ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির মতো ঘটনায় ইমামদের সংশ্লিষ্টতা এদেশে এখন ডালভাত হয়ে গেছে। ইমামদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে এ ধরণের অপরাধ প্রবণতা। এবার কুড়িগ্রামে এক নারীর সুযোগ নিয়ে তাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিখ্যাত এক মসজিদের সাবেক ইমামের বিরুদ্ধে।
স্বামীকে তাবিজের মাধ্যমে বশ করার প্রলোভন দেখিয়ে কুড়িগ্রাম সদরে এক নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে সাবেক এক ইমামকে গ্রেফতার করেছে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ আগষ্ট) গ্রেফতারকৃত ঈমামকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হরিকেশ কানিপাড়া গ্রামের মৃত শামছুল হকের পুত্র মাওলানা মোফাচ্ছের হোসেন সামসি (৪৫)।
সূত্র মতে, ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর দায়ের করা এক এজাহারের ভিত্তিতে সোমবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হরিকেশ কানিপাড়ার এক ব্যক্তিকে তার স্ত্রীর পক্ষে বশে আনার জন্য তাবিজ সহ বিভিন্ন উপায়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসছিলেন মাওলানা মোফাচ্ছের হোসেন সামসি। প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে বিভিন্ন সময় ঐ নারী মাওলানা মোফাচ্ছের হোসেনের নির্দেশনা মেনে আসছিলেন।
গত ১৩ আগস্ট সুযোগ পেয়ে ঐ নারীকে শ্লীলতাহানি সহ যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করে অভিযুক্ত মাওলানা মোফাচ্ছের হোসেন সামসি। এরপর গত সোমবার (১৬ আগস্ট) ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর দায়ের করা এক এজাহারের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, অভিযুক্ত মাওলানা মোফাচ্ছের হোসেন সামসি এক সময় কুড়িগ্রাম সদরের এক স্বনামধন্য মসজিদের ইমাম ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ থাকায় তাকে মসজিদ থেকে বহিষ্কার করে মসজিদ কমিটি।
বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত আছেন। হজ্বের টাকা নিয়ে পলায়ন করার অপরাধে তিনি জেল খেটেছেন এবং তিনি বিভিন্ন সময় নারীদের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক অপকর্মের সাথে যুক্ত বলেও জানায় পুলিশ।
এদিকে, গত ২৮ জুলাই খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে মক্তবের ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগে মাওলানা মো. ওয়াছি উদ্দিন (২৬) নামে মসজিদের এক ইমামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত ওয়াছি মানিকছড়ির গাড়ীটানা এলাকার গরমছড়ি জামে মসজিদের ইমাম এবং ফটিকছড়ির ভুজপুরের চানপুর গ্রামের মো. আলী হোসেনের ছেলে।
ধর্ষণের অভিযোগে গত ২৮ জুলাই মানিকছড়ি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ভুক্তভোগী পিতার দায়ের করা মামলায় ওই ইমামকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া এমন অসংখ্য ঘটনা আছে যেখানে মসজিদে আরবি পড়তে গিয়ে শিশুরা মসজিদের ইমামদের দ্বারা ধর্ষিত হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে; ঘটছে শিশু হত্যার মতো নৃশংস ঘটনাও। সাম্প্রতিক চাঞ্চল্যকর কিছু ঘটনা, প্রশাসনের তৎপরতার মুখেও লাগাম টানতে পারছে না এসব ঘটনার।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৫২১
আপনার মতামত জানানঃ