সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেড়েছেন চিকিৎসক নেতারা। আমলারা চিকিৎসকদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলে তাদের অভিযোগ। আমলাতন্ত্র চর দখলের মতো চিকিৎসক ক্যাডারের গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে নিচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতা চিকিৎসকদের ঘাড়ে চাপিয়ে আমলাতন্ত্র সরকার জনগণ ও চিকিৎসকদের মুখোমুখি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
২৪ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার পাঠানো ওই বিবৃতিতে চিকিৎসক নেতারা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নতুন নিয়োগ পাওয়া সর্বোচ্চ কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত বিভ্রান্তিমূলক ও অজ্ঞতাপ্রসূত মন্তব্য করছেন। যা চিকিৎসা পেশার মান-মর্যাদাকে ক্রমাগত আঘাত করার শামিল। তিনি অভিভাবক না হয়ে শাসকের ভাষায় কথা বলেন। মহামান্য আদালতের রায় থাকার পরেও চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়নে বাধা দিয়ে আমলাতন্ত্র ক্রমাগত চিকিৎসক নিগ্রহের পথকে সুগম করে দিচ্ছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চিকিৎসক নিগ্রহ, স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, চিকিৎসক গ্রেফতার, এমনকি রোগীর স্বজনের আঘাতে চিকিৎসক মৃত্যুর ঘটনা অহরহ ঘটছে। চিকিৎসাধীন কোনো রোগীর মৃত্যু ঘটলেই রোগীর স্বজন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিউৎসাহী কর্মকাণ্ডে চিকিৎসকদের মধ্যে মারাত্মক ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। যা নির্বিঘ্ন চিকিৎসা সেবা প্রদানে বাধা সৃষ্টি করবে।
রাষ্ট্রযন্ত্রের উদাসীনতা অপকর্মকারীদের উৎসাহিত করছে। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কোনো ক্ষেত্রে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নিজেরাই চিকিৎসক নিগ্রহে জড়িয়ে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হয়রানি আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য চিকিৎসকদের মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের অন্যায় আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো সময় দেশের চিকিৎসা সেবা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আমরা আশা করব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য না দিয়ে নিজেদের কাজ ও দায়িত্বের প্রতি আরও মনোযোগী হবেন। অর্বাচীনের মতো চিকিৎসকদের চিকিৎসা শিখিয়ে দেয়া থেকে বিরত থেকে নিজ নিজ কাজ করলে জাতি উপকৃত হবে।
চিকিৎসকরা দাবি করেন, ১৯৬২ সালের পাকিস্তানি আইনে প্রশাসনে অতিরিক্ত সচিবের পদ আছে ১১৩টি, বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন ৬১০ জন। এদের পদায়ন করতে স্বাস্থ্য খাতে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এটি আমলাতন্ত্রের বাজে তৎপরতার এক অনন্য নজির।
মিই/আরা/১৩০০
আপনার মতামত জানানঃ