবর্তন করে জামিন চাওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বিচারিক আদালতের সংশ্লিষ্ট সব নথি পাল্টে ফেলা হয়েছে। জালিয়াত চক্র এখানেই থেমে যায়নি। মামলায় সাত্তারের কাছ থেকে অস্ত্র (পিস্তল) উদ্ধার করা হলেও জাল নথিতে চায়নিজ কুড়াল উদ্ধারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় সাক্ষীদের দেওয়া প্রতিটি জবানবন্দিও পরিবর্তন করেছে হাইকোর্টে জামিন চাইতে আসা জালিয়াত চক্র। পরে হাইকোর্ট ওই জামিন বাতিল করায় আসামি কারাগার থেকে বের হতে পারেনি।
১০. করোনার মধ্যে শতাধিক নেতাকর্মীসহ হাইকোর্টে এমপি
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের করা মামলায় আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে এসেছিলেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। ২০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করে একপ্রকার শোডাউন দেখান এবং আগাম জামিন নিতে আদালতে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে আদালতে শতাধিক অনুসারি ও সমর্থক হাজির ছিলেন। কিন্তু আদালত এ ঘটনায় তাকে কোনো সমালোচনা করেননি। তাকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট।
১১. হাইকোর্টে নিয়োগে অনিয়ম ও বেঞ্চের বিরুদ্ধে বারের অভিযোগ
এক বিচারকের ছেলেকে সরাসারি হাইকোর্টে প্রাক্টিসের সুযোগ দিয়ে বার কাউন্সিলের গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিটের মামলায় সরগরম হয়েছিল আদালত। উচ্চ আদালতের জন্য এ ঘটনা অত্যন্ত বিব্রতকর হলেও আদালতের শীর্ষ বিচারপতিরা এ নিয়ে দেশের মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারেননি। উল্টো এ মামলায় আদালএর পক্ষপাতের খবর বেরিয়েছে। রিট করার কারণে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে অভিযোগ করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে চিঠি দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি।
১২. ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে ধর্ষকের বিয়েতে আদালতের সম্মতি
ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে ধর্ষকের বিয়ের ‘কথিত সম্মতি’ নিয়ে হাইকোর্টে করা হয়েছে আসামির জামিনের আবেদন। এসব আবেদনে হাইকোর্ট থেকে আসামির প্রস্তাব অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কারাগার কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেওয়া হয়েছে উভয় পক্ষ রাজি থাকলে বিয়ের আয়োজন করতে। আদালতে দেওয়া আসামির প্রতিশ্রুতি এবং সে অনুযায়ী হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন কারাগারে বেশ কয়েকটি বিয়ের ঘটনা ঘটলে নভেম্বর মাসে এ নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, উচ্চ আদালতে মামলার সুরাহা না হতে এ ধরনের সমঝোতা কতটা আইনসম্মত? অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলো আইন বহির্ভূত ও স্বেচ্ছাচার বলে উল্লেখ করেন মানবাধিকারকর্মী ও নারী নেত্রীরা।
১৩. আদালত চলাকালে রেকর্ড রুমে রহস্যজনক আগুন
ঢাকা মহানগর আদালতের রেকর্ড রুমে রহস্যজনক আগুনে পুড়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত অনেক মামলার নথিপত্র। ১৬ নভেম্বর ২০২০, সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আদালত চলাকালেই মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে আগুন পুরোপুরি নেভাতে সক্ষম হয়। তবে ততক্ষণে অসংখ্য মামলার নথি পুড়ে যায়। আইনজীবীরা মনে করেন, রেকর্ড রুমে আগুন লাগার ঘটনা নথিপত্র নষ্ট করার উদ্দেশ্যেও হতে পারে। আদালত সংশ্লিষ্টরাও এই রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখার প্রয়োজন অনুভব করছেন। গঠিত হয় চার সদদ্যের তদন্ত কমিটি।
১৪. ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে বিচারকদের সমাবেশ, মানববন্ধন
চট্টগ্রাম জেলার ১০০ বিচারক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে ব্যানার হাতে মানবন্ধন, বক্তৃতা ও মিছিলে অংশ নেন। কিন্তু দেশের আইন, উচ্চ আদালতের রায় ও নির্দেশনা অনুযায়ী বিচারকদের এ ধরনের কর্মসূচি পালনের সুযোগ নেই বলে অভিমত প্রকাশ করেন আইনবিদরা। আইন বিশেষজ্ঞ শাহদিন মালিক মন্তব্য করেন, যত বড় অপরাধীই হোক না কেনো, সংবিধান তাকে ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই ভাস্কর্য ইস্যুতে যদি বিচারকরা কোন পক্ষ অবলম্বন করেন তখন অপরাধীর মনে হতে পারে সে ন্যায়বিচার পাবেনা, এটা আইনের শাসনের জন্য শুভ নয়।
১৫. আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে বিচারককে ছুটি
ঢাকার নিম্ন আদালতে এক বিচারকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আদালতপাড়া অচল হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বছরের শেষ মুহূর্তে। রুবেল আহমেদ নামক এক আইনজীবীকে বেআইনিভাবে লক আপে ঢোকানোর মধ্য দিয়ে এই সঙ্কটের সূত্রপাত। একজন বিচারক এভাবে বিচারিক ক্ষমতাকে পেশিশক্তি প্রদর্শনের হাতিয়ার বানাচ্ছেন, এটা মেনে নিতে পারেননি আইনজীবীরা। ২৩ ডিসেম্বর ২০২০, সকাল থেকে এ নিয়ে আদালত পাড়ায় বিক্ষোভ ও উত্তেজনার পর বিচারক আসাদুজ্জামান নূরকে ছুটিতে পাঠানো হয়। এ ঘটনা দেশের আইন অঙ্গনের জন্য লজ্জার বলে মতপ্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকার এবং বিচার সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের উচিত এসব ঘটনা আমলে নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ, হস্তক্ষেপমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে হলে এসব ঘটনা যাতে আর না ঘটতে পারে, সে লক্ষ্যে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ২০২০ সালে এসব ঘটনা সামনে আসাটা এদিক থেকে ইতিবাচক যে, এখন অন্তত এগুলো সমাধানের কথা ভাবা যেতে পারে।
এসডাব্লিউ/এসএন/আরা/১৪১০
আপনার মতামত জানানঃ