গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে ধরে আনা ৫৬টি বানরের ওপরই বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড উদ্ভাবিত করোনার টিকা বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়াল শুরু হয়েছে।
১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই ট্রায়াল চলবে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত। ট্রায়ালে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে মানবদেহে টিকার কার্যকারিতা প্রয়োগের (হিউম্যান ট্রায়াল) জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) কাছে আবেদন করবে গ্লোব।
আজ সোমবার (৯ আগস্ট) গণমাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছেন গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি অপারেশনসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
গ্লোব বায়োটেকের বিজ্ঞানীরা গত বছরের ২ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিকভাবে ইঁদুরের শরীরে ওই টিকা প্রয়োগে সাফল্যের কথা জানান। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্ভাব্য টিকার তালিকায় নাম ওঠে বঙ্গভ্যাক্সের।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর গ্লোব বায়োটেক উদ্ভাবিত বঙ্গভ্যাক্সকে অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এরপর মানবদেহে পরীক্ষামূলক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্ব ১ এবং ২-এর জন্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের কাছে নৈতিক অনুমোদনের জন্য ১৭ জানুয়ারি আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বছরের ২২ জুন গ্লোব বায়োটেককে চিঠি দিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর টিকার ট্রায়াল করতে বলে বিএমআরসি। বানরগুলো ধরতে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের তোপের মুখে পড়েছিলেন গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে বন্য প্রাণী গবেষণার কাজে ব্যবহারের সমালোচনাও হয়েছে।
গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি অপারেশনসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে আমরা ৩০ জুন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে ৫৬টি বানর সংগ্রহ করেছি। সেগুলো আমাদের অ্যানিমেল সেন্টারে রেখে এক মাস অভিযোজন করিয়েছি। তারপর ১ আগস্ট থেকে বানরগুলোর ওপর ট্রায়ালের কাজ শুরু করেছি। যারা আমাদের সমালোচনা করেছিল, তাদের অনেকের এ–সংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। আর তাদের মধ্যে এখন অনেকেই বঙ্গভ্যাক্স উৎপাদনে কাজ করছে।’
গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর টিকারট্রায়াল করতে বলে বিএমআরসি। বানরগুলো ধরতে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের তোপের মুখে পড়েছিলেন গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে বন্য প্রাণী গবেষণার কাজে ব্যবহারের সমালোচনাও হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুদরকারনিয়ে আমরা ৩০ জুন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে ৫৬টি বানর সংগ্রহ করেছি। সেগুলো আমাদের অ্যানিমেল সেন্টারে রেখে এক মাস অভিযোজন করিয়েছি।তারপরই ক্লিনিকাল তারপর ১ আগস্ট থেকে বানরগয হয়ে আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে বন বিভাগের অনুমোদন নিয়ে বানর সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে ট্রায়াল শুরু করা হচ্ছে।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতে কোভ্যাক্সিনের ট্রায়াল হয়েছিল বানরের ওপর। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে মহারাষ্ট্রের জঙ্গল থেকে বানর ধরে তারা ট্রায়াল করেছিল। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে আমরা ৩০ জনু বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে ৫৬টি বানর সংগ্রহ করেছি। সেগুলো আমাদের অ্যানিমেল সেন্টারে রেখে এক মাস অভিযোজন করিয়েছি। তারপর ১ আগস্ট থেকে বানরগুলোর ওপর ট্রায়ালের কাজ শুরু করেছি। যারা আমাদের সমালোচনা করেছিল, তাদের অনেকের এ–সংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। আর তাদের মধ্যে এখন অনেকেই বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত।’
এসডব্লিউ/ডব্লিউজেএ/২০২০
আপনার মতামত জানানঃ