কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি-সংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এদিকে ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাজধানী দিল্লিতে কংগ্রেসের বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাদ্যমের খবরে জানা যায়, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে একটি রাস্তায় আন্দোলনরত অবস্থায় প্রায় ৩০ মিনিট পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার পর তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে একটি বাসে উঠিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। আটকের সময় রাহুল গান্ধী বলেন, ভারত একটি পুলিশ রাষ্ট্র, (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র) মোদি একজন রাজা।
এনডিটিভি বলছে, জিএসটি বৃদ্ধিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজধানী দিল্লির কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভে অংশ নেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ কংগ্রেসের এই প্রতিবাদস্থল ঘিরে রাখে। রাহুল গান্ধী মঙ্গলবারের এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে (বিক্ষোভস্থলে) তিনিই কার্যত শেষ ব্যক্তি ছিলেন যখন পুলিশ তাকে আটক করবে কি না তা নিয়ে আলোচনা করছিল।
এর আগে লোকসভায় মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানানোর জেরে ভারতের রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের চার সাংসদকে পুরো অধিবেশনের জন্য বহিষ্কার করেন স্পিকার। অভিযুক্ত সাংসদরা লোকসভার ভেতরে প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলেন। পরে স্পিকার ওম বিড়লা তাদের বাইরে গিয়ে প্রতিবাদ জানাতে বলেন। লোকসভা মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১টা পর্যন্ত মুলতবিও করা হয়।
আটকের সময় রাহুল গান্ধী বলেন, ভারত একটি পুলিশ রাষ্ট্র, (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র) মোদি একজন রাজা।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, লোকসভায় প্ল্যাকার্ড নিয়ে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন চার কংগ্রেস সাংসদ। এর ফলে সংসদের গোটা অধিবেশন থেকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয় তাদের। কংগ্রেসের সাংসদরা হলেন, তামিলনাড়ু থেকে নির্বাচিত মনিকম ঠাকুর, জ্যোতিমণি, কেরালার রামাইয়া হরিদাস এবং টি এন প্রথাপন।
এনডিটিভি বলছে, দিল্লির বিক্ষোভ থেকে যখন রাহুল গান্ধীকে আটক করা হয় তখন শহরের আরেক অংশে তার মা এবং কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় দ্বিতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদ করছে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রাও তদন্ত সংস্থার অফিসে অবস্থান করছেন। তবে দিল্লির পার্লামেন্ট এলাকায় বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আগে মঙ্গলবার সকালের দিকে সেখানে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধীও।
গত ২১ জুলাই প্রথমবার ইডির দপ্তরে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তখন হাজিরা দিতে পারেননি তিনি। সেসময় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, গান্ধী পরিবার কোনও দুর্নীতিতে জড়িত নয়।
এদিকে রাহুল গান্ধীসহ ৭৫ জন কংগ্রেস নেতা আটক হয়েছেন। মঙ্গলবার পার্লামেন্ট ভবন থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনের মাঝের রাস্তায় ধরনায় বসেন রাহুলসহ কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। সে সময় বিজয় চকের সামনে থেকে তাদের আটক করে পুলিশের একটি বাসে তোলা হয়।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মল্লিকার্জুন খার্গে বলেন, আমরা পুলিশের দেওয়া বিধি মেনেই প্রতিবাদ করছি। এসব কিছু বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করতে মোদি ও অমিত শাহের ষড়যন্ত্র।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪৫৭
আপনার মতামত জানানঃ