সিলেটে পুলিশ হেফাজতে নিহত মো. রায়হান আহমদের (৩৪) শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৪টি আঘাতে গুরুতর জখম হয়। বাকি ৯৭টি আঘাত ফোলা জখম। সব আঘাতই মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগের। আঘাতে ও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।
দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের পর তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড শনিবার একটি প্রতিবেদন তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিয়েছে। এ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। যোগাযোগ করলে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান মো. শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১০ অক্টোবর রাতে নির্যাতনের পরদিন ভোরে রায়হান মারা যান। ওই দিনই ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত হয়। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা হলে কবর থেকে লাশ তুলে করে গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত হয়। এর আগে মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শামসুল ইসলামকে প্রধান করে বিভাগের প্রভাষক দেবেশ পোদ্দার ও প্রভাষক আবদুল্লাহ আল হেলালের সমন্বয়ে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ড শনিবার পিবিআইকে একটি প্রতিবেদন দেয়।
রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ময়নাতদন্তকালে রায়হান আহমদের শরীরে মোট ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুরুতর জখম কোমর থেকে হাঁটুর নিচে। ডান হাতের কনিকাসহ দুটি আঙুল ও বাঁ হাতের অনামিকার নখ ওপড়ানো ছিল। আঘাতের কারণে দেহের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। আঘাতে দেহের মাংস থেঁতলে যায়। রগ ফেটে গিয়ে আন্তদেহে রক্তক্ষরণ (ইন্টারনাল ব্লিডিং) হয়। আঘাত করার সময় রায়হানের স্টমাক (পেট) ছিল খালি, স্টমাকে ছিল কেবল অ্যাসিডিটি লিকুইড।
মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, ময়নাতদন্তের জন্য কিছু রাসায়নিক নমুনা চট্টগ্রামের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেগুলোর ফল এলে পুনরায় ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ আরেকটি প্রতিবেদন তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হবে।
আপনার মতামত জানানঃ