সম্প্রতি ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন-কে নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তার একটি ব্যক্তিগত ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করার সেই ভিডিওই বিতর্কের কারণ।
কী দেখা গিয়েছে সেই ভিডিওতে? সেখানে দেখা যাচ্ছে সানা মারিন তার বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছেন। বন্ধুদের মধ্যে রয়েছেন ফিনল্যান্ডের বেশ কয়েক জন নামজাদা তারকাও। তাদের সঙ্গে গান গাইছেন এবং নাচছেন সানা। সমস্যা সেই নাচ বা গান নিয়ে নয়। তার কাণ্ডকারখানা দেখে বিরোধীরা দাবি তুলেছেন, সানা মাদকাসক্ত এবং তার মাদক পরীক্ষা করাতে হবে।
তবে ৩৬ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন মাদক নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি শুধু অ্যালকোহল পান করেছিলেন পার্টিতে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন সানা মারিন। দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিশ্বের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সরকার প্রধান ছিলেন তিনি। এখন এই খেতাব চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিকের দখলে।
সানা মারিন খুব স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পছন্দ করেন। পার্টি করার কোনো তথ্য গোপন রাখেন না তিনি এবং প্রায়শই সঙ্গীত উৎসবে তাকে দেখা যায়। গত বছর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর ক্লাবে গিয়ে পার্টি করার কারণে তিনি ক্ষমাও চেয়েছিলেন।
সম্প্রতি জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ড মারিনকে বিশ্বের আকর্ষণীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করে।
ফাঁস হওয়া ভিডিও নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) এক মন্তব্যে ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভিডিও করার কথা জানতেন তিনি। কিন্তু ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় হতাশ হয়েছেন তিনি।
সানা মারিন বলেন, ‘আমি নেচেছি, গান গেয়েছি এবং পার্টি করেছি- এগুলো আইন সম্মত’। কিন্তু আমি কখনো এমন পরিস্থিতিতে ছিলাম না যখন আমি কাউকে দেখেছি বা চিনি যারা মাদক ব্যবহার করে।
Finland’s Prime Minister @MarinSanna is in the headlines after a video of her partying was leaked today.
She has previously been criticized for attending too many music festivals & spending too much on partying instead of ruling.
The critics say it’s not fitting for a PM. pic.twitter.com/FbOhdTeEGw
— Visegrád 24 (@visegrad24) August 17, 2022
দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা রেখে পার্টি করা নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে। তবে ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার একটি পারিবারিক জীবন, একটি কর্মজীবন রয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর মতো সময় আমার আছে। যা আমার বয়সী একজন মানুষের প্রয়োজন’।
এদিকে, বিরোধীদলীয় নেতা রিকা পুরা দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত স্বেচ্ছায় ড্রাগ টেস্ট করা। কারণ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
অন্য বিরোধী দলের সদস্যরাও এই প্রসঙ্গে সানাকে ছেড়ে কথা বলছেন না। তারা একই সঙ্গে যেমন প্রধানমন্ত্রীর তুলোধনা করছেন, তেমনই দেশের সংবাদমাধ্যমকেও একহাত নিচ্ছেন। অনেকেরই মত, সংবাদমাধ্যম প্রধানমন্ত্রীর কোনও ভুলত্রুটি নিয়ে খবর প্রকাশ করে না।
তবে এসবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নিজে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমার পরিবার আছে। কাজের জায়গা আছে। এছাড়া আমার নিজের মতো করে বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর মতো সময়ও আছে। আমার বয়সের অন্যদের যা যা থাকে, তার সবই আমার আছে। সেটাই স্বাভাবিক।’
৩৬ বছর বয়সি প্রধানমন্ত্রী এর সঙ্গে বলেছেন, তিনি আগেও যা ছিলেন, এখনও সেই মানুষটিই আছেন। পরেও তাই থাকবেন। সেটি সকলে মেনে নেবেন বলেও মত তার।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ফিনল্যান্ডের সানা মারিন। সানা ফিনল্যান্ডের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দলের সদস্যা। এর আগে তিনি দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ওলেসি হংচারুক ছিলেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে ওলেসির বয়স ৩৫ বছর।
ফিনল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তি রিন ২০১৯ সালের জুন থেকে পাঁচ দলীয় বামদলগুলোর জোটের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তার আমলে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান ছিল। এছাড়া ডাক বিভাগের কর্মীদের বেতন কমানোয় সমালোচনার মুখে পড়েন অ্যান্তি রিন।
এসডব্লিউ/এসএস/১২৪০
আপনার মতামত জানানঃ