নারী মানে সহজ-সরল এমনটাই ধারণা সবার। একটু কোমল, শান্ত হবে নারীদের ব্যবহার এমনটাই ভাবে প্রায় সবাই। নারীদের বলা হয়ে থাকে কোমলতা, ভালোবাসা ও শান্তির প্রতীক। প্রকৃতিই তাদের এই বৈশিষ্ট্যগুলো দিয়েছে। তবে এর ব্যক্তিক্রমও কম নেই।
নারী যদি হয়ে উঠে হিংস্র বা কুখ্যাত কোনো খুনি, তাহলে স্বভাবতই আমাদের মনে সেগুলো ভয়াবহ চিত্র হিসেবেই দাগ কাটবে। এই পৃথিবীতে এমন নারী রয়েছেন যাদের নৃশংসতা ও হিংস্রতা হার মানিয়েছে সবকিছুকে। তাদের গল্প কেড়ে নেয় রাতের ঘুম। যারা কুখ্যাত নারী হিসেবেই বিশ্বে পরিচিত।
পৃথিবীর ভয়ানক নারীদের সম্পর্কে বলতে গেলেই যার নাম প্রথমে আসে তিনি হলেন এলিজাবেথ বাথোরী। “ব্লাড কাউন্টেস” নামেই সমাধিক পরিচিত তিনি। সুন্দরী যুবতীদের রক্তে গোসল করা উনার খুব স্বাভাবিক একটি দৈনদিন্দ কাজ ছিল। মাঝে মাঝে শখ করে রক্তও পান করতেন, এগুলো করার অন্যতম কারন ছিল অনন্ত যৌবন পাওয়া।
রক্ত পান করার জন্য বাস্তব জীবনে উনি ভ্যাম্পায়ার উপাধি পেয়েছিলেন। বলা হয়ে থাকে ব্রাম ষ্টোকার ড্রাকুলা উপন্যাসের নারী ভ্যাম্পায়ার চরিত্রর ধারনা উনার কাছ থেকে পেয়েছিলেন। স্বামীর কাছ থেকে কয়েকটি যুবতী উপঢৌকন পেয়েছিলেন ব্যাথোরী তার বিবাহ বার্ষিকীতে যেন তাদের রক্ত পান করা যায়।
আসুন আরও জানা যাক, ভয়ঙ্কর এই নারী সম্পর্কে। তিনি হাঙ্গেরির বিখ্যাত ব্যাথোরি পরিবারে ১৫৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। এলিজাবেথকে পৃথিবীর সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার হিসেবে ধরা হয়।
১৫৭৫ সালে ফেরেন্স নাডাসডি নামের এক ব্যাক্তির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর এলিজাবেথের স্বামী হাঙ্গেরীর সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যুদ্ধে চলে যান। এরপর থেকে পুরো পরিবারের দায়িত্ব ও শাসনভার তার কাঁধে এসে পড়ে। স্বামীর অবর্তমানে তিনি একাই ব্যবসাসহ সবকিছু দেখাশোনা করতেন।
বেশ চড়া বেতন দিয়ে তিনি বাসায় কুমারী মেয়েদের কাজের লোক হিসেবে রাখতেন। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, যে মেয়েই কাজের জন্য বাড়ির ভেতর যায় সে আর ফিরে আসে না। পড়ে জানা যায়, এলিজাবেথ তার ত্বক ভালো রাখার জন্য কুমারী মেয়েদের রক্ত দিয়ে গোসল করতেন।
রক্ত দিয়ে গোসল করার আগে তিনি মেয়েদের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলতেন এবং এসময় তিনি মেয়েদের চিৎকার উপভোগ করতেন। প্রায় ২৫ বছর এভাবে চলার পর রাজা ম্যাথিয়াস ব্যাপারটা জানতে পারেন।
এরপর এলিজাবেথের বাসা থেকে মৃত, অর্ধমৃত মেয়ে উদ্ধার করা হয়। এই ২৫ বছরে এলিজাবেথ প্রায় ৬৪০ জন কুমারী মেয়েকে খুন করেন। ১৬১৪ সালে চার বছর গৃহবন্দী অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আর এভাবে শেষ হয় এলিজাবেথ ব্যাথোরী নামে এক কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারের উপখ্যান। গৃহবন্ধী ছিলেন কিন্তু উঁচু সামাজিক মর্যাদার কারণে প্রকাশ্য বিচারের সম্মুখিন হতে হয়নি তাকে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৬২৪
আপনার মতামত জানানঃ