এবার সৌদি আরবে খোঁজ পাওয়া গেল যৌনপল্লীর। গ্রেফতারও হয়েছে একজন। সূত্র মতে, ওই যৌনপল্লীতে কাজ করেন বিভিন্ন দরিদ্র দেশ থেকে আসা অসহায় গৃহকর্মীরা। আর এর মূলে আছেন পাকিস্তানের এক নাগরিক।
দেশটির রাজধানী রিয়াদে যৌনপল্লী চালানোর অভিযোগে এক পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আমিরাতভিত্তিক দৈনিক গালফ নিউজ।
সূত্র মতে, দীর্ঘদিন ধরে রিয়াদে বসবাস করছেন পাকিস্তানের ওই নাগরিক। গৃহস্থালীর কাজের জন্য সৌদিতে আসার পর মালিকের বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া এশিয়ার বিভিন্ন দেশের গৃহকর্মীদের দিয়েই তিনি রাজধানীতে গোপন এই যৌনপল্লী গড়ে তুলেছিলেন।
সম্প্রতি সৌদির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই পল্লীর একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাউদ আল মুয়াজাব সম্প্রতি ওই ব্যক্তির নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হলো।
সংক্ষিপ্ত ওই ভিডিও ক্লিপে ওই পল্লীর হতভাগ্য যৌনকর্মীদের দুর্দশা তুলে ধারা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তির জাতীয়তা প্রকাশ করা হলেও তার নাম তার নাম গোপন রাখা হয়েছে।
সৌদি আরবে পতিতাবৃত্তি এবং সাজা
সৌদি আরবের আইনে মানবপাচার বা এই সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ১৫ বছরের কারাবাস বা ১০ লাখ রিয়াল (সৌদি মুদ্রা) জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে।
তবে গ্রেফতার ওই পাকিস্তানিকে আরও কঠোর সাজা দেওয়া হতে পারে বলে গালফ নিউজকে জানিয়েছেন সৌদি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা।
সৌদি আরবে পতিতাবৃত্তি একটি অবৈধ জীবিকা। প্রচলিত আইন অনুযায়ী সর্বপ্রকারের পতিতাবৃত্তি এই ইসলামী দেশটিতে নিষিদ্ধ ও একটি অপরাধ। পতিতাবৃত্তি ধরা পড়লে বিচারে কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে।
তবে গোপনে পতিতাবৃত্তি চালু আছে দেশটিতে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী পতিতাদের বেশিরভাগই নাইজেরিয়া থেকে আগত নারী। এছাড়াও ইথিওপিয়া, ইয়েমেন, মরক্কো, পাকিস্তান এবং তাজিকিস্তান থেকে আগত কিছু নারী পতিতাবৃত্তিতে জড়িত।
পতিতাবৃত্তির শাস্তি ছিলো কারাদণ্ড এবং বেত্রাঘাত। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে সৌদি সুপ্রিম কোর্ট জেনারেল কমিশনের আদেশে বেত্রাঘাতের শাস্তি বাতিল করা হয়েছিল এবং এখন এটি জেল বা জরিমানার মধ্যে সীমাবদ্ধ। বিদেশি নাগরিকদেরও শাস্তির পর দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
যদি কোন পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যভিচার এবং যৌন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়, তবে পতিতা এবং তার মক্কেল উভয়েরই শাস্তি হতে পারে। যেহেতু সেখানে বৈধ বিবাহ ব্যতিরেকে সমস্ত যৌন কার্যকলাপ অবৈধ এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
ধর্মীয় পুলিশ বেত্রাঘাতের দায়িত্ব পালন করে। পতিতাদের প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করা হতে পারে। এর মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বেত্রাঘাতের ফলে মৃত্যু হয়েছে।
তবে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে বেত্রাঘাতের শাস্তি বাতিল করা হয়ে এবং শাস্তি জরিমানা ও জেল এ সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল। সৌদি ভাইস পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হওয়া বিদেশী পতিতাদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
২০০৭ সালের জুন মাসে, ৮০ জন নারীকে পতিতাবৃত্তির জন্য এবং ২০ জন পুরুষকে পাচার বা দালালীর বিচারের আনা হয়েছিলো।
এসডব্লিউ/এসএস/১৩৫৭
আপনার মতামত জানানঃ