যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে একটি পরিত্যাক্ত লরি থেকে অন্তত ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা সবাই অভিবাসী বলে ধারনা করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার দেশটির গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি এসব তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, লরি থেকে চার শিশুসহ অন্তত ১৬ জনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় এ ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
টেক্সাসের সান অ্যান্টোানিওর শহরতলিতে লরিটি পড়েছিল। তবে কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি। স্থানীয় প্রলিশ এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে শহরটিতে এখন গ্রীষ্মকাল চলছে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৪৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সে.। ভুক্তভোগীরা কোন দেশের নাগরিক তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
একটি টিভি চ্যানেল জানিয়েছে সান আন্তোনিও শহরের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের রেল লাইনের পাশে লরিটির সন্ধান মিলে। যুক্তরাষ্ট্র- মেক্সিকো সীমান্ত থেকে শহরটির দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী লরিটির চালকের কোনো হদিস মিলছে না। সান এ্যন্টোনিও পুলিশও চালকের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
জীবিত যাত্রীরা হিট স্ট্রোক ও তীব্র তাপে নাজুক হয়ে পড়েছিলেন। মানবপাচারকারীরা অভিবাসীদের আনয়নের জন্য প্রায়শই লরি ব্যবহার করে থাকে।
মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো ইব্রার্ড বলেছেন, দূতাবাস যাওয়ার পথে লরিটি পাওয়া গেছে। নিহতদের জাতীয়তা এখনো জানা যায়নি।
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, সান আন্তোনিও পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল তদন্ত করছেন। লরিটির চালককে পাওয়া যায়নি।
সান আন্তোনিওর পুলিশ প্রধান উইলিয়াম ম্যাকম্যানাস বলেছেন, তদন্ত সোমবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় ফেডারেল এজেন্টদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এ ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেছেন। বাইডেনের ‘উন্মুক্ত সীমান্ত নীতির ফলাফল’ হিসেবে এ ঘটনাকে তিনি বর্ণনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে সান আন্তোনিও শহর অবস্থিত। এ গ্রীষ্মে সেখানে সোমবার (২৭ জুন) তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সান আন্তোনিওর ডিস্ট্রিক্ট ৪-এর প্রতিনিধি রোচা গার্সিয়া সোমবার রাতে আরও জানান, ১৬ জন অভিবাসীকে ট্রাক থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মেথোডিস্ট হেলথ কেয়ারের একজন মুখপাত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের মধ্যে ৩ জনকে মেথোডিস্ট হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়; তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
আমেরিকায় উন্নত জীবনযাপনের আশায় প্রবেশ করতে চেয়ে অভিবাসীর মৃত্যু এই প্রথম নয়। এর আগেও অনেকবার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই এমন একটি ঘটনায় কানাডায় ঠান্ডায় জমে মৃত্যু হয়েছিল এক ভারতীয় পরিবারের। সে ঘটনায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জমে গিয়ে মৃত্যু হয় একই পরিবারের ৪ সদস্যের।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬৩৪
আপনার মতামত জানানঃ