সারা বিশ্বে ইসলামের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ধরা হয় সৌদি আরবকে। এবার সে দেশেই নিষিদ্ধ সুন্নি ইসলামিক সংগঠন তাবলিগ জামাত। সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসবাদের আখড়া’ বলেও অভিহিত করা হয়েছে।
সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী ডা. আবদুল্লাতিফ আল শেখ টুইট করে সকলকে এই বিষয়ে জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে মসজিদের ইমামদের জুম্মার নমাজের সময় সকলকে তাবলিগ জামাতের আসল চেহারার কথা তুলে ধরার এবং তাদের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিতেও বলেছেন তিনি।
সৌদি আরবের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স দফতরের মন্ত্রী ডা আব্দুললতিফ আল শেখ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে একথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি শুক্রবার জুম্মার নামাজে তাবলিগ জামাত নিয়ে মানুষকে সতর্ক করে দিতে মসজিদের ইমামদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতকে নিষিদ্ধ করে সরকারের তরফে বলা হয়েছে, এটি হল সন্ত্রাসবাদের একটি প্রবেশ পথ।
His Excellency the Minister of Islamic Affairs, Dr.#Abdullatif Al_Alsheikh directed the mosques’ preachers and the mosques that held Friday prayer temporary to allocate the next Friday sermon 5/6/1443 H to warn against (the Tablighi and Da’wah group) which is called (Al Ahbab)
— Ministry of Islamic Affairs 🇸🇦 (@Saudi_MoiaEN) December 6, 2021
তাবলিগ জামাতের পাশাপাশি নিষিদ্ধ করা হয়েছে দাওয়া নামে আরও একটি সংগঠনকেও। মন্ত্রী টুইটে জানিয়েছেন, মসজিদে ইমামদের তাদের ভাষণে উল্লেখ করা উচিত এরা কীভাবে সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক। ১৯২৬ সালে তৈরি হয় এই দাওয়া নামে এই সংগঠনটি।
উল্লেখ্য, তাবলিগ জামাত ও দাওয়া দুটোই সুন্নি মুসলিমদের সংগঠন। অন্যদিকে, সৌদি আরবের অধিকাংশ মানুষ আহলে হাদিস মতাদর্শের অনুসারী। দুই পক্ষই ইসলামের অনুশীলন আরও বেশি শুদ্ধ করার পক্ষপাতী হলেও দুই শিবিরের মধ্যে একটা সংঘাত রয়েছে।
গোটা বিশ্বে তাদের ৩৫০-৪০০ মিলিয়ন অনুসারি রয়েছে বলে দাবি এই সংগঠনের। সংগঠনের দাবি করা হয়, তাদের লক্ষ্যই হল ধর্মীয় বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া এবং অত্যন্ত কড়া ভাবে রাজনীতি এড়িয়ে চলা।
প্রসঙ্গত, ভারতে ২০২০ সালের মার্চে তাবলিগ জামাতের জমায়েত ঘিরেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ে দিল্লিতে তাবলিগ জামাত নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। অভিযোগ ছিল বিদেশ থেকে আসা তাবলিগ জামাতের সদস্যরা দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকে করোনা ছড়িয়েছেন। এবার সেই তাবলিগ জামাতকে নিষিদ্ধ করল সৌদি আরব সরকার।
ওই সময় দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের একটি সমাবেশে যোগ দেওয়া অন্তত তিনশো জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়ার পর ঘটনাটিকে ঘিরে সেদেশে মুসলমান বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
১৯২৬ সালে এদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই সংগঠন। যদিও তার বহু বছর আগে থেকেই সৌদি আরবে ছিল সুন্নি ইসলামিক সংগঠনটি। সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্ত ভারত-সহ বহু দেশের কাছেই তাবলিগ জামাতকে নিষিদ্ধ করার রাস্তা খুলে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
দিল্লির মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (রহ.) ১৯১০ সালে তাবলিগ জামাতের সূচনা করেন। এর মূল মারকাজ দিল্লির হজরত নিজামউদ্দিনে অবস্থিত বেঙ্গলওয়ালি মসজিদে। ঢাকার কাকরাইল ও লাহোরের রাইবেন্ডের মারকাজ হলো শাখা মারকাজ। এই দুই স্থানে প্রতিবছর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। কেবল বাংলাদেশের ইজতেমায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তাবলিগের অনুসারীরা যোগ দেন।
এসডব্লিউ/এসএস/১২৩০
আপনার মতামত জানানঃ