বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রত্যেকদিন প্রায় ১৯ হাজার ৭০০ জন মানুষ ক্ষুধায় মারা যাচ্ছেন। এ হিসেবে, প্রতি চার সেকেন্ডে অন্তত একজন মানুষ ক্ষুধায় মারা যাচ্ছেন।
বৈশ্বিক ক্ষুধা সংকটের অবসানে চূড়ান্ত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার এই সতর্ক বার্তা দিয়েছে বিশ্বের দুই শতাধিক এনজিও। খবর এএফপি
বিবৃতিতে এনজিওগুলো বলেছে, ৭৫টি দেশের বিভিন্ন সংগঠন আকাশচুম্বী ক্ষুধার মাত্রা এবং তা মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুপারিশ নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে। এতে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, আশ্চর্যজনক বিষয় হলো বিশ্বের ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ এখন তীব্র ক্ষুধার্ত। আর ক্ষুধার্ত মানুষের এই সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একুশ শতকে বিশ্বে আর দুর্ভিক্ষ ঘটবে না বলে বিশ্ব নেতারা প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও সোমালিয়ায় আরও একবার দুর্ভিক্ষ আসন্ন। বিশ্বের ৪৫টি দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ অনাহারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
একুশ শতকে বিশ্বে আর দুর্ভিক্ষ ঘটবে না বলে বিশ্ব নেতারা প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও সোমালিয়ায় আরও একবার দুর্ভিক্ষ আসন্ন। বিশ্বের ৪৫টি দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ অনাহারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
খোলা চিঠির অন্যতম স্বাক্ষরকারী ইয়েমেনের ফ্যামিলি কেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মোহান্না আহমেদ আলী এলজাবালি বলেছেন, এটি অত্যন্ত ভয়াবহ এক সংকট যে, কৃষি এবং ফসল কাটার সব ধরনের প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও আজ আমরা একুশ শতকে এসেও দুর্ভিক্ষের কথা বলছি।
তিনি বলেন, এটি কেবল একটি দেশ অথবা একটি মহাদেশের কথা নয়। আর ক্ষুধার কখনই একটি কারণ থাকে না। এটি সমগ্র মানবতার অবিচার।
‘লোকজন যাতে তাদের ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিতে এবং নিজেদের ও পরিবারের জন্য সরবরাহ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে তাৎক্ষণিক জীবনরক্ষাকারী খাদ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার জন্য আমাদের আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করা উচিত নয়।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিকতন্ত্রী রাষ্ট্র ও যুদ্ধবাজ মানুষের অমানবিক ও সহিংস তাণ্ডবে বিশ্বের বহু দেশের বিপুল সংখ্যক নাগরিক মৃত্যু ও রক্তপাতে নিপতিত, যারা খাদ্যের সংস্থান করা তো দূরস্থিত, জীবন বাঁচাতেই মরিয়া। রণাঙ্গনে, শরণার্থী শিবিরে, পথে পথে সংঘাতদগ্ধ এইসব বিপুল ভাসমান মানুষের জীবন কাটে অনাহারে, অর্ধাহারে, খাদ্যহীনতায়।
সুষম বণ্টন আর শান্তি বিরাজমান থাকলে বিপুলা এই পৃথিবীর উর্বর ভূমিতটে উৎপাদিত খাদ্যের দ্বারা বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জন্য অন্ততপক্ষে এক মুঠো ভাত জুটতে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু শোষণ, লুণ্ঠন, যুদ্ধ, দখল, রক্তপাতের ফলে তা হচ্ছে না। হিংসা, হানাহানি ও লুটপাটের তাণ্ডবতায় শান্তি, স্থিতি, নিরাপত্তার সঙ্গে সঙ্গে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মানুষের মুখের গ্রাস।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮২৭
আপনার মতামত জানানঃ